কিছু গানের কথা বেশ রুক্ষ হয়ে কানে বাজে

প্রকাশ | ১৫ মার্চ ২০২৩, ০৮:৩৯

আমিনুল ইসলাম

ইদানিং কিছু গানের কথা বেশ রুক্ষ হয়ে কানে বাজে। রুষ্ট ক্রদ্ধ হয় অন্তর! এর অনেক শব্দের শারীরিক গঠন এমন যে এরা গালাগালির কাজে বেশ পারদর্শিতার সাথেই সুদীর্ঘকালব্যাপী  ব্যবহৃত হয়ে আসছে। বিষয়টি ললিতকলার সুকুমারচর্চার খানিকটা ব্যত্যয় বলেই যেন মাঝে মাঝে বোধের দরজায় ধাক্কা দিয়ে যায়।

আমার কাছে গান হলো শব্দের নৃত্যকলা। শব্দেরা এখানে সুবিন্যস্ত হয় চরণে চরণে, ঢঙে ঢঙে, তালে তালে। শব্দের স্রোতধারা কলকল যেন বইতে থাকে; বিরামহীন, বিশ্রামহীন। সুন্দর এখানে বিকশিত হয় নূতন রূপে, নূতন মাধুরীতে, নূতন ঐশ্বর্যে। সুরভিত হয় সুকোমল লাবন্যে।

কঠিন কথাও এখানে কোমলতার পরশে ছন্দবদ্ধ হয় ভাললাগার অমিয় পরশে।

“ওরে ও তরুণ ঈশান

বাজা তোর প্রলয় বিষাণ

ধ্বংস নিশান উড়ুক প্রাচীর প্রাচীর ভেদি”

এর চেয়ে সুউচ্চ অভ্রভেদী বিদ্রোহী ব্যঞ্জনা অথবা দ্যোতনা আর কোন বাংলা গান ধারন করে কিনা আমার জানা নেই।

এর প্রতিটি শব্দ সুন্দর। প্রতিটি শব্দ কোমল। প্রতিটি শব্দ স্নিগ্ধ। এই শব্দগুলোই বাক্যের গাঁথুনিতে এবং বোধের প্রাচীরে প্রবল দৃঢ়তা নিয়ে হাজির হয়েছে। বলেছে অনেক কথা। শিহরণ জাগিয়েছে মনে। জগতে দিয়েছে দোলা। 

গান রচনা করতে অথবা তাতে সুর দিতে অথবা তা গাইতে যে পরিমাণ পান্ডিত্য ও বুদ্ধিবৃত্তিক সৃজনীশক্তি দরকার বিধাতা সেটি আমার জন্য মোটেও বরাদ্দ রাখেননি। আর সে সত্য আমি বেশ করেই বুঝতে পারি।

কিন্তু গান শুনায় যে ভাললাগাটি মিশে আছে সেটি কখনো কখনো বেশ স্পষ্ট করেই যেন টের পাওয়া যায়!! সুন্দর যেন কথা কয়ে যায় লালিত্যের অপার মূর্ছনায় !!!

ললিতকলার এ জায়গাটিতে স্রষ্টার স্বাধীনতা অস্বীকার করার কোন জো নেই। কিন্তু সেটা আবার স্বেচ্ছাচারিতার দোষে দুষ্ট না হয়ে পড়ে!!!!

সবার উপরে আছে সামাজিক দায়বদ্ধতা।

কিন্তু সেই বোধ কি সকল ক্ষেত্রে নিঃস্বার্থ এবং ভাষার প্রতি মমত্ববোধে উজ্জীবিত!!!!!?

হয়তো অথবা …………!

 

লেখক: পুলিশ কর্মকর্তা