আ.লীগ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে শুধু ভোটব্যাংক হিসেবে ব্যবহার করে: নুর

প্রকাশ | ১৮ মার্চ ২০২৩, ১৪:৫৬

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

‘১৪ বছর ধরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থেকেও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অত্যাচার ও নির্যাতনের একটি ঘটনারও সুষ্ঠু তদন্ত ও সুষ্ঠু বিচার করেনি’ বলে অভিযোগ করে গণ অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ নির্বাচনের ইশতেহারে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন ও সংখ্যালঘু প্রণয়নের কথা বললেও তারা তাদের কথা রাখেনি। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে শুধুমাত্র ভোটব্যাংক হিসেবে ব্যবহার করে।’ 

শনিবার দুপুরে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন (ক্র্যাব) কার্যালয়ে বাংলাদেশ  সনাতন পার্টি (বিএসপি) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। 

অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন, সুষ্ঠু গণনা ও ফলাফল ঘোষণা এবং নির্বাচনের আগে ও পরে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। 

এতে সভাপতিত্ব  করেন বাংলাদেশ সনাতন পার্টির সভাপতি আশীষ কুমার দাশ।

এসময় উপস্থিত ছিলেন পার্টির সহ-সভাপতি লিটন বণিক, সাধারণ সম্পাদক সুমন কুমার রায়, সহ-দপ্তর সম্পাদক সুজিত দাস, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বিকাশ অধিকারী, ডা. ক্ষীতিশ রায়, অমিত কুমার বর্মণ, কমল পাল, জয় চক্রবর্তী, সবুজ বৈরাগী প্রমুখ। 

নুর বলেন, ‘প্রতিটি নির্বাচন এলে সনাতনী সম্প্রদায় অজানা আতঙ্কের মধ্য দিয়ে দিন কাটে। সনাতনী সম্প্রদায়ের কাছে নির্বাচন মানে  নির্যাতন। যে দল বিজয়ী আর যে দলই পরাজিত হোক না কেন, সব ক্ষোভ রাগ ও নির্যাতনের বলি হতে হয় সনাতনী সম্প্রদায়কে। প্রবাদ আছে, রাজায় রাজায় যুদ্ধ হয় নলখাগড়ার প্রাণ যায়।’

সভাপতির বক্তব্যে আশীষ কুমার দাশ বলেন, ‘বাংলাদেশে সনাতনী সম্প্রদায়ের অবস্থা এখন নলখাগড়ার মতো। সনাতনী সম্প্রদায়ের কোনো প্রকৃত রাজনৈতিক  অভিভাবক না থাকায় তারা রাজনৈতিক বলির পাঁঠা হয়ে আসছে।’

‘সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নির্যাতন, জমি দখল ও নিপীড়নের ক্ষেত্রে সব দল এক কাতারে সামিল হন, তখন কাউকেই পাশে পাওয়া যায় না’ যোগ করে নুরুল হক।

বাংলাদেশ সনাতন পার্টির সাধারণ সম্পাদক সুমন কুমার রায় বলেন, ‘আগামী দিনে বাংলাদেশ সনাতনী পার্টি (বিএসপি) বাংলাদেশের সনাতনী সম্প্রদায়ের প্রকৃত অভিভাবক হিসেবে রাজনৈতিক অধিকার আদায়ে সব ধরনের রাষ্ট্রীয় বৈষম্য নির্যাতন ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর প্রত্যয় ব্যক্ত করছে। ভবিষ্যতে কোনো রাজনৈতিক দল সনাতনী সম্প্রদায়কে যাতে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে  ব্যবহার করতে না পারে তার জন্য বাংলাদেশ সনাতন পার্টি সনাতনী সম্প্রদায়কে  সচেতন ও সজাগ করতে  গঠনমূলক ভূমিকা পালন করবে।’

‘সারাদেশে প্রতিনিয়ত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন চলছে’ উল্লেখ করে  ২০০১ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত সংঘটিত সব সাম্প্রদায়িক হামলার সুষ্ঠু বিচার এবং ২০০১ সালে সংখ্যালঘু নির্যাতনের পরবর্তী সময় গঠিত শাহবুদ্দীন কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য এবং আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে ঘোষিত সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন ও সংখ্যালঘু কমিশন আইন বাস্তবায়নের জোর দাবি জানান পার্টির সহ-সভাপতি লিটন বণিক।  

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, নির্বাচন পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সময়ে ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন বন্ধে রাজনৈতিকভাবে ধর্মীয় সংখালঘুদের ক্ষমতায়ন অত্যন্ত জরুরি। সেক্ষেত্রে নিরাপত্তার স্বার্থে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়নের পাশাপাশি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের দলীয় মনোনয়ন বৃদ্ধি এবং সংসদে জনসংখ্যা অনুপাতে সংরক্ষতি আসন ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জন্য পৃথক নির্বাচন ব্যবস্থা কার্যকর ভূমিকা পালন করবে।  

বক্তারা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন, সুষ্ঠু গণনা ও ফলাফল ঘোষণা, নির্বাচন পূর্ববর্তী  ও পরবর্তী সময়ে সংখ্যালঘু  সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট সবার  প্রতি সনাতনী সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি হিসেবে বাংলাদেশ সনাতন পার্টির পক্ষ থেকে আহবান জানান।

(ঢাকাটাইমস/১৮মার্চ/জেবি/এফএ)