পরিপত্র জারি: চট্টগ্রাম বন্দরে ভিড়তে পারবে ১০ মিটার গভীরতার জাহাজ

প্রকাশ | ২০ মার্চ ২০২৩, ০৮:২৮

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
ফাইল ছবি

পর্যাপ্ত গভীরতার অভাবে এতদিন ২০০ মিটার পর্যন্ত লম্বা ও ১০ মিটার গভীরতার বড় জাহাজ ভিড়তে পারত না চট্টগ্রাম বন্দরে। বড়ো ড্রাফটের জাহাজগুলোকে বর্হিনোঙ্গরে এসে অপেক্ষায় করতে হতো। পরে লাইটারেজ জাহাজ গিয়ে পণ্য খালাস করে জেটিতে আনার পর আবার সেই পণ্য খালাস করতে হত। কিন্তু এখন সেই যুগের অবসান হয়েছে। এখন থেকে নিয়মিত ভেড়ানো যাবে ২০০ মিটার পর্যন্ত লম্বা ও ১০ মিটার গভীরতার বড় বড় জাহাজগুলো।

বন্দরের ডেপুটি কনজারভেটর ক্যাপ্টেন ফরিদুল আলম রবিবার এ নিয়ে একটি পরিপত্র জারি করেছেন। পরিপত্রটি সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।

জেটিতে ২০০ মিটার লম্বা ও ১০ মিটার গভীরতার জাহাজ বার্থিংয়ের সুযোগ তৈরি হওয়ায় এখন থেকে আরও বেশি পণ্য ও কনটেইনার নিয়ে বর্তমানের চেয়ে অপেক্ষাকৃত আরও বড় জাহাজ আনতে পারবেন ব্যবসায়ীরা। নতুন নতুন অপারেটরের জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে ভিড়তে পারবে। আমদানি রপ্তানি পণ্য পরিবহন ব্যয়ও অপেক্ষাকৃত কমে যাবে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, সর্বোচ্চ সাড়ে নয় মিটার গভীরতা ও ১৯০ মিটার দীর্ঘ জাহাজে মাত্র ১৮০০ থেকে ২৪০০ কনটেইনার বহনের সুযোগ থাকে। আর ১০ মিটার ড্রাফট ও ২০০ মিটার লম্বা জাহাজ ভেড়ানোর পর প্রতিটিতে আরও ১০০০ থেকে ১১০০ কনটেইনার বেশি পরিবহন করা যাবে। এতে বন্দরে কনটেইনার হ্যান্ডলিং বাড়বে, কমবে কনটেইনারে করে আনা-নেয়া করা পণ্যের পরিবহন ব্যয়। তবে এই পরিমাপের জাহাজ বার্থিং কর্ণফুলী নদীর জোয়ার-ভাটার ওপর নির্ভর করবে।

স্বাধীনতার আগে চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিতে সর্বোচ্চ ১৩৭ মিটার লম্বা এবং সাত মিটার গভীরতার জাহাজ ভেড়ানোর অনুমতি দেওয়া হতো। সত্তরের দশকে চ্যানেল সংস্কারের পর ১৯৭৫ সালে এই বন্দরে মাত্র সাড়ে সাত মিটার গভীরতা ও ১৬০ মিটার দীর্ঘ জাহাজ প্রবেশের অনুমতি দেয়া হতো।

আরও খননকাজের পর ১৯৮০ সালে ৮ মিটার গভীর ও ১৭০ মিটার দীর্ঘ, ১৯৯০ সালে সাড়ে আট মিটার গভীর ও ১৮০ মিটার দীর্ঘ, ১৯৯৫ সালে ৯ মিটার গভীর ও ১৮৫ মিটার দীর্ঘ এবং ২০১৪ সালে সাড়ে নয় মিটার গভীর ও ১৯০ মিটার দীর্ঘ জাহাজ প্রবেশের সুযোগ সৃষ্টি হয়।

এরপর আট বছর পর ক্যাপিটেল ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে বালু-মাটি অপসারণ করে গভীরতা বাড়ানো হয়। জেটিসহ এলাকায় পানির স্বাভাবিক গভীরতা এবং জোয়ারের উচ্চতা হিসেব করে এবার ২০০ মিটার দীর্ঘ এবং ১০ মিটার গভীরতার জাহাজের প্রবেশের অনুমতি দেয়া হয়েছে। এর ফলে ছোটখাট প্রাকৃতিক দুর্যোগে পণ্য খালাস বন্ধ হয়ে জাহাজগুলোকেও আর বর্হিনোঙ্গরে অলস বসে থাকতে হবে না।

ঢাকাটাইমস/২০মার্চ/ইএস