মাদারীপুর বাসদুর্ঘটনা: ভোরে একসঙ্গে বের হলেন, বিকালে বড় ভাইয়ের লাশ নিয়ে বাড়ি ফিরলেন ছোট ভাই

প্রকাশ | ২০ মার্চ ২০২৩, ১০:১২

খুলনা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
নিহত আশফাক উজ্জামান লিঙ্কনের (৪০) ফাইল ফটো, ডানে দুর্ঘটনা কবলিত বাস।

আশফাক উজ্জামান লিঙ্কন (৪০) ও ইসরাক হোসেন (৩৪) দুই ভাই। তারা দুজনই রবিবার সকালে  মাদারীপুরের শিবচরে  দুর্ঘটনাকবলিত ইমাদ পরিবহনের বাসটিতে ছিলেন। ছোট ভাই ইসরাক  দুর্ঘটনার আগে নেমে গিয়ে রক্ষা পান। আর বড় ভাই লিঙ্কন বাসদুর্ঘটনায় মারা গেছেন। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে লিঙ্কন সবার বড়।

তাদের বাড়ি খুলনা শহরের টুটপাড়া এলাকায় । গতকাল রবিবার যখন ছোট ভাই তার বড় ভাইয়ের লাশ নিয়ে যখন বাড়ি এলেন তখন এক করুণ দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। স্বজনরা হাউমাউ করে কাঁদছেন। মা-বাবা মুর্ছা যাচ্ছেন।   

জানা গেছে, খুলনা থেকে রবিবার ভোরে ঢাকার উদ্দেশে ছাড়ে ইমাদ পরিবহন। এর মধ্যে ছোট ভাই ইসরাক ফরিদপুরের ভাঙ্গায় নিজ কর্মস্থলের জন্য নেমে গেলেও বড় ভাই লিঙ্কন ঢাকা যেতে থেকেছেন বাসেই। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর ঢাকায় পৌঁছানো হলো না তার। মাদারীপুরের শিবচরে যাত্রীবাহী বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ১৯ জনের প্রাণ গেছে। মৃত্যুর এই মিছিলে যোগ দিয়েছেন লিঙ্কনও।

 

ছোট ভাই ও বোনের বিয়ে হলেও লিঙ্কন এখনও বিয়ে করেননি। তিনি ঢাকায় থাকতেন। করোনার শেষ দিকে খুলনায় আসেন এবং পজিটিভ শনাক্ত হলে হাসপাতালে এক মাস চিকিৎসাধীন ছিলেন। তারপর থেকে তিনি খুলনাতেই আছেন।  রবিবার সকালে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়েও আর পৌঁছানো হয়নি তার।

বাবা শাহজাহান মোল্লা বলেন, ওরা দুই ভাই ভোর ৪টায় বাসা থেকে বের হয়ে যায়। ছোট ছেলে ইশরাক রাজবাড়িতে মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ম্যানেজার। আর বড় ছেলে লিঙ্কন ঠিকাদারি করে। এখন ছোট ছেলেই বড় ছেলের লাশ নিয়ে বাড়িতে আসছে।

 

ইসরাক হোসেন বলেন, আমরা দুপুর ১২টার দিকে তার মৃত্যু নিশ্চিত হলেও বাবাকে জানাই দুপুর দেড়টার দিকে। মা অসুস্থ। তাই তাকে ঘটনা জানাইনি। কিন্তু লোকজনে বাড়ি ভরে যাওয়ার পর মায়ের বুঝতে বাকি নেই। তিনি বারবার অজ্ঞান হয়ে পড়ছেন।

 (ঢাকাটাইমস/২০মার্চ/এআর)