গ্রেপ্তার হচ্ছেন হেলেনা জাহাঙ্গীর!

প্রকাশ | ২০ মার্চ ২০২৩, ১৯:১০

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

প্রতারণায় মামলায় দুই বছরের সাজা হওয়া বিতর্কিত নারী নেত্রী হেলেনা জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। পরোয়ানা হাতে পেলেই হেলেনা জাহাঙ্গীরকে গ্রেপ্তার করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

 

এর আগে সোমবার প্রতারণার মামলায় হেলেনাসহ পাঁচজনকে দুই বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছে ঢাকার একটি আদালত। তবে রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত না থাকায় হেলেনা জাহাঙ্গীর ও তার সহযোগী হাজেরা খাতুনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। এই মামলায় অন্য তিন আসামিকে সাজার পরোয়ানা দিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। তারা হলেন- কথিত জয়যাত্রা টিভির প্রধান বার্তা সম্পাদক কামরুজ্জামান আরিফ, কো-অর্ডিনেটর সানাউল্ল্যাহ নূরী ও স্টাফ রিপোর্টার মাহফুজ শাহরিয়ার।

 

২০২১ সালের ২ আগস্ট রাতে রাজধানীর পল্লবী থানায় জয়যাত্রা টেলিভিশনের ভোলা জেলা প্রতিনিধি আবদুর রহমান তুহিন প্রতারণার মামলাটি করেন। ওই মামলায় তিনি অভিযোগ করেন, জয়যাত্রা টিভির স্থানীয় সংবাদদাতা হিসেবে নিয়োগ দেয়ার জন্য তার কাছ থেকে ৫৪ হাজার টাকা নেন হেলেনা জাহাঙ্গীর। প্রতিবেদক হিসেবে তিনি কয়েক মাস কাজ করলেও কোনো বেতন পাননি। অন্যদিকে তার কাছ থেকে প্রতিমাসে তিন হাজার টাকা নেয় টেলিভিশন কর্তৃপক্ষ।

 

পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পারভেজ ইসলাম ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘এখনও আমাদের কাছে কোনো গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আসেনি। আমরা খোঁজ-খবর নিচ্ছি। পরোয়ানা আসলে অবশ্যই পুলিশ আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করবে।’

 

ডিএমপির মিরপুর বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) জসিম উদ্দিন মোল্লা ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আইন সবার জন্য সমান। আমাদের কাছে পরোয়ানার কপি পৌঁছালে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নিবো।’

 

ফেসবুকে ‘বাংলাদেশ আওয়ামী চাকরিজীবী লীগ’ নামের একটি সংগঠনের সভাপতি হিসেবে হেলেনা জাহাঙ্গীরের নাম আসায় ২০২১ সালের ২৪ জুলাই তাকে উপকমিটির পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এরপর ২৯ জুলাই রাতে তার গুলশানের বাসায় অভিযান চালায় র‌্যাব। এসময় তার বাসা থেকে বিদেশি মদ, ক্যাসিনো সরঞ্জাম, চাকু, ওয়াকিটকি, হরিণের চামড়াসহ বিভিন্ন অবৈধ সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। একইদিন গভীর রাতে মিরপুরে হেলেনার মালিকানাধীন কথিত আইপিটিভিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালানো হয়। পরদিন ৩০ জুলাই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা এক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয় হেলেনা জাহাঙ্গীরকে। ডিজিটাল প্লাটফর্ম ব্যবহার করে মিথ্যাচার, অপপ্রচার ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা ও ব্যক্তিদের সম্মানহানি করার অপচেষ্টার অভিযোগ আনা হয় মামলায়। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ছাড়াও সেসময় হেলেনার বিরুদ্ধে চারটি মামলা হয়। যার তিনটি এখন বিচারাধীন।

 

প্রতারণার মামলায় যেভাবে শেষ হলো: ভোলা জেলা প্রতিনিধি আবদুর রহমান তুহিনের করা প্রতারণার মামলার চার্জশিট ২০২১ সালের ২১ নভেম্বর দাখিল করেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহিনুর ইসলাম। তদন্তে হেলেনাসহ পাঁচজনকে অভিযুক্ত করা হয়। ২০২২ সালের ১৮ এপ্রিল মামলায় হেলেনা জাহাঙ্গীরসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। এর আগে আদালত মামলার বাদিসহ রাষ্ট্রপক্ষের ১৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করেন। আজ সেই মামলা রায় ঘোষণা করে আদালত।

 

(ঢাকাটাইমস/২০মার্চ/এসএস/কেএম)