বলগাহীন বাজারের জাঁতায় চ্যাপ্টাপ্রায় সাধারণ মানুষ

প্রকাশ | ২৪ মার্চ ২০২৩, ১৪:১৪ | আপডেট: ২৪ মার্চ ২০২৩, ১৪:৪০

নিজস্ব প্রতিকেদক, ঢাকাটাইমস

নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতির দামে জনজীবনে চলছে হা-হুতাশ। শুক্রবার রমজানের প্রথম দিনেই বাজারে গিয়ে নাভিশ্বাস উঠছে ক্রেতাদের। রোজায় এমনিতেই কিছু পণ্যের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় খরচ বাড়ে। তার ওপর দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি। এই জাঁতায় পড়ে চ্যাপ্টাপ্রায় সাধারণ মানুষ। যিনি একসময় ছুটির দিনে ব্যাগ ভরে বাজার নিয়ে ঘরে ফিরতেন, তার বাজার এখন পড়ে থাকে ব্যাগের তলায়

শুক্রবার রাজধানীর রামপুরা কাঁচাবাজার এবং শান্তিনগর বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মাছ-মাংস, সবজিসহ সব ধরনের নিত্যপণ্যই সাধারণ ক্রেতাদের সাধ্যের বাইরে।  

রামপুরা কাঁচাবাজারের ক্রেতা মো. নাদিম  ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘বাজারে সব পণ্য চড়া দামে কিনতে হচ্ছে। যে বেগুন ৪০-৫০ টাকায় কিনেছি, সেই বেগুন ৭০ থেকে ৮০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। আর ছোট বেগুন ৬০ টাকার নিচে পাওয়া যাচ্ছে না।

রামপুরা কাঁচা বাজারের সবজি  বিক্রেতা সাব্বির মিয়া  ঢাকাটাইমসকে বলেন,  ‘কাঁচামরিচ ১৪০ টাকা, চিচিঙ্গা ৯০ টাকা, শিম কেজিপ্রতি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, টমেটো ৪০ থেকে ৫০ টাকা, ধুন্দুল ৬০ টাকা, গোল বেগুন ৭০ থেকে ৮০ টাকা,  লম্বা বেগুন ৭০ টাকা, শসা ৭০ টাকা, কচুর লতি ১২০ টাকা,  পেঁপে ৩০ থেকে ৪০ টাকা, পটল ৭০ থেকে ৮০ টাকা, করলা ১০০ টাকা, ঢেঁড়স ১০০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে।’

তিনি  বলেন, ‘আকার ভেদে প্রতিটি  লাউ-চালকুমড়া ৮০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে।  কাঁচা কলা ৪০ টাকা এবং লেবুর হালি ৪০ টাকায় বিক্রি করছি। বাজারে সবজি খুব চড়া দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে ২০-৩০ টাকা বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। কারণ আমাদের বেশি দামে কিনে আনতে হচ্ছে।’

রামপুরা কাঁচাবাজারের চালে ব্যবসায়ী সোলেইমান ইসলাম ঢাকা টাইমসকে জানান, মিনিকেট চাল ৭২ টাকা, পাইজাম ৫০ টাকা, পোলাও চাল খোলা ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা, গুটি স্বর্ণা কেজি ৫০ টাকা, আটাশ ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মুরগি ব্যবসায়ী রিমন মিয়া ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘ব্রয়লার মুরগি গত শুক্রবার ২৫০ থেকে ২৬০ টাকায় বিক্রি করলেও আজ ২৮০ থেকে ২৯০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। সোনালি মুরগি ৩৫০ টাকা ছিল, আজ ৩৯০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে।  তবে লেয়ার মুরগি তেমন পাওয়া যাচ্ছে না। আর পাওয়া গেলেও লেয়ার মুরগি ৩২০ টাকায় কিনতে হবে ক্রেতাদের। আর দেশি মুরগি ৭০০ টাকায় প্রতিকেজি বিক্রি করছি।’

তিনি বলেন, ‘একদিকে রমজান মাস শুরু অন্যদিকে শুক্রবার। গতকাল থেকে বাজারে সব কিছুর দাম আরও বেশি বেড়ে গেছে।’

মাংস বিক্রেত্রা আফজল হোসেন ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘গরুর মাংস ৭৫০ টাকা ও খাসির মাংস ১১০০ থেকে ১১৫০ টাকায় বিক্রি করছি। 

লেয়ার মুরগির লাল ডিম একটি ১২ টাকা, হালি ৪৮  টাকা, ডজন ১৪৫ টাকা, হাঁসের ডিমের ডজন ১৯০ টাকা ও দেশি মুরগির ডিমের ডজন ২০০ টাকা।

শোল মাছ ৮০০ থেকে ৯৫০ টাকা, কাতল ২৮০ থেকে ৩৫০ টাকা, রুই মাছের কেজি ৩০০ থেকে ৩৮০ টাকা, টাকি মাছের কেজি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, কাঁচকি মাছ ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা, পাঙ্গাশ ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, শিং মাছ ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, পাবদা ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০ টাকা, চাষের কই ২৫০ টাকা, টেংরা ৪০০ টাকা, বোয়াল আকার ভেদে ৫০০ থেকে ১২০০ টাকায় কেজি বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়াও দুই কেজি ওজনের নদীর পাঙ্গাশ ৭০০ টাকা, চিংড়ি আকার ভেদে ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা, রূপচাঁদা আকার ভেদে ৭০০ থেকে ১৪০০ টাকা, ৯০০-৯৫০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১১০০ থেকে ১২৫০ টাকা, ৭০০ গ্রামের ইলিশ ৯০০ টাকা, ৬০০ গ্রামের ইলিশ ৭৫০ টাকা, সাড়ে ৩০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৬০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে দেশি আদা কেজিপ্রতি ১৪০ থেকে ১৭০ টাকা, ইন্ডিয়ান আদা ২৮০ থেকে ২৯০ টাকা, সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৮৭ টাকা, পেঁয়াজ ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, লবণ ৩৮ থেকে ৪০ টাকা, বড় রসুনের কেজি ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা, ছোট রসুন ১২০ থেকে ১৩০ টাকা, আলু ৩০ টাকা, দেশি মসুর ডাল ১৪০ টাকা, ইন্ডিয়ান মসুর ডাল ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

(ঢাকাটাইমস/২৪মার্চ/পিআর/এফএ)