কে এই নোমান আল মাহমুদ? হেভিওয়েটদের পিছু হটিয়ে কোন ম্যাজিকে পেলেন এমপি নমিনেশন?

প্রকাশ | ২৫ মার্চ ২০২৩, ১৬:৫৫

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন নগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ। এই আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী হেভিওয়েট নেতাদের পেছনে ফেলে অনেকটাই চমকে দিয়েছেন দলের মাঝারি পর্যায়ের এই নেতা।

শনিবার দলের আওয়ামী লীগের সংসদীয় বোর্ডের সভায় নোমান আল মাহমুদকে মনোনয়ন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

বন্দরনগরীর পাঁচলাইশ, চান্দগাঁও, মোহরা, ষোলশহর এবং বোয়ালখালী উপজেলা নিয়ে চট্টগ্রাম-৮ সংসদীয় আসন গঠিত। বিগত কয়েক দশক ধরে এই আসনে বোয়ালখালীর বাসিন্দা রাজনীতিবিদরা নির্বাচিত হয়েছেন।

গত ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান এ আসনের সংসদ সদস্য মোছলেম উদ্দিন আহমদ। এক বছরের বেশি সময় ধরে তিনি ক্যান্সারে ভুগছিলেন। তিনি ছিলেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি।

চট্টগ্রাম-৮ উপনির্বাচনের মনোনয়ন পেয়ে মোছলেম উদ্দিন আহমদের উত্তরসূরী হতে যাচ্ছেন নোমান আল মাহমুদ। এই আসনে হেভিওয়েটসহ ২৫ জন প্রার্থী আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রার্থী ছিলেন। সবাইকে টপকে নৌকার টিকিট হাসিল করলেন নোমান আল মাহমুদ। কিন্তু কোন ম্যাজিকে? আলোচনা তুঙ্গে চট্টগ্রামের রাজনৈতিক অঙ্গনে।

বন্দরশহরের রাজনীতিতে নোমান আল মাহমুদ একজন মধ্যম সারির নেতা। তবে চমকৈই দেখালেন উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে। দলীয় নেতাকর্মীরা  রীতিমতো অবাক।

কারণ, নোমানের চেয়ে ডাকসাইটে বড় বড় নেতাদের কেউ মনোনয়ন পাবেন, এমন ধারণাই ছিল তাদের অনুসারীদের। নোমান নিজেও হেভিওয়েটদের ভিড়ে মনোনয়নের আশা তেমন একটা করেননি বলেন আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীদের ভাষ্য।

আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা জানান, দলের সভাপতি শেখ হাসিনা যাকে যোগ্য মনে করেছেন তাকেই মনোয়ন দিয়েছেন। এই মনোনয়নের মধ্যে শেখ হাসিনা বার্তা দিয়েছেন এলাকায় যাদের জনপ্রিয়তা বেশি এবং কোনো বিতর্কিত কর্মকাণ্ড নেই তারাই আগামীতে দলের মনোনয়ন পাবেন।

নোমান আল মাহমুদ প্রয়াত দুই এমপি মইনুদ্দিন খান বাদল ও মোছলেম উদ্দিন আহমদের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি নগর আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে আ জ ম নাছির উদ্দীনের বলয়ে রাজনীতি করেন।

সাবেক ছাত্রনেতা ও যুবনেতা হিসেবে নোমান আল মাহমুদ অন্তত পাঁচ দশক ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত। ১৯৭১-৭৩ সালে সিটি কলেজ ছাত্রলীগের সদস্য ছিলেন তিনি। পরবর্তীতে ৭৪-৭৭ সালে মহানগর ছাত্রলীগের কমিটিতে শিক্ষা ও পাঠচক্র সম্পাদক হন। ৭৯ সালে যুবলীগে মহানগর কমিটির সদস্য হন।

কেন্দ্রীয় যুবলীগের মোস্তফা মহসিন মন্টু ও ভুলু সরকারের কমিটির সময়কালে, ৮৭ সালে সম্মেলনের মাধ্যমে মহানগর যুবলীগ সভাপতি ও পরবর্তীতে ’৯৪ সালে শেখ সেলিম-কাজী ইকবাল কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং ৯৭ সালে জাহাঙ্গীর কবির নানক-মির্জা আজম কমিটির সদস্য হন। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।

উল্লেখ্য, সংসদ সদস্য মোছলেম উদ্দিন আহমদের মৃত্যুতে শূন্য হয় চট্টগ্রাম-৮ আসন। এই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে মনোনয়নপত্রের আবেদনপত্র সংগ্রহ ও জমা দেওয়ার কার্যক্রম ছিল সোমবার থেকে বুধবার পর্যন্ত। এ সময় মোট ২৫ জন আবেদন জমা দেন।

নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ২৭ এপ্রিল চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

(ঢাকাটাইমস/২৫মার্চ/জেএ/ডিএম)