‘মুক্তিযোদ্ধাদের পেছনে ফেলে রাজাকারদের প্রতিষ্ঠিত করেছে জিয়া-এরশাদ’

প্রকাশ | ২৭ মার্চ ২০২৩, ২৩:০২

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করার কারণে দীর্ঘদিন আমরা স্বাধীনতার স্বাদ পাইনি; স্বাধীনার সুখ পাইনি। মুক্তিযোদ্ধাদের পেছনে ফেলে রাজাকার ও বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদের প্রতিষ্ঠিত করেছে জিয়াউর রহমান, এরশাদ, খালেদা জিয়া।

সোমবার মতিঝিলস্থ বিআইডব্লিউটিএ অফিসে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় আয়োজিত ‘‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক নেতৃত্ব এবং দেশের উন্নয়ন’শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতির অধিকারের জন্য মানুষকে একত্রিত করে স্বাধীন স্বার্বভৌম একটি দেশ দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু একটি সুখী, সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। যেখানে স্বাধীনতার সুখ থাকবে এবং স্বাধীনতার সুখ প্রতিষ্ঠার জন্য বঙ্গববন্ধু সাড়ে তিন বছরে দেশকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিলেন। ঠিক তখনি শুরু হয় ষড়যন্ত্র। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের নোবেল বিজয়ীদের মন্তব্য ছিল- ‘বাংলাদেশ একটি ডেথ কেস। বাংলাদেশের কোন সম্ভাবনা নাই। বাংলাদেশের দিকে তাকিওনা; অন্য দেশের দিকে তাকাও; যাদের সম্ভাবনা আছে। সামাজিক সংস্থাগুলোকে আহবান জানানো হয়েছিল বাংলাদেশের দিকে না তাকাতে। এসব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে বঙ্গবন্ধু মাত্র সাড়ে তিন বছরের মধ্যে দরিদ্র রাষ্ট্র বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশে উত্তীর্ণ  করেন।

তিনি বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করেছি। আমরা যখনই সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করেছি তখনই আমাদের স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করা হচ্ছে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু অস্থায়ী সরকারের (প্রথম সরকার) রাষ্ট্রপতি ও তাজউদ্দীন আহমেদ প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। এ সরকারের অধীনে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালিত হয়েছে। সেক্টর কমান্ডাররা এ সরকারের অধীনে যুদ্ধ পরিচালনা করেছে। এগুলো নির্ধারিত বিষয়। এগুলো নিয়ে কোন বির্তক নয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম, স্বাধিকার, মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব নিয়ে কোন বির্তক চলবে না। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন বলেই পাকিস্তানিরা তাকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছিল। এই জায়গাটায় যারা বির্তক করতে চায়, তাদের সাথে কোন আপোষ নাই।

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল বলেই আপামর বাঙালি জাতি বেনিফিসিয়ারি হয়েছিল। আমরা একটি জাতিস্বত্তার পরিচয় পেয়েছিলাম। পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বেনিফিসিয়ারি হয়েছিল স্বাধীনতাবিরোধী, রাজাকার আলবদর-আলশামসরা। আজকে জাতীয় রাজনীতিতে বক্তব্য দেন মির্জা ফখরুলরা। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা না করলে এসব পরিবারের জাতীয় পর্যায়ে আসার কোন সুযোগ ছিল না। জাতীয় পর্যায়ে আসত মুক্তিযোদ্ধারা; মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানেরা। মুক্তিযোদ্ধাদের পেছনে ফেলে দিয়ে রাজাকারদের প্রতিষ্ঠিত করেছে জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়া। সেই জায়গায় বাংলাদেশ আর কখনো ফিরে যাবে না।  কারণ নতুন প্রজন্ম এখন বাংলাদেশের মূল ইতিহাস জানতে পেরেছে। তারা মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে নাটক, চলচ্চিত্র নির্মাণ করছে, মুক্তিযুদ্ধের শিক্ষা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। পিছিয়ে যাওয়ার কোন সুযোগ নাই। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ উন্নত ও স্মার্ট  বাংলাদেশ হবে এবং তাতে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় কারিগরের ভূমিকা পালন করবে।

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন  নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম, বীর উত্তম, এমপি এবং সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট চলচ্চিত্র পরিচালক, নাট্যকার ও অভিনেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসির উদ্দিন ইউসুফ।

অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) দেলোয়ারা বেগম, স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. আলমগীর, নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমডোর নিজামুল হক, বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান এসএম ফেরদৌস আলম এবং বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফা।

(ঢাকাটাইমস/২৭মার্চ/জেএ/এলএ)