স্থানীয় কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় জবির ৫ শিক্ষার্থী আহত

প্রকাশ | ২৮ মার্চ ২০২৩, ১১:৩২ | আপডেট: ২৮ মার্চ ২০২৩, ১২:১৬

জবি প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের ওপর সংঘবদ্ধভাবে হামলা চালিয়েছে স্থানীয় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। এতে অন্তত ৫ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। এর মধ্যে গুরুতর আহত এক শিক্ষার্থীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সোমবার রাত ১০টা ও ১১টার দিকে গেন্ডারিয়ার মুরগিটোলা মোড় এলাকায় দুই দফায় এ হামলা চালায় তারা। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জবির এক শিক্ষার্থীর ফোন ছিনতাইয়ের ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয়দের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের মারামারির ঘটনা ঘটে। এতে এক জবি শিক্ষার্থী ও স্থানীয় দুজনকে আটক করে সূত্রাপুর থানায় নেয় পুলিশ। পরে মুচলেকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

রাত ১১টার দিকে জবি ছাত্র আবু সুফিয়ান ও শিহাব মুরগিটোলা মোড়ে গেলে ৫০-৬০ জন স্থানীয় কিশোর গ্যাং তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। পরে ওই দুই শিক্ষার্থীর ওপর হামলা চালায় তারা। এসময় তাদের চিৎকারে আশপাশে অবস্থান করা আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী এগিয়ে এলে তাদেরও মারধর করা হয়। এতে অন্তত ৫ জন শিক্ষার্থী আহত হন। হামলায় গুরুতর আহত এক শিক্ষার্থীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

গুরুতর আহত সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সুফিয়ান বলেন, ‘আমি চা খাওয়ার জন্য বন্ধুর সঙ্গে বের হয়েছিলাম। হঠাৎ স্থানীয় কয়েকজন এসে আমাদের নানা প্রশ্ন করতে শুরু করে। বানিয়ানগর থাকি বলতেই আমাদের ওপর হামলা চালানো হয়। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের টি-শার্ট পরা থাকায় আরও মারতে থাকে। আমরা আগের ঘটনা সম্পর্কে কিছুই জানতাম না।’

তবে ঘটনার সময় পুলিশ নীরব ছিল বলে অভিযোগ তুলেছেন হামলার শিকার শিক্ষার্থীরা। এসময় পুলিশ এক শিক্ষার্থীকে মারধর করেছে বলেও অভিযোগ করেন তারা। 

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া এক ভিডিওতে দেখা যায়। শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালানোর সময় ঘটনাস্থলে ১০ জনের বেশি পুলিশ থাকলেও তারা কার্যকর কোনো ভূমিকা পালন করেনি।  

হামলার শিকার শিহাব নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমাদের মারধর করার পর পুলিশ এসে থামায়। কিন্তু বলতে থাকে তোরা জগন্নাথের ছাত্র এখানে আসছিস কেন? এই কথা বলেই পুলিশ আমাকে মারতে থাকে।’

‘বিষয়‌টি জানার পর আহত‌দের চি‌কিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল। বলেন, সূত্রাপুর ও গেন্ডা‌রিয়া থানার ও‌সিদের সঙ্গে কথা হয়েছে। অ‌ভি‌যোগ দি‌লে ব্যবস্থা নেবেন বলে তারা জানিয়েছেন।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে গেন্ডারিয়া থানার ওসি মো. আবু সাঈদ আল মামুন বলেন, ‘এটা সূত্রাপুর থানার অধীনে। তবে ঘটনার সময় সেখানে গেন্ডারিয়া থানার পুলিশ সদস্যরা ছিলেন। তারা মারামারি থামিয়ে দিয়েছেন। পরে আমি নিজে ঘটনাস্থলে গিয়েছি। তবে এ ঘটনায় কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি।’

সূত্রাপুর থানার ওসি মো. মইনুল ইসলাম বলেন, ওই ঘটনায় ভিকটিম এখনো আমাদের কাছে কোনো অভিযোগ করেনি। কোথা থেকে ঘটনার সূত্রপাত হয়েছে তা ভিকটিম আসলে তথ্যের মাধ্যমে জানতে পারবো। আর যেই দুইজনকে আটক করা হয়েছিল, শিক্ষার্থীরা চিহ্নিত করেছিল তারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত না। তাই তাদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

পুলিশ শিক্ষার্থীদের গায়ে হাত তোলা নিয়ে তিনি বলেন, উত্তেজিত ঘটনা থামানোর জন্য পুলিশ বিভিন্ন সময় লাঠিচার্জ করে থাকে। হয়তো তখন সবাই কিছুটা আঘাত পেতে পারে। এ বিষয়ে যে ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়েছে সেটা এখনো পাইনি।

(ঢাকাটাইমস/২৮মার্চ/এআর)