যে মন্ত্রে ১২০ কেজি ওজন কমালেন আদনান সামি

প্রকাশ | ২৮ মার্চ ২০২৩, ১৪:৪৪

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

শুনলে হয়তো অনেকেই চমকে যাবেন, সঙ্গীত শিল্পী আদনান সামির আয়ু ছিল মাত্র ছয় মাস! সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে এমনই চাঞ্চল্যকর মন্তব্য করেছেন পাকিস্তানে জন্ম নেওয়া বলিউডের এ গায়ক। একইসঙ্গে নিজের ওজন কমানোর পেছনের রহস্য প্রকাশ করলেন তিনি।

আদনান যখন প্রথম টেলিভিশনের পর্দায় আসেন তখন তার ওজন ছিল ২৩০ কেজি। ২০০৬ সালে ডাক্তার তাকে জানান তিনি আর ছয় মাস বেঁচে থাকবেন! যেমন করেই হোক ওজন কমাতে হবে। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটি ছিল আমার কাছে ডু অর ডাই পরিস্থিতি। এরপর বেঁচে থাকার জন্য ১২০ কেজি ওজন কমিয়েছিলাম।’

এই ওজন কমানোর ব্যাপারটা কতটা চ্যালেঞ্জিং ছিল তা নিয়ে বিস্তারিত ওই সাক্ষাৎকারে তুলে ধরেন আদনান সামি। তার একাধিক জনপ্রিয় গান এখনও শ্রোতাদের সাড়া জাগানোর জন্য যথেষ্ট। শুধু গান নয়, তার ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও উত্তেজনার শেষ নেই। হঠাৎ তার এই পরিবর্তন সাধারণ মানুষকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছিল। কেন এই ধরনের পরিবর্তন? তিনি কি প্রেমে পড়েছিলেন? তিনি কি কোনও সিনেমায় অভিনয়ের জন্য নিজের শরীরে বদল এনেছিলেন?

উত্তরে গায়ক বলেছেন, ‘এই পরিবর্তন শুধুমাত্র আমার বেঁচে থাকার জন্য। আমি বাঁচতে চেয়েছিলাম।’

আদনান জানান, কিশোর বয়সে তিনি ফিট এবং রোগা ছিলেন। তখন তিনি পোলো, স্কোয়াশ, ঘোড়ায় চড়ার মতো বিভিন্ন খেলার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ২০১৬ সালে পাকিস্তানি নাগরিকত্ব ছেড়ে দেওয়ার পর ভারতের নাগরিক হয়েছিলেন এবং ২০২০ সালে বলিউড গানে অবদানের জন্য পদ্মশ্রী পুরস্কার পেয়েছিলেন।

তিনি বলেন, ‘একটা সময় ছিল যখন আমার ওজন নিয়ে নিয়মিত ঠাট্টার মুখে পড়তে হত। আমার পরিচিত অনেক লোক আমাকে ছেড়ে দিয়েছিল, ভেবেছিল আমি রোগা হতে পারব না। তবুও আমি নিজের চেষ্টায় সক্ষম হয়েছি।’

১৯৭১ সালের ১৫ আগস্ট আদনানের জন্ম লন্ডনে। বাবা আরশাদ সামি পাকিস্তানি এয়ারফোর্সের পাইলট এবং মা নৌরিন জম্মু কাশ্মীরের মেয়ে। আদনানের বড় হওয়া এবং পড়াশোনা ইংল্যান্ডে।

বাবা আরশাদ সামি খান এয়ারফোর্সের চাকরি ছাড়ার পর কূটনীতিক হন। চোদ্দটি দেশে তিনি পাকিস্তানের দূত হয়ে কাজ করেছেন। আরশাদের পূর্বপুরুষরা ছিলেন আফগানিস্তানের রাজ বংশীয়। আরশাদ খানের দাদা আগা মেহফুজকে হত্যা করা হয় আফগানিস্তানে। তারপর তাদের পরিবার পাড়ি দেয় অবিভক্ত ভারতের পেশোয়ারে।

আদনান সামি ইংল্যান্ডের ওয়েস্ট মিডল্যান্ডসের রাগবি স্কুল থেকে পড়াশোনা করেন চলে যান লন্ডনের কিংস কলেজে। এরপর লিঙ্কনস ইন থেকে আইনজীবী হিসেবে উত্তীর্ণ হন তিনি। পাঁচ বছর বয়স থেকেই পিয়ানো বাজাতেন। ছুটিতে ভারতে এলে তিনি পণ্ডিত শিবকুমার শর্মার কাছে সন্তুর বাজানো শিখতেন।

১৯৮৬ সালে আদনান সামির প্রথম গান ‘রান ফর হুজ লাইফ’ইংরেজিতে মুক্তি পায়। মধ্যপ্রাচ্যে তুমুল জনপ্রিয় হয় ওঠে তাঁর গান। ১৯৯৫ সালে তার জীবনের একমাত্র সিনেমা ‘সরগম’। এই ছবিতে তিনি ছিলেন সঙ্গীত পরিচালক এবং অভিনেতা। পাকিস্তানে বেস্ট সেলিং অ্যালবামের মধ্যে অন্যতম ‘সরগম’।

২০০০ সালে আশা ভোঁসলের সঙ্গে আদনান সামির বিখ্যাত অ্যালবাম ‘কভি তো নজর মিলাও’। আদনানে সুরে এই ভিডিও ছিল অত্যন্ত সফল ও জনপ্রিয়। অ্যালবামের সবথেকে বেশি হিট হয়েছিল ‘কভি তো নজর মিলাও’ এবং ‘লিফট করা দে’।

এরপর বলিউডে গান ও অভিনয়- দু’দিকেই সমান সুযোগ আসতে থাকে আদনান সামির কাছে। ‘আজনবি’,‘চোর মচায়ে শোর’, ‘আওয়ারা পাগল দিওয়ানা’, ‘সাথিয়া’, ‘কোই মিল গয়া’, ‘জগার্স পার্ক’, ‘পেজ থ্রি’, ‘গরম মশালা’, ‘খোলসা কা ঘোসলা’, ‘ডার্লিং’, ‘ধামাল’-এর মতো সিনেমায় আদনান সামির গান শ্রোতাদের মনে দাগ কাটে। সূত্র: জি নিউজ

(ঢাকাটাইমস/২৮মার্চ/এলএম)