বিএনপি চেতনা ও মননে পাকিস্তানকে ধারণ করে: ওবায়দুল কাদের

প্রকাশ | ২৮ মার্চ ২০২৩, ১৮:৫৯

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

বিএনপি চেতনা ও মননে একাত্তরের পরাজিত শক্তি পাকিস্তানকে ধারণ করে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে একথা বলেন তিনি।

'আওয়ামী লীগ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর প্রেতাত্মা’— মির্জা ফখরুলের এই মন্তব্যের নিন্দা জানিয়ে কাদের বলেন, তার বক্তব্য শতাব্দীর সেরা কৌতুক শুধু নয় মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে তাদের বিদ্বেষ ও আক্রোশের বহিঃপ্রকাশ।

তিনি বলেন, আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি নেতৃবৃন্দ এমন অসংলগ্ন প্রলাপ বকছে। মনে হয় রাজনৈতিক নেতা হিসেবে তাদের বিবেক-বুদ্ধিই শুধু হারায়নি চক্ষুলজ্জাও হারিয়ে গেছে। বাঙালি জাতি ও বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের ইতিহাসের সঙ্গে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ইতিহাস অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত।

কাদের বলেন, বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাঙালি জাতি ঐক্যবদ্ধ লড়াই-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ত্রিশ লাখ শহীদের রক্ত ও আড়াই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানির বিনিময়ে এদেশের স্বাধীনতা অর্জন করে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এই ধরনের অশালীন ও পূর্ণ না শুধু আওয়ামী লীগের সুমহান ঐতিহ্যকে অসম্মানিত করেনি বরং বিশ লাখ শহীদের আত্মত্যাগকেও অপমানিত করেছে। একই সঙ্গে তিনি সমগ্র জাতি ও জনগণের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে তার রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। মির্জা ফখরুলের ঔদ্ধত্যপূর্ণ মন্তব্য সমগ্র জাতির অনুভূতিতে চরমভাবে আঘাত হেনেছে। আমরা মির্জা ফখরুলের ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

বিবৃতিতে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, এদেশের মানুষ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ঐতিহাসিক সংগ্রাম ও মহান মুক্তির মধ্য দিয়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে প্রণীত হয় স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধান নিগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রামে যে নীতি-আদর্শ শক্তি যুগিয়েছে তা এ রাষ্ট্রের মূলনীতি হিসেবে সংবিধানে প্রতিফলিত হয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম জাতীয়তাবাদ ও ধর্মনিরপেক্ষ বিএনপি জন্মলগ্ন থেকে আদর্শগতভাবে এ রাষ্ট্রের জন্যের মূল চেতনাবিরোধী রাজনীতি করে আসছে। মির্জা ফখরুল কিছু দিন পূর্বে বলেছিলেন ‘পাকিস্তান আমলে ভালো ছিলাম’। তাদের পাকিস্তানপ্রীতি নতুন কোনো বিষয় নয়। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সামরিক স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান এদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ভূ-লুণ্ঠিত করে গণতন্ত্রকে নির্বাসনে পাঠিয়ে পাকিস্তানি ভাবাদর্শে বাংলাদেশকে পরিচালিত করেছিল। স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি যুদ্ধাপরাধীনের রাজনীতিতে পুনর্বাসিত করে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির ধারাকে পরিপুষ্ট করেছিল। তার অনুসরণ করে খালেদা একইভাবে পাকিস্তানি ভাবাদর্শে রাষ্ট্র পরিচালনা করেছে। ক্ষমতা দখলের নীলনকশা বাস্তবায়নে ১৯৯১ সালে জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর কাছ থেকে অর্থ সহায়তা নিয়েছিল বলে কয়েক বছর আগে সে দেশের আদালতে সংস্থাটির প্রধান জননন্দিতে উল্লেখ করেছিল। অন্যদিকে পরাজিত পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর এক জেনারেল আসিফ জানজুয়ার মৃত্যুতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে খালেদা জিয়া শোকবার্তা পাঠিয়ে জাতির ঐতিহাসিক সংগ্রামের চেতনার মূলভিত্তিতে আঘাত করেছিল। বিএনপি চেতনায় ও মননে একাত্তরের পরাজিত শক্তি ও তার প্রতি পাকিস্তানকে ধারণ করে।

তিনি বলেন, সফল রাষ্ট্রনায়ক বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিশ্বসভায় মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছে। এমনকী মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত পাকিস্তানের গণমাধ্যমেও বাংলাদেশ ও এদেশের প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশং করা হয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় মিলিটারি ডিক্টেটর জিয়াউর রহমানের পকেট থেকে পাকিস্তানি দর্শনের ওপর প্রতিষ্ঠিত বিএনপি বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে এখনও মানসিকভাবে মেনে নিতে পারে নাই। এটা তাদের মানসিক দৈন্যতা। আজকে যখন দেশের মানুষ স্বাধীনতার সুফল ভোগ করছে তখনও বিএনপি নেতৃবৃন্দ স্বাধীনতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছে।

‘আমরা বিশ্বাস করি, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণকারী সমগ্র দেশবাসী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজ ঐক্যবদ্ধ এবং তারা আগামীতে বঙ্গবস্তুর স্বপ্নের সোনার বাংলা উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণ করবে, ইনশাল্লাহ’—যোগ করেন কাদের।

ঢাকাটাইমস/ ২৮ মার্চ/জেএ