ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে ছবি তুলতে না পারায় ছাত্রলীগ নেতাকে মারধর আ.লীগ নেতার

প্রকাশ | ২৮ মার্চ ২০২৩, ২২:৫৭

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
প্রতীকী ছবি

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে ছবি তুলতে না পারায় এক ছাত্রলীগ নেতাকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে রাজবাড়ী জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদুল আসাদ রাসেলের বিরুদ্ধে।

গত ২৬ মার্চ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন মারধরের শিকার হওয়া নোয়াখালী কোম্পানীগঞ্জ চরফকিরা ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সাংগঠনিক সম্পাদক জাফরুল ইসলাম নাহিদ।

লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পরে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের অভিযুক্ত রাসেলকে ধানমন্ডি আওয়ামী লীগের সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আসতে নিষেধ করেছেন বলে জানা গেছে।

এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী জাফরুল ইসলাম নাহিদ ঢাকা টাইমসকে বলেন, আমি ধানমন্ডি আওয়ামী লীগের সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের স্যারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম। দেখা করার শেষে স্যারের সঙ্গে বের হচ্ছিলাম। পেছন থেকে আমাকে টেনে ধরেন মাহমুদুল আসাদ রাসেল। এক পর্যায়ে আমাকে ধাক্কা দিয়ে সামনে আসার চেষ্টা করেন ও সরে যেতে বলেন। পরবর্তী ওবায়দুল কাদের স্যার চলে যাওয়া পরে আমাকে রাসেল বলেন তোকে সরে যেতে বললাম, কেনো সরে গেলি না, তোর জন্য আমি ছবি তুলতে পারি নাই। এই বলে কিল-ঘুষি মারতে থাকেন। আমি প্রতিবাদ করায় আমাকে আরও বেশি মারতে থাকেন। পরে সেখান থেকে চুপচাপ থেকে চলে যাই। পরবর্তীতে এই বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার বরাবর ধানমন্ডি অফিসে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।

লিখিত অভিযোগ উল্লেখ করা হয়েছে, বিনীত নিবেদন এই যে, আমি জাফরুল ইসলাম নাহিদ, সাংগঠনিক সম্পাদক,চরফকিরা ইউনিয়ন ছাত্রলীগ, কোম্পানীগঞ্জ, নোয়াখালী আপনার অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে, গত ২৫/০৩/২০২৩ খ্রি. তারিখে আনুমানিক সন্ধ্যা ৭.৩০ ঘটিকায় ৩/এ ধানমন্ডি সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে মাননীয় মন্ত্রী ও সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ওবায়দুল কাদের এমপি মহোদয়ের সাথে দেখা করার জন্য দলের একজন কর্মী হিসেবে অন্যদের সাথে আমিও উপস্থিত ছিলাম। শুধুমাত্র সেলফি বাণিজ্য, সোসাল মিডিয়ায় ভাইরাল ও সমাজের সাধারণ মানুষকে দেখানোর লক্ষ্যে উপস্থিত মাহমুদুল আসাদ রাসেল (প্রকাশ: কাইল্লা রাসেল) নিজের কাঙ্খিত সেলফি ও ছবি তুলতে না পারায় অহেতুক আমাকে শারীরিকভাবে ধাক্কা ও ঘুসি মারেন। যার ফলে আমার শরীরের পরিহিত কাপড় ছিড়ে ফেলে এবং আমাকে মারাত্মকভাবে আঘাত করে। আমার সহপাঠী লোকমানকে ধাক্কা এবং কিলঘুসি মারে। যার ফলে সে আহত হয়। এছাড়া পাশে উপস্থিত মোঃ শহিদুল্লাহ রাজিবকে কিছু লোকজন নিয়ে এলোপাতাড়িভাবে সজরে ধাক্কা ও কিলঘুসি মারতে থাকে। উক্ত আঘাতের ফলে রাজিব মারাত্মকভাবে আহত হয়। এরপর পার্টি অফিসের মূল গেটের বাইরেও আমাদের এলাকার কয়েকজন। নেতাকর্মীকে হামলা করে। ইতিপূর্বে বিভিন্ন জেলা থেকে আগত দলীয় নেতাকর্মীদের সে বিভিন্নভাবে লাঞ্চিত, হয়রানি ও শারীরিকভাবে আঘাত করে। যার ফলে অনেক দলীয় নেতাকর্মী নিরাপদ মনে না করে পার্টি অফিসে আসা বন্ধ করে দিয়েছে। গত কিছুদিন আগে কুমিল্লা জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য তানভীরের সাথে কাইল্লা রাসেল একই ঘটনা ঘটিয়ে তাকেও মারাত্মকভাবে আহত করে। মাননীয় মন্ত্রী মহোদয় খুবই কাছে থাকার অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি নিয়ে কোনো প্রকার প্রতিক্রিয়া দেখানো হয়নি। সে ছবি দেখিয়ে বিভিন্ন লোকজনকে নেতাকর্মীদের সাথে দেখা করিয়ে দেবে বলে অনেক টাকা আত্মসাৎ করে। দলের একজন কর্মী হয়ে সেলফিবাজ রাসেল ও ওরফে কাইল্লা রাসেলেট এহেন ঔদ্ধতপূর্ণ অসৌজন্যমূলক আচরণ পার্টি অফিসের সিসি টিভিতে দৃশ্যমান। সুষ্ঠু প্রতিকার ও বিচার প্রার্থনা করছি।

উল্লেখ্য, সেলফিবাজ রাসেলের ফেসবুক ওয়াল ও টাইমলাইন যাচাই-বাছাই করলে বিষয়টি আরও স্পষ্ট হবে।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে রাজবাড়ী জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদুল আসাদ রাসেল ঢাকা টাইমসকে বলেন, আমি কাউকে মারধর করিনি। আমার নামে যে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে এটা মিথ্যা অভিযোগ।

ঢাকাটাইমস/২৮ মার্চ/জেএ/ইএস