একবেলা না খেয়ে থাকে ৩৭ শতাংশ নিম্ন আয়ের পরিবার: জরিপ

প্রকাশ | ৩০ মার্চ ২০২৩, ০৯:৪২ | আপডেট: ৩০ মার্চ ২০২৩, ১০:১২

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

দেশের ৩৭ শতাংশ নিম্ন আয়ের পরিবারকে দিনে একবেলা না খেয়ে থাকতে হচ্ছে। এ ছাড়া প্রয়োজনের তুলনায় কম খাচ্ছে ৭১ শতাংশ পরিবার। 

বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে।

জরিপ অনুযায়ী, গত ছয় মাসে নিম্ন আয়ের পরিবারের মাসিক আয় গড়ে কমেছে; কিন্তু খরচ বেড়েছে প্রায় ১৩ শতাংশ। শুধু খাদ্যে এই খরচ প্রায় ১৭ শতাংশ বেড়েছে। 

ঢাকা, ময়মনসিংহ, সিলেট, রাজশাহী, রংপুর, বরিশাল, খুলনা ও চট্টগ্রামে ৯-১৮ মার্চ এই জরিপ চালানো হয়। মোট ১৬০০ পরিবার থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। 

বর্তমান পরিস্থিতি নিম্ন আয়ের মানুষ কীভাবে মোকাবিলা করছে এবং সামনের দিনগুলোর বিষয়ে তাদের ভাবনা কী, তা বিশদভাবে বোঝার জন্য সানেম নিম্ন আয়ের খানাগুলোর ওপর জরিপ পরিচালনা করেছে সানেম। 

জরিপে দেখা গেছে, গত ছয় মাসে নিম্ন আয়ের মানুষের জীবিকার খরচ ১৩ শতাংশ বেড়েছে। সেই অনুযায়ী আয় বাড়েনি, বরং কমেছে। 

যেসব পরিবার জরিপের আওতায় এসেছে, সেগুলোর মধ্যে ৪০ শতাংশ পরিবার সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় রয়েছে। এর মধ্যে বেশিরভাগ টিসিবির কার্ডধারী। তবে টিসিবির কার্যক্রম গ্রামের তুলনায় শহরে বেশি। 

জরিপের ফল অনুযায়ী প্রয়োজনের তুলনায় কম খাবার খাচ্ছে বলে মনে করে ৭১ শতাংশ পরিবার। গত ছয় মাসে এই ১৬০০ পরিবারের মাসিক আয় কমেরছ।  কিন্তু খরচ ১৩ শতাংশ বেড়েছে। খাদ্যে এই খরচ বেড়েছে ১৭ শতাংশ। 

এর ফলে ৭৪ ভাগ নিম্ন আয়ের পরিবার ধার করে চলছে বলে জরিপে উঠে আসে। 
জরিপের ফল বলছে, শহর ও গ্রামের মধ্যে বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবিলায় খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করেছে ৯৪ দশমিক ৪ শতাংশ মানুষ। গ্রামে সেটা ৮৬ শতাংশ। এমন পরিস্থিতি মোকাবিলায় ধার করে চলছে শহরের ৭৩ দশমিক ৮ শতাংশ এবং গ্রামের ৭৩ দশমিক ৮ শতাংশ মানুষ। 

নন-ফুড অর্থাৎ খাদ্যবহির্ভূত পণ্যেও নিম্ন আয়ের মানুষ খরচ কমিয়েছে ব্যাপকভাবে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য পোশাক, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য । শহরের পরিবারগুলো খাবারের খরচে বেশি কাটছাঁট করছে। গ্রামের মানুষ খাদ্যবহির্ভূত পণ্যে বেশি কাটছাঁট করছে।


বুধবার রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে জরিপটি প্রকাশ করা হয়।

সংস্থার নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান জরিপের ফল উপস্থাপন করেন  অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সানেমের গবেষণা পরিচালক ড. সায়মা হক।

সংবাদ সম্মেলনে জরিপের ফল তুলে ধরে ড. সেলিম রায়হান বলেন, ‘ব্যয় বাড়ার বিষয়টি কীভাবে মোকাবিলা করছেন—এমন প্রশ্ন রাখা হয় সাধারণ মানুষের কাছে। জবাবে ৯০ দশমিক ২ শতাংশ পরিবার বলেছে, তারা খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন এনেছে। ধার করে চলছে ৭৩ দশমিক ৮ শতাংশ। ৫৫ দশমিক ৯ শতাংশ মানুষ বলেছে, তারা নন-ফুড আইটেমের খরচ কমিয়ে এনেছে। সঞ্চয় করার সুযোগ কমিয়ে এনেছে ৫৫ দশমিক ৫ শতাংশ, ওভারটাইম কাজ করছে ৩৯ দশমিক ৩ শতাংশ আর ৩৫ দশমিক ৩ শতাংশ মানুষ তাদের সঞ্চয় যা ছিল তা থেকে অতিরিক্ত খরচ করছে।

সানেমের গবেষণা পরিচালক ড. সায়মা হক বলেন, ‘ঋণ নেওয়াকে অনেকে উদ্ধার পাওয়ার প্রক্রিয়া হিসেবে নিয়েছেন। তবে এসব ঋণে সুদের হার অনেক বেশি। তাতে সুদের দুষ্টচক্রের মধ্যে পড়তে পারে এসব মানুষ।’

(ঢাকাটাইমস/৩০মার্চ/এফএ)