বিদ্যানন্দের ‘হ্যাপিনেস স্টোর: ৫০ টাকার পণ্য মাত্র ১ টাকায়

প্রকাশ | ৩০ মার্চ ২০২৩, ২০:০৭

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের চ্যারিটি প্রোগ্রাম হ্যাপিনেস স্টোরে বিক্রেতা কর্মীর ভূমিকায় স্বেচ্ছাশ্রম দিলে জনপ্রিয় অভিনেত্রী বিদ্যা সিনহা মিম। বৃহস্পতিবার তিনি বিদ্যানন্দের এই আয়োজনে যুক্ত হন।

 

তিন টাকায় পাওয়া যায় চাল, ডাল পাওয়া যায় চার টাকায়। তেমনি পাওয়া যাচ্ছে আটা, লবণ, চিনি, তেল, সুজি, মাছ, মাংস, সবজি, থেকে শুরু করে ক্রোকারিজ আইটেম, বাচ্চাদের পোষাক, খেলনা সহ স্টেশনারি পণ্য। দুই তলা বিশিষ্ট এই মার্কেটে বিভিন্ন পণ্য সাজিয়ে রাখা হয়েছে। আর ক্রেতারা সে পণ্য দেখে দেখে কিনতে পারেন এমন অবিশ্বাস্য দামে। বলছি একটি সুপারস্টোরের গল্প।

 

তবে এই সুপারস্টোরটি বাকি ৮-১০টা সুপার স্টোরের মতো নয়। এখানকার ক্রেতাও সমাজের এলিট ক্লাস কিংবা সাধারণ মানুষ নয়। এখান থেকে শুধু পণ্য কিনতে পারেন সমাজের অবহেলিত ও সুবিধাবঞ্চিত শ্রেণির মানুষ।

 

স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন সম্প্রতি চালু করেছে এমনই একটি সুপারশপ, যার নাম দেওয়া হয়েছে “হ্যাপিনেস স্টোর”। রাজধানীর মিরপুর বর্ধিত পল্লবীর রূপনগর রোডে অবস্থিত বিদ্যানন্দের এই সুপার মার্কেটটি। 

 

বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের আমন্ত্রণে এই সুপার শপটি পরিদর্শনে আসেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী বিদ্যা সিনহা মিম। এ সময় তিনি নিজেও  স্যালসম্যানের ভূমিকায় স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করেন।

 

বৈশ্বিক মন্দার প্রভাবে দেশের বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়মিত সংবাদের হেডলাইন হয়। দরিদ্র এবং নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে সবকিছু দাম। এ ছাড়া রমজানেও নতুন করে দুর্ভোগ সৃষ্টি হচ্ছে। এসব বিষয় মাথায় রেখে দরিদ্র মানুষকে নামমাত্র মূল্যে পণ্য দেওয়ার পাশাপাশি প্রয়োজনমতো বাছাই করে পণ্য নেওয়ার স্বাধীনতা দিতে বিদ্যানন্দের এই এলাহি আয়োজন।

 

সাধারণত দেখা যায় শহরের সব বড় বড় দোকানগুলোতে গরীব ও অসহায় মানুষরা কখনো প্রবেশাধিকার পায় না। সেখানে শুধু বিত্তবানদেরই আনাগোনা। ফলে দরিদ্র মানুষের মনে বড় সুপারমার্কেটে কেনাকাটা করতে না পারার আক্ষেপ থেকেই যায়। বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন সে সুপারমার্কেটের ধারণাকে এবার ভিন্নভাবে উপস্থাপন করেছে হ্যাপিনেস স্টোরে। সাধারণ সুপারশপে বিভিন্ন পণ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ব্যবসায়িক চুক্তিতে পণ্য প্রদর্শনের সুযোগ পেলেও হ্যাপিনেস স্টোরে পাচ্ছেন একেবারে বিনামূল্যে। তবে তাঁদের সে পণ্য দান করার চুক্তিতে দিতে হবে দরিদ্র মানুষের জন্য।

 

ইতিমধ্যে দেশের বিভিন্ন পণ্য উৎপাদনকারী ও কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো সাড়া দিয়েছে বিদ্যানন্দের এই অভিনব আয়োজনে। সে পণ্যগুলোও স্থান পেয়েছে বিদ্যানন্দের এই সুপারশপে। ক্রেতাদের সুবিধার্থে খাবার গ্রহণের জন্য আলাদা ফুড জোন এবং ছোট বাচ্চাদের জন্য কিডস জোনও আছে এই মার্কেটে।

 

বিদ্যানন্দের স্বেচ্ছাসেবীরা ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় দরিদ্র মানুষ বাছাই করে প্রতি পরিবারকে মেম্বারশিপ কার্ড প্রদান করছে। সে কার্ড দেখিয়ে পরিবারগুলো এই মার্কেট থেকে পণ্য কিনতে পারবে। প্রতিদিন ১০০-১৫০ পরিবার পাবে এই পণ্য কেনার কার্ড। এ ছাড়া দূরের এলাকার মানুষের আসা যাওয়ার জন্য আলাদা বাস সার্ভিসের ব্যবস্থা থাকবে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এখান থেকে প্রতিটি কার্ডধারী সর্বোচ্চ পঁচিশ টাকার পণ্য কিনতে পারবে যার বাজার মূল্যে প্রায় পাঁচশত টাকা।

বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন মনে করে, কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো এবং সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে আসলে, অভিনব এই উদ্যোগটি আরও সফলভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে।

(ঢাকাটাইমস/৩০মার্চ/কেআর/কেএম)