ক্যান্টনমেন্টে গঠিত দল গণতান্ত্রিক হয় না: শিক্ষামন্ত্রী

প্রকাশ | ৩০ মার্চ ২০২৩, ২৩:০৩ | আপডেট: ৩০ মার্চ ২০২৩, ২৩:০৪

চাঁদপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

ক্যান্টনমেন্ট থেকে যে দল গঠন হয়, সে দল গণতান্ত্রিক দল হয় না বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু তার অর্থনীতিকে খুব সহজভাবে বলেছিলেন- আমি দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফুটাতে চাই। একজন দুঃখী মানুষ কখন হাসে- যখন তার পেটে ভাত, পরনে কাপড় এবং মাথা গোজার ঠাঁই থাকে। যখন তার ছেলে-মেয়ের পড়ালেখার ব্যবস্থা থাকে, যখন আয় রোজগার এবং চিকিৎসার ব্যবস্থা থাকে। কিন্তু এরপর জিয়াউর রহমান অবৈধ ক্ষমতা দখল করে তার ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করার জন্য দল গঠন করলেন। ক্যান্টনমেন্ট থেকে যে দল গঠন হয়, সে দল তো আর গণতান্ত্রিক দল হয় না। সে দল সাধারণ মানুষের দুঃখ কষ্ট লাঘবের জন্য কাজ করে না। তারা নিজেদের আখের গোছানোর জন্য কাজ করে, আর তা হয়েছেও।

বৃহস্পতিবার বিকালে চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে অসহায়দের মাঝে সমাজসেবার সহায়তার চেক, কৃষকদের মাঝে সার ও বীজ এবং ইলিশসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় সুফলভোগী জেলেদের মাঝে বাছুর বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, আমরা এরশাদ, খালেদা জিয়া, হাওয়া ভবন, লুটপাট দেখেছি। আমরা দেখেছি-  ’৭৫ এর হত্যাকারীদের তারা যেমন পুরস্কৃত করেছিল, তেমনি বিচার না করে তা বন্ধ করে দিয়েছিল। ’৭১ এর হত্যাকারীদের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় বসিয়ে ৩০ লাখ শহীদের সাথে, স্বাধীনতার সাথে, দেশের মানুষের সাথে বেঈমানি করেছিল। একই ধারাবাহিকতায় চলছিল দেশ। আমরা সর্বশেষ দেখেছি, এতিমদের অর্থ আত্মসাৎ, দেখেছি হাওয়া ও খোয়া ভবন। দেখেছি কীভাবে অপারেশন ক্লিন হার্টের নামে আমাদের মানুষদের হত্যা করা হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর কন্যাকে ২১ বার হত্যার অপচেষ্টা চালানো হয়েছে, গ্রেনেড এবং বোমা হামলা করা হয়েছে।

দীপু মনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর যারা অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেছিল, তারা কিন্তু সাধারণ মানুষের জন্য কোন কাজ করেনি। যে কারণে দেশে দারিদ্র্য কখনো চলে যায়নি, বরং আরো খারাপ অবস্থা হয়েছে। তখন মানুষের শিক্ষা, স্বাস্থ্যের এবং উন্নয়নের তেমন সুযোগ তৈরি হয়নি। এরপর বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশে ফিরে দীর্ঘ ১৫ বছর সংগ্রাম করে করেছেন। ১৯৯৬ সালে যখন ক্ষমতায় গিয়ে প্রধানমন্ত্রী হলেন, তখন দেশ স্বাধীনতার চেতনায় ফিরে গেল। চেতনাটা হচ্ছে অসম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক এবং শোষণ বৈষম্যহীন সমাজ তৈরি। যেখানে মানুষ সুখে, শান্তিতে ও নিরাপদে থাকবে এবং মর্যাদা নিয়ে বসবাস করবে।

মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা ১৯৯৬ সালে মানুষের ভোট নিয়ে প্রধানমন্ত্রী হলেন। তখন থেকে বিধবা ভাতা, বৃদ্ধ ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, স্বামী পরিত্যাক্তাদের ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতা- অর্থাৎ দুঃখী মানুষের পাশে দাঁড়ালেন তিনি। আশ্রয়ন প্রকল্প করে, গুচ্ছগ্রাম, ভূমিহীন ও গৃহহীনদের ঘর করে দিয়েছেন। মাত্র কয়েক দিন আগে ৪০ হাজার মানুষকে ঘর করে দিলেন প্রধানমন্ত্রী। পৃথিবীতে এমন ঘটনা বিরল।

তিনি বলেন, আজকে কৃষককে বীজ ও সার দেয়া হচ্ছে। বিএনপির আমলে সার চাওয়া হয়েছে, তখন ১৮ জন কৃষককে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। অথচ শেখ হাসিনা বলেছেন- ‘সারের পেছনে কৃষক ছুটতে হবে না, সার কৃষকের কাছে পৌঁছে যাবে।’ শেখ হাসিনা সব কথা রাখেন। তিনি বলেছেন- ডিজিটাল বাংলাদেশ করবেন- তা করেছেন। এখন আপনাদের সকলের হাতেহাতে মোবাইল। আজকে মানুষ না খেয়ে থাকে না, সকলের পরনে কাপড় আছে। কমিউনিটি ক্লিনিকে গেলে ৩০ প্রকারের ওষুধ পাওয়া যায়।

চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ডা. জেআর ওয়াদুদ টিপু, চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. গোলাম মেহেদী হাসান, হাইমচর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নুর হোসেন পাটওয়ারী, হাইমচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) চাই থোয়াইহলা চৌধুরী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ইয়াসির আরাফাত, হাইমচর উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসেন বেপারী, হাইমচর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি হুমায়ুন প্রধানিয়া, হাইমচর উপজেলা সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা মাহবুব রশীদ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

(ঢাকাটাইমস/৩০মার্চ/এলএ)