ফাইনাল খেল‌বো, বিএনপি বাঁশির অপেক্ষা করবে না: ফারুক

প্রকাশ | ০২ এপ্রিল ২০২৩, ১৫:০৯ | আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০২৩, ১৬:১৮

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

বিএনপি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দেশের সাধারণ মানুষকে সম্পৃক্ত করবে জানিয়ে দলটির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা জয়নুল আবেদীন ফারুক বলেছেন, তারপর আমরা ফাইনাল খেলা খেলবো। বাঁশি বাজাবার অপেক্ষা বিএনপি করবে না।

তিনি বলেন, সেই ফাইনাল খেলার আগে অনুরোধ জানাবো, আপনারা (আওয়ামী লীগ সরকার) ক্ষমতা ছেড়ে দেন, সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা চালু করেন, সংসদ ভেঙে দেন, অথর্ব নির্বাচন কমিশনকে পদত্যাগ করতে বলেন।

রবিবার দুপুরে বিদ্যুৎ, গ্যাসসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে আয়োজিত এক অবস্থান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এই অবস্থান কর্মসূচির আয়োজন করে গণতন্ত্র ফোরাম।

জয়নুল আবেদীন ফারুক বলেন, ২০১৪ সালে বাসে আগুন লাগিয়ে, মিছিলে বোমা ফাটিয়ে আপনার (আওয়ামী লীগ) মামলা দিতেন বিএনপির নেতকর্মীদের ওপর। এখন আর পারবেন না। আমাদের চোখ সামনে দুইটা, কপালে দুইটা।

তিনি আরও বলেন, এই সরকার নির্লজ্জভাবে আইনের তোয়াক্কা না করে স্বাধীনভাবে সাংবাদিকদের লেখার কারণে শামসুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করেছে। তাকে কতক্ষণ কাশিমপুর রাখে তো কতক্ষণ কেরানীগঞ্জে নিয়ে যায়। প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানের নামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে। এর মাধ্যমে সাংবাদিকদের একটি বার্তা পৌঁছে দিতে চায় অগণতান্ত্রিক কর্তৃত্ববাদী সরকার যে আপনারা আর লেখালেখি করবেন না, সত্য কথা বলবেন না। কারণ আপনারা লিখলে তারা আসন্ন নির্বাচন আর করতে পারবে না। জনগণ তাদের আর ভোট দেবে না।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের সকল নেতাদের পিঠ দেওয়ালে ঠেকেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এই সরকার ১৭ জন নিরীহ বিএনপির নেতাকর্মীকে চাইনিজ রাইফেল দিয়ে গুলি করে হত্যা করেছে। তারা আজকে গণতন্ত্রকে হাতের মুঠোয় রেখে আবার ২০১৪, ২০১৮ সালের মতো আরেকটি নির্বাচন করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। তাই ১৭ জনের জায়গায় ১৭ হাজার নেতাকর্মীকে যদি চাইনিজ রাইফেল দিয়ে গুলি করলেও আমরা (বিএনপি) রাজপথ ছাড়বো না। কারণ, আমরা চাই না এই সরকার ক্ষমতায় থাকুক।

বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, বাংলাদেশে আর অগণতান্ত্রিক, লুটেরা, ব্যাংক ডাকাত, রিজার্ভ চোর, কানাডায় বেগমপাড়া, দুবাই, মালয়েশিয়ায় বাড়ি করাদের অধীনে নির্বাচন হবে না। তাই রোজার দিনেও আমরা (বিএনপি) আমাদের কর্মসূচি নিয়ে মাঠে আছি। জনগণের স্বাধীনতা রক্ষার জন্য আমরা মাঠে আছি। আমরা মাঠে আছি গরিব মানুষের পক্ষে, আমরা মাঠে আছি এই সরকারের বিরুদ্ধে। 

তিনি আরও বলেন, আমরা চাই, এদেশের মানুষ মাংস-মাছ না খেলেও যেন অন্তত ডাল-ভাত পেট ভরে খেতে পারে, দেশের গণতন্ত্রকে সমুন্নত রাখতে পারি, যে অঙ্গীকার নিয়ে যুদ্ধ করে এই দেশ স্বাধীন করেছি, সেই স্বাধীনতার সুফল যেন দেশের ১৮ কোটি মানুষ ভোগ করতে পারে। 

আওয়ামী লীগের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা (আওয়ামী লীগ) বলেন আপনারা মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের দল। আপনাদের জনগণের কাছে, মুক্তিযোদ্ধের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত। আপনারা মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের দল না। আপনারা যদি মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের দল হয়ে থাকেন, তাহলে আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছি, আমাদের সনদ কেন বাতিল করেন? কেন আমাদের ভাতা বন্ধ করেন? মুক্তিযোদ্ধারা কোনো দলের নয়, তারা দেশের।

তিনি আরও বলেন, আমাদের নেত্রী যিনি স্বাধীনতার ঘোষকের স্ত্রী, যিনি পাঁচবার পাঁচ আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন, মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন করে দিয়েছেন, গণতন্ত্রকে পাকাপোক্ত করার জন্য সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার করেছেন, সেই নেত্রী আজকে গুলশানের একটি বাসভবনে অসুস্থ অবস্থায় বন্দি জীবনযাপন করছেন। মুক্তিযুদ্ধের মূল স্বপক্ষের লোক হলো বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল।

তিনি বলেন, আপনারা (আওয়ামী লীগ) যদি ভাবেন বিএনপিকে আবারও কৌশল করে ভোটে নিয়ে আসবেন, আবার কৌশল করে ২০১৮ সালের মতো দিনের ভোট রাতে করবেন, তা আর হবে না। এই কৌশল তারেক রহমান বুঝে ফেলেছেন। আমরা রক্ত দিতে শিখেছি, জেলখানায় যেতে শিখেছি, কোর্টে হাজিরা দিতে শিখেছি৷ তাই আমাদের ধমক দিয়ে কোনো লাভ হবে না। আমাদের নেতা (তারেক রহমান) আপনাদের সকল চরিত্র উন্মোচন করে দিবে।

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি ভিপি ইব্রাহিমের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন তাঁতি দলের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ, সমমনা পেশাজীবী গণতান্ত্রিক জোটের প্রধান সমন্বয়ক সাইদুর রহমান, ওয়ার্ড কমিশনার খালেদা আলম, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সহসভাপতি ভিপি মাসুম, কৃষকদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক এম জাহাঙ্গীর আলম, মৎস্যজীবী দলের সদস্য ইসমাইল হোসেন সিরাজী প্রমুখ।

(ঢাকাটাইমস/০২এপ্রিল/জেবি/এসএম)