হাওরাঞ্চলে বোরো ধানে ব্লাস্ট রোগের আক্রমণ, দিশেহারা হাজারো কৃষক

প্রকাশ | ১৩ এপ্রিল ২০২৩, ১৪:৫০ | আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০২৩, ১৪:৫৭

নিজস্ব প্রতিবেদক, মৌলভীবাজার

মৌলভীবাজার জেলার হাওরগুলোতে হঠাৎ করে বোরো ধানে ব্লাস্টরোগে দেখা দিয়েছে। ধান কাটা শুরু হওয়ার মাত্র কয়েকদিন পূর্বে শতশত একর জমির বোরোধান এই ছত্রাকের আক্রমণে নিমিষেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

জানা গেছে, বোরো ধানে এই রোগের আক্রমণ শ্রীমঙ্গল উপজেলার হাইল হাওর এলাকায় বেশি। এছাড়া হাকালুকি ও কাউয়াদিঘী হাওরেও ব্রি-২৮ জাতের ধানে ব্লাস্ট রোগ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। এ নিয়ে হাওরাঞ্চলে কৃষকদের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ। বোরো মৌসুমে এ বিপর্যয়ে সাধারণ কৃষকদের মাথায় হাত। অনেকে ঋণ করে ও সমিতি থেকে কিস্তিতে টাকা এনে রোপনের পর ধান নষ্ট হওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। অনেক স্থানে জমিতেই ফেলে রাখা এবং পানিতে ভাসিয়ে দেয়া হচ্ছে নষ্ট হওয়া ধান।

বছরের এ সময়ে বোরো ধান কাটা, মাড়াই দেবার মহোৎসব শুরু হবার কথা উপজেলার হাইল হাওরে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়,  শ্রীমঙ্গল উপজেলার ১১ হাজার ৪৫১ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে ব্রি-২৮ ধানের আবাদ হয়েছে উপজেলার হাইল হাওরাঞ্চলের ৩নং শ্রীমঙ্গল ইউনিয়নের উত্তর ভাড়াউড়া, নোয়াগাঁও, ইছবপুর, ৫নং কালাপুর ইউনিয়নের রাজাপুর, সিরাজনগর, লামুয়া ও কালাপুর গ্রামের ২ হাজার ৬৫১ হেক্টর জমিতে। এসব জমিগুলোতে ব্যাপকভাবে ব্লাস্ট রোগে আক্রমণ করেছে। জমির সব ধান চিটা হয়ে গেছে। কিন্তু অধিকাংশ জমিতেই পড়ে রয়েছে এবারের বোরো ধান। ফলে হাওরাঞ্চলের কৃষকদের এবার খাদ্য ঘাটতি দেখা দেবার সম্ভাবনা রয়েছে। অনেক কৃষক ঋণের বোঝা ও সমিতির কিস্তি পরিশোধ কীভাবে করবেন তা নিয়ে রয়েছেন চরম দুশ্চিন্তায় দিনানিপাত করছেন।

কৃষকরা জানান, তারা ঋণ করে এনে বোরোধান চাষ করেছেন। এসব ঋণ কীভাবে পরিশোধ করবেন তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় তারা। এখন পথে বসার উপক্রম।

শ্রীমঙ্গল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন জানান “ব্রি-২৮ অনেক পুরনো একটি জাত। এটি রোপণে কৃষকদেরকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছিল। কৃষকদের দুই দফায় ছত্রাকনাশক স্প্রে করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। আর ইউরিয়ার পরিবর্তে ব্যবহার করতে বলা হয় পটাশিয়াম। অনেক কৃষক বিষয়টি আমলে না নিয়ে ছত্রাকনাশক স্পে করেননি। কেউ কেউ দিয়েছে একবার। কিন্তু যারা পরামর্শ পুরোপুরি মেনেছেন, তাদের ফসল নষ্ট হয়নি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মৌলভীবাজার জেলার  উপ পরিচালক মো শামসুদ্দিন আহমদ ঢাকা টাইমসেকে বলেন, বোরোধানে ব্লাস্ট রোগের আক্রমণের সত্যতা নিশ্চিত করে ঢাকা টাইমসকে বলেন চলতিবৎসর ৫৮ হাজার হেক্টর জমিতে বোরোধান লাগানো হয়েছে। বর্তমানে প্রায় ৭০ হেক্টরের মতো জমিতে ব্লাস্ট রোগে আক্রমণ করেছে।

 

(ঢাকাটাইমস/১৩এপ্রিল/এআর)