রাজনীতিবিদ ও নতুন প্রজন্মের বঙ্গবন্ধুর তিনটি বই পড়ার পরামর্শ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৭ এপ্রিল ২০২৩, ১০:৩৩

‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’, ‘কারাগারের রোজনামচা’ ও ‘আমার দেখা নয়াচীন’— বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লেখা এ তিনটি বইয়ের ‘সার্ক সাহিত্য পুরস্কার ২০২৩’ অর্জন বঙ্গবন্ধুর লেখক সত্তার স্বীকৃতি দিয়েছে। বঙ্গবন্ধুর তিনটি বই থেকে রাজনীতিবিদদের অনেক কিছু শেখার আছে। প্রত্যেক রাজনীতিবিদ ও তরুণ প্রজন্মকে এই তিনটি বই পড়ার পরামর্শ দিয়েছেন গুণী ব্যক্তিরা।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে রোববার (১৬ এপ্রিল) সভার আয়োজন করে ‘ফেডারেশন অব সার্ক রাইটার্স অ্যান্ড লিটারেচার বাংলাদেশ চ্যাপটার’। তিনটি আত্মকথন গ্রন্থের জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সার্ক সাহিত্য পুরস্কার প্রদানসংক্রান্ত সভায় এই পরামর্শ দেন তারা।

ফাউন্ডেশন অব সার্ক রাইটার্স অ্যান্ড লিটারেচার (ফসওয়াল) প্রথম মরণোত্তর ব্যক্তি হিসেবে বঙ্গবন্ধুকে বিশেষ এই সাহিত্য পুরস্কার দেয়। এই পুরস্কারপ্রাপ্তি উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভাটি সঞ্চালনা করেন ফসওয়ালের বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের সদস্য সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার। বক্তব্য দেন সংগঠনের বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের আরেক সদস্য লেখক, গবেষক ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক, সাহিত্যিক ও মনঃশিক্ষাবিদ মোহিত কামাল এবং ভোরের কাগজ পত্রিকার সম্পাদক ও প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত।

অলাভজনক সংগঠন ফসওয়াল আত্মপ্রকাশ করে ১৯৮৭ সালে। সংগঠনটি ‘সার্ক লিটারারি অ্যাওয়ার্ড (সার্ক সাহিত্য পুরস্কার)’ নামে পুরস্কার দেওয়া শুরু করে ২০০১ সালে। এর আগে বাংলাদেশ থেকে চারজন সাহিত্যিক এ পুরস্কার পেয়েছেন। ২০০১ সালে কবি শামসুর রাহমান, ২০১২ সালে লেখক ফখরুল আলম, ২০১৫ সালে সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন এবং ২০১৯ সালে প্রয়াত শিক্ষাবিদ, লেখক, অধ্যাপক আনিসুজ্জামান এ পুরস্কার পান। এ ছাড়া এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের উপাচার্য রুবানা হক কবিতার জন্য ২০০৯ সালে ফসওয়ালের ‘সার্ক ইয়াং রাইটার্স অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছিলেন।

করোনার কারণে তিন বছর বিরতির পর এবার আবার এই পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। ফসওয়ালের প্রধান কার্যালয় ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে। গত ২৬ মার্চ নয়াদিল্লিতে পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রামেন্দু মজুমদার, মফিদুল হক ও মোহিত কামাল।

সভায় লেখক, গবেষক, প্রকাশক ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি মফিদুল হক বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে নতুন নতুন মাত্রায় আমরা খুঁজে পাচ্ছি। কিন্তু সাহিত্যিক হিসেবে বঙ্গবন্ধুর মূল্যায়ন অসমাপ্ত রয়ে গেছে। আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বঙ্গবন্ধুকে সাহিত্যিক পরিচিতিটা তুলে ধরা।’

সঞ্চালকের বক্তব্যে সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার বলেন, বঙ্গবন্ধুর সাহিত্য আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে। রাজনীতিবিদ ও নতুন প্রজন্মের এই বইগুলো পড়া উচিত। বঙ্গবন্ধু কখনো ভিন্নমতকে অশ্রদ্ধা করেননি।

সাহিত্যিক মোহিত কামাল বলেন, বঙ্গবন্ধুর তিনটি বইয়ের মধ্যে তাঁর শিল্পীসত্তা, লেখকসত্তা, সৃজনশীলতা ও বিশ্লেষণের ক্ষমতা আবিষ্কৃত হয়েছে। তাঁর আত্মস্মৃতি ফসওয়াল সংগঠনটিকে স্পর্শ করেছে। সংগঠনটি বঙ্গবন্ধুর সাহিত্যিক সত্তাকে আবিষ্কার করেছে। এ পুরস্কারের মাধ্যমে লেখক শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্বদরবারে সম্মানিত হয়েছেন।

ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত বলেন, বঙ্গবন্ধুর তিনটি বইয়ে বাংলাদেশ নিয়ে তাঁর স্বপ্ন, রাজনৈতিক দর্শন ও পরিবারের কথা উঠে এসেছে। বঙ্গবন্ধুকে আবিষ্কারের আরও নানা জায়গা রয়ে গেছে। তাঁর মতো সাহিত্যবোধ, জীবনবোধ ও সংস্কৃতিবোধ এখনকার রাজনীতিকদের মধ্যে অনুপস্থিত।

উল্লেখ্য, গত ২৬, ২৭ ও ২৮ মার্চ ভারতের রাজধানী দিল্লিতে অনুষ্ঠিত ফাউন্ডেশন অব সার্ক রাইটার্স অ্যান্ড লিটারেচার সম্মেলনে তিন খণ্ড (‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’, ‘কারাগারের রোজনামচা’ এবং ‘আমার দেখা নয়াচীন’) আত্মস্মৃতির জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বিশেষ সার্ক সাহিত্য পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। এই প্রথম কোনো প্রয়াত লেখককে সংগঠনের পক্ষ থেকে এমন পুরস্কারে সম্মানিত করা হয়েছে। সম্মেলনে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের পক্ষে রামেন্দু মজুমদার ও মফিদুল হক এই পুরস্কার ও সনদ গ্রহণ করেন এবং দেশে ফেরার পর গত ২ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে পুরস্কার তুলে দেন।

(ঢাকাটাইমস/১৭ এপ্রিল/আরজেড)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :