পুলিশ কনেস্টেবলের বাসা থেকে সৎ মেয়ের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

প্রকাশ | ২৪ এপ্রিল ২০২৩, ১৭:৩৩ | আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০২৩, ১৭:৩৬

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

রাজধানীর তুরাগ এলাকায় পুলিশ কনস্টেবলের বাসা থেকে তার সৎ মেয়ের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তার নাম মুশফিকা নাজনিন মুভি। 

রবিবার বিকালে তুরাগ থানার ডি ব্লকের চার নম্বর সড়কের একটি বাসা থেকে তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন তুরাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) উপমা কুণ্ডু। 

তিনি জানান, রবিবার বিকালে তুরাগ থানার ডি ব্লকের চার নম্বর সড়কের একটি বাসার দোতালার একটি কক্ষ থেকে মুশফিকার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়।

এদিকে কনস্টেবল রবিউল আলমের দাবি, তার সৎ মেয়ে ‘আত্মহত্যা’ করেছেন। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশের কনস্টেবল রবিউল আলমে বর্তমানে উত্তরা আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়নে (এপিবিএন) কর্মরত রয়েছেন। আর তার সৎ মেয়ে মুশফিকা নাজনিন মুভি তুরাগ এলাকার স্থানীয় একটি কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। তার নিজের বাবা মোবিন মোল্লা ছিলেন সৌদি প্রবাসী, তার বাড়ি যশোরে। 

প্রায় এক যুগ আগে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান মুভির বাবা। বছর তিনেক আগে কনস্টেবল রবিউল আলমকে বিয়ে করেন মুশফিকার মা শ্যামলী আক্তার। এই সংসারে শ্যামলী আক্তারের এক বছরের একটি ছেলে আছে। দুই ছেলে মেয়েকে নিয়েই শ্যামলী তার দ্বিতীয় স্বামী সংসারে থাকেন।

তুরাগ থানা পুলিশের একটি সূত্র বলছে, ছোট ভাইয়ের সঙ্গে মোবাইলের সিম খোলা নিয়ে ঝগড়া হয় মুশফিকার। এ থেকেই সে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে তার সৎ বাবা দাবি করেছেন। মুশফিকার ছোট ভাই জানালা দিয়ে বোনকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখে চিৎকার করলে বাসার সবাই আসে, এরপরে তারা পুলিশকে খবর দেয়।

মুশফিকার মৃত্যুর খবর পেয়ে চাচা রুহুল আমিন, চাচাত ভাই মনিরসহ কয়েকজন আত্মীয় যশোর থেকে ঢাকায় আসেন।

রুহুল আমিনের দাবি, ও আত্মহত্যা করার মত মেয়ে নয়। যদি আত্মহত্যাই করে থাকে, তাহলে এর পেছনে বড় ধরনের কোনো কারণ রয়েছে। মুশফিকা বেশ সুন্দরী হওয়ায় এক্ষেত্রে তার সৎ বাবাকে সন্দেহের বাইরে রাখছি না। এ ঘটনার পেছনে সৎ বাবার কোনও ভূমিকা আছে কিনা সেটা তদন্ত করে দেখা জরুরি। 

লাশের সুরতহাল প্রতিবেদনে বাবার নামের জায়গায় সৎ বাবা রবিউলের নাম থাকায় ‘বিস্ময়’ প্রকাশ করে রুহুল আমিন বলেন, মুশফিকার মৃত্যুর পেছনে সৎ বাবার কোনো হাত থাকতে পারে।

এ বিষয়ে এসআই উপমা কুণ্ডু বলেন, মুশফিকার স্কুল কলেজে বাবার নাম রবিউল আছে, মোবিন মোল্লা নেই। তা ছাড়া পরিবারের সদস্যরা যা বলেছে, তাই লেখা হয়েছে। রবিউল আলম যে মেয়েটির সৎ বাবা, সেটা তারা পরে জানতে পেরেছেন। মেয়েটি আত্মহত্যাই করেছে কি না, তা ময়না তদন্তের পর জানা যাবে।

এদিকে স্কুল-কলেজসহ সব জায়গায় মুশফিকার বাবার নাম পরিবর্তনের পেছনে কোনো ‘রহস্য’ আছে মন্তব্য বরে চাচা রহুল আমিন বলেন, তারা চাইছিলেন যশোরে বাবার কবরের পাশে মেয়ের দাফন হোক। কিন্তু মুশফিকার মা তাতে রাজি নন। 

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তুরাগ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শরিফুল ইসলাম ঢাকাটাইমসকে বলেন, এ ঘটনায় তুরাগ থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।   মুশফিকার মৃত্যু বা বাবার পরিচয় নিয়ে তার চাচা থানায় এসে অভিযোগ করলে পুলিশ তদন্ত করবে।

(ঢাকাটাইমস/২৪এপ্রিল/এএ/এসএম)