রিজভী ‘ছোট কারাগারে’ যেতে চাইলে সরকার ব্যবস্থা নিতে পারে: তথ্যমন্ত্রী

প্রকাশ | ২৬ এপ্রিল ২০২৩, ১৭:৪৫

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

প্রায় চার মাস পর গতকাল মঙ্গলবার জামিনে মুক্তি পেয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। মুক্তি পাওয়ার পর তিনি মন্তব্য করেছেন‘ছোট কারাগার থেকে বড় কারাগারে এসেছি।’

রিজভীর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া বুধবার বক্তব্য দিয়েছেন  আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

 

সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে মতবিনিময়কালে মন্ত্রী বলেন, ‘রিজভী সাহেব যদি মনে করেন উনি ছোট কারাগার থেকে বড় কারাগারে এসেছেন এবং উনি যদি আবার ছোট কারাগারে যেতে চান তাহলে সরকার সে ব্যবস্থা নিতে পারে।’

 

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী সাহেব কারাগার থেকে বের হয়েই যে বক্তব্য রেখেছেন, তার মাধ্যমেই এটি আবারও প্রমাণিত হয় যে দেশে বাকস্বাধীনতা নিশ্চিত আছে।’

 

ড. হাছান বলেন, ‘বাংলাদেশে যেভাবে বিরোধী দল সকাল-বিকাল-সন্ধ্যা এমন কি মাঝেমধ্যে রাতের বেলাতেও সরকারের প্রতি বিষোদগার করছে এবং যেভাবে তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করছে সেটির নজীর পার্শ্ববর্তী দেশেও আছে কি না তাকিয়ে দেখুন। বিএনপিকে বা এ নিয়ে যারা কথা বলেন, সমালোচনা করেন, খবরাখবর রাখেন তাদেরকে আমি বেশি দূরে যেতে বলবো না, শুধু অনুরোধ জানাবো পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের দিকে তাকানোর জন্য।’

‘একটি বক্তব্যের কারণে রাহুল গান্ধীর দুই বছর জেল হয়েছে, সংসদ সদস্যপদ বাতিল হয়েছে। রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে যিনি মামলা করেছেন তিনি বিজেপির একজন সদস্য, এমপি ছিলেন। আমাদের দেশে বিরোধী দলের নেতারা যেভাবে বক্তব্য রাখে এবং প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে আমাদের দলের ব্যক্তিবর্গের বিরুদ্ধে এমন কি আমার বিরুদ্ধে, আমাদের বিরুদ্ধে যেভাবে বক্তব্য রাখা হয় সে জন্য কি আমরা আদালতে গেছি? এখান থেকেই তো বোঝা যায় যে এখানে গণতান্ত্রিক চর্চা এবং বাকস্বাধীনতা কতো বেশি আছে। অর্থাৎ আমাদের এখানে গণতান্ত্রিক চর্চা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সেটি অনেক দেশের চেয়ে অনেক ভালো, উন্নত। এমন কি পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের চেয়েও অনেক ক্ষেত্রে আমাদের এখানে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বেশি।’  বলেন হাছান মাহমুদ।

এর আগে সম্মিলিত চলচ্চিত্র পরিষদ নেতৃবৃন্দ তথ্যমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করেন। পরিষদের আহ্বায়ক খোরশেদ আলম খসরু, শিল্পী সমিতির সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন, পরিচালক সমিতির সভাপতি কাজী হায়াৎ, চিত্রগ্রাহক সমিতির সভাপতি আব্দুল লতিফ বাচ্চু, প্রদর্শক সমিতির উপদেষ্টা সুদীপ্ত কুমার দাস, এডিটরস গিল্ডের সভাপতি আবু মুসা দেবু তাদের বক্তব্যে সিনেমা হল নির্মাণ ও সংস্কারের জন্য এক হাজার কোটি টাকার সহজ ঋণ তহবিল গঠনের সফল উদ্যোগ, সম্মিলিত চলচ্চিত্র পরিষদের অনুরোধে হিন্দি সিনেমা আমদানির অনুমতি প্রদানসহ চলচ্চিত্র শিল্পকে এগিয়ে নিতে আন্তরিক ও কার্যকর ভূমিকার জন্য তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদকে ধন্যবাদ এবং ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি কাজী হায়াৎ এ সময় সমিতির পক্ষে ১০ দফা প্রস্তাবনা মন্ত্রীকে হস্তান্তর করেন।

 

তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে চলচ্চিত্র শিল্প ইতিমধ্যেই ঘুরে দাঁড়িয়েছে। গত বছর ৭০টির বেশি ছবি মুক্তি পেয়েছে যা গড়ে প্রতি সপ্তাহে একটির বেশি। ঈদ উপলক্ষে সম্ভবত ৮টি ছবি মুক্তি পেয়েছে। একটি ছবি ১শ’ সিনেমা হলে একযোগে মুক্তি পেয়েছে। অর্থাৎ চলচ্চিত্র শিল্প ঘুরে দাঁড়িয়েছে।

 

ড. হাছান বলেন, হিন্দি সিনেমা আমদানির বিষয়ে প্রদর্শক সমিতি বহুদিন ধরে বলে আসলেও চলচ্চিত্র অঙ্গণের সব সমিতি বিশেষ করে শিল্পী সমিতি একমত না হলে আমি পদক্ষেপ নিতে রাজি হয়নি। অবশেষে আপনারা শিল্পী সমিতিকে আপনাদের সাথে সংযুক্ত করতে পেরেছেন, এ জন্য অভিনন্দন। বছরে ১০টি ভারতীয় সিনেমা এ দেশে আমদানি হলে আমাদের সিনেমার কোনো ক্ষতি হবে বলে আমি মনে করি না। বরং মানুষ হলমুখী হবে, অনেক হল খুলবে। তখন আমাদের ছবির জন্য আরো বড় জায়গা তৈরি হবে।

সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, করোনা মহামারি না হলে প্রধানমন্ত্রী ১ হাজার কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠন করে দেওয়ার সুবাদে ইতিমধ্যে আরো অনেক সিনেমা হল চালু হতো। তবে সিনেপ্লেক্স বাড়ছে। নতুন নতুন সিনেপ্লেক্স হচ্ছে। স্টার সিনেপ্লেক্স দেশে ৫০টি সিনেপ্লেক্স করার পরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছে। এবং আমি মনে করি আমাদের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে দেশের চলচ্চিত্র শিল্প আরো উপকৃত হবে।

 

মন্ত্রী পরিচালক সমিতির প্রস্তাবগুলো যাচাই করে দেখার আশ্বাস দেন এবং জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্তদেরকে বিমান বন্দরে অগ্রাধিকারসহ ক্ষেত্র বিশেষে প্রাধিকার দেওয়ার বিষয়ে একমত পোষণ করেন। সম্মিলিত চলচ্চিত্র পরিষদ সদস্য ছটকু আহমেদ, শাহ আলম কিরণ, সেলিম আজম, নূর মোহাম্মদ মনি, আব্দুর রহিম বাবু, ওয়াজেদ আলী লিটন, শাহাদাৎ হোসেন লিটন, ইফতেখার জাহান, বজলুর রাশেদ চৌধুরী, নিপুণ আকতার, মোহম্মদ হোসেন, কামাল মোহম্মদ কিবরিয়া লিপু, এস. ডি রুবেল, কাজী শোয়েব রশীদ, ইউনুস রুবেল, শারফুদ্দিন এলাহী সম্রাট প্রমুখ বৈঠকে অংশ নেন।

(ঢাকাটাইমস/২৬এপ্রিল/জেএ/কেএম)