জামালপুরে ধানে ব্লাস্ট রোগের আক্রমণ, দিশেহারা কৃষক

প্রকাশ | ০১ মে ২০২৩, ১৫:০৯

জামালপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

কৃষক মুস্তফা ধান কেটে ঘরে তোলার আগেই তার মাথায় হাত পড়েছে। চোখে মুখে বিষন্নতা কি খাবেন আর কিভাবে ঋণ পরিশোধ করবেন। তাই প্রতিদিন ক্ষেতে বসেই চিন্তায় দিন কাটছে তার। শুধু মুস্তফা না তার মতো অনেকের দিন কাটছে দুশ্চিন্তায়।

কৃষকরা বলছেন, ঋণদেনা করে উচ্চমূল্যে সার কিটনাশক ব্যবহার করে চলতি বছর বোরো ২৮ জাতের ধান লাগিয়েছেন। সেই ধান ঘরে তোলার আগের তারা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। ধানের শীর্ষে শুধু চিটা আর চিটা। ব্লাস্ট রোগে পুরো ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। আর কৃষি অফিসের দাবি কৃষকদের বোরো ২৮ জাত চাষ না করতে বলা হয়েছে।

জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ধান কেটে ঘরে নেওয়ার আগে ব্লাস্ট রোগ দেখা দেওয়ায় স্থানীয় কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। 

উপজেলার ঘোষেরপাড়া ইউনিয়নের পূর্ব ছবিলাপুর গ্রামে কৃষক মুস্তফা সাড়ে তিন একর জমিতে বোরো ২৮ জাতের ধান রোপন করেছেন। প্রতি বিঘায় ১৫ থেকে ১৬ হাজার টাকা খরচ করে ধান ঘরে তোলার আগে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। পুরো ক্ষেতের ধানের শীর্ষে চিটা। তার মতো অনেক কৃষকের মাথায় হাত পড়েছে।

কৃষক শুকুর আলী বলেন, সার ও কিটনাশকের দাম বেশি ঋণ নিয়ে আবাদ করেছি। আবাদ তুলে ঋণ পরিশোধ করে সারা বছরে খাবার ঘরে থাকে এই বোরো আবাদ করে। এখন চোখে মুখে অন্ধকার দেখছি। 

কৃষক রিপন মিয়া বলেন, আমার আড়াই একর জমি ধান রোপন করতে প্রায় ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। চরা সুদে ঋণ নিয়ে বোরো ২৮ জাত রোপন করেছি। ৬শ টাকায় দিনমজুর দিয়ে উচ্চমূল্যে সার কিটনাশক ব্যবহার করে এখন ক্ষেত চিটায় পরিণত হয়েছে। 

জামালপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক মো. ইমরুল কায়েস ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা সরেজমিনে ঘুরে বলেছেন, ১৯৯৪ সালে ধান গবেষণা কর্তৃক বি ধান ২৮ অবমুক্ত হয়। দীর্ঘ ২৯ বছর এই জাতটি কৃষকের চাহিদা পূরণ করে এসেছে। দীর্ঘদিন চাষাবাদের কারণে এখন ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়েছে। এ কারণে কৃষকদের নতুন জাত বি ৮৮, বি ৮৯ এবং ৯২ জাত আবাদের পরার্মশ দেয়া হচ্ছে। 

কৃষি অফিস জানিয়েছেন এ বছর মেলান্দহ উপজেলায় ২২ হাজার ২শ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ করা হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/০১মে/এসএ)