মুক্তিপণের টাকা না পেয়ে শিশুকে হত্যার অভিযোগ প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে

প্রকাশ | ০৪ মে ২০২৩, ২৩:৩২

চট্টগ্রাম ব্যুরো, ঢাকাটাইমস

মুক্তিপণের ৫০ হাজার টাকা না পাওয়ায় মো. শফিউল ইসলাম রহিম (১১) নামে এক শিশুকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে তারই এক প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার গ্রেপ্তারদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।

 

গত বুধবার (৩ মে) মধ্যরাতে চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও থানার পশ্চিম মোহরা গোলাপের দোকান এলাকার নির্মাণাধীন তৌসিফের সেমিপাকা কলোনির একটি রুম থেকে বালি ও ইট দিয়ে চাপা অবস্থায় নিখোঁজ শিশু রহিমের লাশ উদ্ধার হয়। এর পরপরই এ ঘটনার প্রকৃত ঘটনা উন্মোচন হয়।  

 

পুলিশ জানিয়েছে, পটকা কিনে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে রহিমকে রাস্তা থেকে নিয়ে যায় প্রতিবেশী আজম। এরপর রহিমকে নির্মাণাধীন একটি ভবনে নিয়ে জিম্মি করে বন্ধু হৃদয়কে দিয়ে শিশুটির বাবাকে ফোন করে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না পেয়ে পরে হত্যা করা হয় শিশুটিকে।

 

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- চান্দগাঁও থানার কাপ্তাই সড়কের চাঁন মিয়া ফকিরের বাড়ির মৃত আবুল কালামের ছেলে মো. আজম খান (৩২) ও পাঁচলাইশ থানার বিবিরহাট এলাকার মো. ইউসুফের ছেলে মুজিবুর দৌলা হৃদয় (২৮)। গ্রেপ্তার দুজনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে শিশুটির লাশ নির্মাণাধীন ভবনের একটি রুম থেকে বালি ও ইট দিয়ে চাপা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।

 

রহিম চান্দগাঁও এলাকার মো. সেলিম উদ্দিনের ছেলে। প্রতিবেশী আজম খান মুক্তিপণের টাকা না পেয়ে শিশুটিকে হত্যা করেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার দুজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

 

চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খাইরুল ইসলাম বলেন, মুক্তিপণের টাকা না পাওয়ায় শিশুটিকে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে আমাদের মনে হচ্ছে। ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ না পেয়ে নিখোঁজের দিনই শিশু রহিমকে হত্যা করা হয়। এক পর্যায়ে শিশু রহিমকে হত্যা করে মরদেহ গুম করে ফেলে তারা। এ ঘটনার প্রধান হোতা আজম খান। সে এক মাস আগে থেকেই শিশুটিকে অপহরণের পরিকল্পনা করেছে বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে। গ্রেফতার দুজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সেই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাঁদেরকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

 

শুধু কি মুক্তিপণের টাকার জন্য শিশুটিকে হত্যা করা হয়েছে; নাকি অন্য ঘটনা এর পেছনে জড়িত তা উদঘাটনে যাবতীয় বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান ওসি।

 

পুলিশ জানায়, চান্দগাঁও থানার পশ্চিম মোহরা চাঁন মিয়া ফকিরের বাড়ি এলাকা থেকে গত ২৯ এপ্রিল মো. শফিউল ইসলাম রহিম নিখোঁজ হয়। সে স্থানীয় পশ্চিম মোহরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র।

 

নিখোঁজের পর ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা। পরে এ ঘটনায় ভিকটিমের বাবা সেলিম উদ্দিন চান্দগাঁও থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন। ডায়েরির সূত্র ধরে পুলিশ ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে প্রথমে অভিযুক্ত আজমকে শনাক্ত করে।

(ঢাকাটাইমস/০৪মে/কেএম)