শূন্য হাতে ফিরছেন জেলেরা, মিলছে না ইলিশ
প্রকাশ | ০৫ মে ২০২৩, ১০:৫৫ | আপডেট: ০৫ মে ২০২৩, ১১:১২
বঙ্গোপসাগরে ইলিশ শিকারে গিয়ে গত দুমাস ধরে শূন্য হাতে ফিরছেন জেলেরা। মিলছে না কাঙ্ক্ষিত ইলিশ। এতে পটুয়াখালীর মৎস্য বন্দর আলিপুর-মহিপিরের জেলে পল্লীগুলোতে নেই সরগরম।
এমন পরিস্থিতিতে জেলে পরিবারগুলোতে চলছে টানাপোড়েন, এছাড়া এ খাত সংশ্লিষ্ট হাজারো মানুষের জীবন সংগ্রামে চলছে হাহাকার। ঋণের বোঝায় উপজেলার অত্যন্ত ৩০ হাজার জেলে পরিবার বিপাকে রয়েছেন।
সরেজমিনে মৎস্য পল্লী ঘুরে দেখা গেছে, মৎস্য আড়তগুলোতে কারো কর্মব্যস্থতা নেই। দিনমজুরসহ সংশ্লিষ্ট শ্রমিকরা বেকার বসে আছেন। পাইকারি ব্যবসায়ীরা দুশ্চিন্তার মধ্যে সময় পার করছেন। জেলেরা পুরানো জালের ছেড়া-ফাটা বুনছেন। আড়তের মালিকরা ব্যবসার লাভ ক্ষতি হিসাব কষছেন। কর্মব্যস্ত মৎস্য বন্দর এখন নীরব।
খাপড়াভাঙ্গা নদীর তীরে কয়েকজন জেলেদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, প্রচণ্ড-গরমে সাগরে মাছ নেই। বৃষ্টি না হলে সাগরে গিয়ে লাভ নেই। গত দুমাসে ৫ বার সাগরে গিয়ে শূন্য হাতে ফিরে এসেছেন তারা। লাভতো হয়নি বরং প্রতিবারই সাগরে যাওয়ার খরচের টাকা লোকসান হয়েছে। তাই এখন সাগরে না গিয়ে পুরানো জাল বুনছেন।
মৎস্য শ্রমিক জলিল প্যাদা বলেন, গত দুই মাস ধরে মাছ খুবই কম। ট্রলার ঘাটে আসলে কিছু সময় কাজ থাকে। দিনের বেশিরভাগ সময় অলস থাকতে হয়। আয় কম, সংসার চালাতে কষ্ট হচ্ছে।
ধুলাসার ফিসের মালিক আবু জাফর হাওলাদার বলেন, সমুদ্রে মাছ কম। বাজার সওদা করে ট্রলার সাগরে পাঠাই, ফিশিং শেষে শূন্য হাতে ফিরে আসে। গত মাসে আমার সাড়ে ৮ লাখ টাকা লোকশান হয়েছে।
আলীপুরের মৎস্য ব্যবসায়ী মনি ফিসের মালিক আব্দুল জলিল ঘরামী বলেন, আমার আড়তে গত কয়েক বছর দৈনিক যে মাছ উঠছে তা পুরো মৌসুমে আসে নাই। ব্যবসার অবস্থা ভালো না। অন্য ব্যবসার চিন্তা করছি।
তিনি বলেন, যে হারে বৈধ-অবৈধ টলিং সমুদ্রে মাছ শিকার করছে তাতে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে মাছই থাকবে না। টলিং জালে সমস্ত মাছের পোনা মারা যাচ্ছে। আমাদের সমুদ্রের মৎস্য সম্পদ রক্ষা করতে হলে অবৈধ ট্রলিং জাল বন্ধ করতে হবে।
আরও পড়ুন: চলন্ত ট্রেনে সেলফি তুলতে গিয়ে প্রাণ গেল যুবকের
কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা ঢাকাটাইমসকে বলেন, ইলিশ মাছ হচ্ছে গভীর সমুদ্রের মাছ। জলবায়ু পরিবর্তন, প্রচণ্ড গরম, অনাবৃষ্টির কারণে মাছ কম পানিতে আসছে না। তাই কুয়াকাটার উপকূলে কম ইলিশ ধরা পরছে। আশা করছি আবহাওয়া পরিবর্তন হলে পর্যাপ্ত ইলিশ ধরা পরবে।
তিনি বলেন, কুয়াকাটা সংলগ্ন সমুদ্রে দীর্ঘ ডুবোচর থাকায় রামনাবাদ, আগুনমুখা, আন্ধারমানিক ও বলেশ্বর মোহনায় ইলিশের আনাগোনা কমে গেছে।
(ঢাকাটাইমস/৫মে/এসএম)