ত্রিশালে কৃষ্ণচূড়ার রঙে সেজেছে সড়ক

প্রকাশ | ১০ মে ২০২৩, ১১:৪২ | আপডেট: ১১ মে ২০২৩, ১৩:৫১

ত্রিশাল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

এবারের গ্রীষ্মের শুরুর আবহটা একটু ব্যতিক্রম। চিরায়িত নিয়ম ভেঙে দেশের কোথাও কোথাও তাপমাত্রা উঠেছে স্মরণকালের সর্বোচ্চ পর্যায়ে। আবার এ অবস্থায়ই ভোরের আকাশে দেখা মিলছে ঘন কুয়াশা। এ ব্যতিক্রমী বিরূপ আবহাওয়ায় যখন মানুষের নাভিশ্বাস উঠছে, সে মুহূর্তে নির্মল বায়ুতে নিঃশ্বাস নিতে ও আনন্দ বিনোদন পেতে হাতের কাছেই কৃষ্ণচূড়ার ছায়াতল যেন স্বপ্নের মতো হয়ে উঠেছে ভ্রমণ পিপাসুদের। এমন দৃশ্যই যেন চোখে পড়লো ময়মনসিংহের ত্রিশালে।

উপজেলার পৌর শহরের কোর্ট ভবন এলাকার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশের একটি কৃষ্ণচূড়া শোভিত গাছের নিচে কয়েকজন যুবক কৃষ্ণচূড়ার সুশীতল ছায়াতলের মুহূর্তটিকে স্মরণীয় করে রাখতে তুলছেন ছবি। একে অপরের ছবি তুলতে ব্যস্ত তারা। কেউ কেউ আবার নিজেই নিজের সেলফি তুলছেন। পাশেই কৃষ্ণচূড়ার সুশীতল ছায়াতলে ক্লান্ত, পরিশ্রান্ত হৃদয়কে একটু প্রশান্তি দিতে বিশ্রাম নিচ্ছেন এক ভ্যানগাড়ি চালক।

এ মুহুর্তে গাছে গাছে ফুটেছে ফুল। চারপাশটা যেন ফুলে ফুলে ভরে গেছে। তবে সব ফুল যে কৃষ্ণচূড়ার মতো নজর কাড়তে পারছে তা কিন্তু নয়।

ছবি তুলতে আসা সুমন, কাজল, আবিরসহ আরও কয়েকজনের সঙ্গে কথা হলে তারা জানায়, মহাসড়কের পাশের এই কৃষ্ণচূড়া গাছটির সৌন্দর্য তাদের দৃষ্টি কেড়েছে। তাই এই সৌন্দর্য উপভোগের মুহূর্তটিকে স্মরণীয় করে রাখতে তুলছেন ছবি।

ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ত্রিশাল অংশের ১৬ কিলোমিটারে এ রকম সুশোভিত কৃষ্ণচূড়ার সুশীতল ছায়াতল আরও দেখতে পাওয়া যায়।

সবুজ চিকন পাতার ফাঁকে ফাঁকে লাল লাল কৃষ্ণচূড়া ফুল, দেখলেই চোখ জুড়িয়ে যায়। কৃষ্ণচূড়ার লাল ফুল এবং উজ্জ্বল সবুজ পাতা এক অন্যরকম দৃষ্টিনন্দন শোভা পাচ্ছে।

কৃষ্ণচূড়ার সুবাস ও সৌন্দর্যে মুখরিত দর্শনার্থীদের নতুন আকর্ষণ এখন এই কৃষ্ণচূড়ার তল। এখানে এসে সবাই স্মৃতি ধরে রাখতে সেলফি তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।

জানা যায়, ২০১৬ সালে ত্রিশালের তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবু জাফর রিপন 'সবুজ ত্রিশাল' গড়ার লক্ষ্যে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের দুই পাশে কৃষ্ণচূড়া গাছের চারাগুলো রোপণ করেছিলেন। বর্তমানে রোপণকৃত ওই চারাগুলোই অপরূপ সাজে সেজেছে। যা সহজেই নজর কাড়ছে পথচারীদের।

কবিতা, সাহিত্য, গান ও বিভিন্ন উপমায় কৃষ্ণচূড়া ফুলের কথা নানা ভঙ্গিমায় এসেছে। শোভা বর্ধনকারী এ বৃক্ষটি দেশের গ্রাম-বাংলার পাশাপাশি এখনও তার নড়বড়ে অস্তিত্ব নিয়ে কোনোক্রমে টিকে আছে শহরের পথে-প্রান্তরে। বিদেশ থেকে আমদানিকৃত এই ফুল যেন এখন বাঙালির ঐতিহ্যেরই একটা অংশ হয়ে গিয়েছে সবার অজান্তেই। এর সবচেয়ে বড় খ্যাতি হচ্ছে মোহনীয় রক্তিম আভা। সবুজের বুকচিরে বের হয়ে আসা লাল ফুল এতোটাই মোহনীয় যে, পথচারীরাও থমকে দাঁড়াতে বাধ্য হন।

এ বিষয়ে ত্রিশাল উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা ফজলে রাব্বি বলেন, 'লাল টকটকে মোহনীয় ফুলগুলোর সৌন্দর্য দেখতে মানুষ ভিড় জমাচ্ছ। স্মৃতি হিসেবে ধরে রাখতে তারা ছবিও তুলছেন। বিষয়টি খুবই উপভোগ্য। কয়েক লক্ষাধিক বিভিন্ন প্রজাতির গাছের চারা ও কৃষ্ণচূড়া গাছের ওই চার গুলো রোপন করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন তখনকার ত্রিশালের ইউএনও মো. আবু জাফর রিপন মহোদয়। এ অনন্য উদ্যোগ সফল বাস্তবায়নের জন্য তিনি পরিচিতি পেয়েছিলেন 'সবুজ ত্রিশালের রূপকার হিসেবে। এছাড়াও নানাবিধ সৃষ্টিশীল কর্মের জন্য তিনি আমাদের মাঝে স্মরণীয় ও বরণীয় হয়ে আছেন। তিনি বর্তমানে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে উপসচিব পদে কর্মরত আছেন।'

(ঢাকাটাইমস/১০মে/এসএ)