বৌয়ের ইচ্ছে পূরণ!

প্রকাশ | ১৩ মে ২০২৩, ১২:১৯ | আপডেট: ১৩ মে ২০২৩, ১২:৩৪

এম এম মাহবুব হাসান

মেয়েবেলা থেকে বাড়ীর পাশের রাস্তায় বহু মানুষকে সাইকেল চালিয়ে যেতে দেখেছে বৌ। এই দুই চাকাওয়ালা সাইকেলগুলো মানুষ উঁচু-নিচু পথে কিভাবে চালিয়ে নিয়ে যায় আর এতে চড়তেই বা কেমন লাগে? এতোদিন এই কৌতুহল সে অন্তরে পুষে রেখেছিলো। বিয়ের একযুগ পার হলেও সময় ও সুযোগের অভাবে তার এই জমানো ইচ্ছে জানান দিতে পারেনি। অতঃপর কোনো অবকাশে একটি মনোমুগ্ধকর পরিবেশে শখের বসে সাইকেল চড়া দেখে মেয়েবেলায় দেখা জীবনের তাগিদে ছুটে চলা সেই সাইকেলগুলোর কথা মনে পড়ে গেলো।

খুব কাছে এসে ফিসফিস করে বললো - ‘সোনা আমার না সাইকেলে চড়ার অনেক ইচ্ছে..তুমি কি আমাকে নিয়ে একটু সাইকেল চালাতে পারবা?’ একেতো কোমরের ব্যাথাটা বাড়ছে, অন্যদিকে অনেকদিন হলো সাইকেল চালাই না, আরেকদিকে বৌয়ের ইচ্ছে। এই ত্রিকোণমিতির একটি সফল পরিণতিরও দরকার। যে কোন পরিস্থিতিতে পুরুষের জেগে ওঠার অদম্য সাহস তার আদি আদি পুরুষের ইতিহাস, অর্থাৎ স্রষ্টা আদি পিতা হযরত আদম (আঃ) কে প্রথম সৃষ্টি করেছিলেন। এই বিশ্বাস ও আস্থা পুরুষশাসিত সমাজ ব্যবস্থা কায়েম হওয়ার পেছনের কোন বড় কারণ হতে পারে।

তবে আমি ভাবছি অন্য অ্যাংগেলে , যে আদি পিতা হযরত আদম (আঃ) কে সৃষ্টির পর স্রষ্টা আদি মাতা হযরত হাওয়া (আঃ) কে তার সঙ্গীনী হিসেবে পাঠিয়ে মানবকুলে নারী ও পুরুষ উভয়ের নির্ভরশীলতা, গুরুত্ব, সন্মান ও মর্যাদাকে সমুন্নত করেছেন। সুতরাং সঙ্গীনীর ইচ্ছের গুরুত্বকে পাশ কাটানোর কোনো সুযোগ নেই।

যাইহোক, নিজের কোমরে টোকা দিয়ে আর বুকে হাত দিয়ে বেশ ভালোই সাড়া পেলাম। বিসমিল্লাহ বলে সাইকেলটাকে নিয়ে একটু ওয়ার্ম-আপ করে নিয়ে বুঝলাম অস্ত্র জমা দেওয়া হলেও ট্রেইনিং এখনো আমার সঙ্গেই রয়েছে। তো এখন আর কিসের দেরী!

বৌকে ডেকে নিয়ে স্ব-সম্মানে সাইকেলে বসালাম। এরপর ইচ্ছেমতো ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে যখন টায়ার্ড হয়ে গেলাম ঠিক তখনই গতি আরো বাড়িয়ে দিলাম। এক পর্যায়ে বৌয়ের ভীষণ অনুরোধে গতি থামাতে বাধ্য হলাম। বৌ নেমে গিয়ে বললো - মাফ চাই, আমার সাইকেলে চড়ার শখ মিটে গেছে, আর কোনোদিনও সাইকেলে উঠবো না। ঘর্মাক্ত ও ক্লান্ত শরীরে হাফাতে হাফাতে ভাবলাম, শেষ বাক্যটা আরেকবার শুনলেও খারাপ লাগতো না প্রিয়তমা!

 

লেখক: ব্যাংক কর্মকর্তা