ড. তাহের হত্যা: জাহাঙ্গীরকে ফাঁসি থেকে বাঁচাতে প্রধান বিচারপতির কাছে ভাইয়ের চিঠি

প্রকাশ | ২৩ মে ২০২৩, ১২:৫৫ | আপডেট: ২৩ মে ২০২৩, ১৪:১৬

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
অধ্যাপক ড. এস তাহের

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. এস তাহের হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মো. জাহাঙ্গীর আলমকে মৃত্যুদণ্ড থেকে বাঁচাতে প্রধান বিচারপতির কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন তার ভাই, যদিও বাংলাদেশে এ ধরনের কোনো আইনি সুযোগ নেই।

মঙ্গলবার বিষয়টি গণমাধ্যমকর্মীদের জানান তার ভাই হাফেজ মো. সোহরাব হোসেন।

সোমবার জাহাঙ্গীরের ভাই হাফেজ মো. সোহরাব হোসেন রেজিস্ট্রি ডাকযোগে প্রধান বিচারপতির কাছে এ আবেদন করেন। রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপারকে আবেদনের অনুলিপি পাঠানো হয়েছে। আবেদন নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ফাঁসি কার্যকর স্থগিত রাখতে অনুরোধ করা হয়েছে।

আবেদনে বলা হয়েছে, ‘আমি মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির ভাই হিসেবে এবং অল্পশিক্ষিত একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে আমার ভাই জাহাঙ্গীর আলমকে সংবিধানের ৩৩(২) অনুচ্ছেদ এবং ফৌজদারি কার্যবিধির ৬১ ধারা লঙ্ঘন করে আটক রেখে অবৈধভাবে স্বীকারোক্তি আদায়ের মাধ্যমে তার প্রতি অবিচার কিংবা সংবিধানে বর্ণিত মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন হয়েছে কিনা সেটি খতিয়ে দেখার জন্য এবং আমার ভাইকে মৃত্যুদণ্ড থেকে রক্ষার জন্য আপনার কাছে একটি মানবিক আবেদন জানাচ্ছি।’

আবেদনে জাহাঙ্গীরের ভাই বলেন, ‘আমার জানামতে আমাদের নিয়োজিত আইনজীবীরা নিম্ন আদালত থেকে শুরু করে সুপ্রিম কোর্টের (হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগ) কোথাও সংবিধানের ৩৩ (২) নং অনুচ্ছেদে বর্ণিত মৌলিক অধিকারের প্রশ্নটি যথাযথভাবে উত্থাপন করতে সক্ষম হননি। এজন্য ন্যায়বিচারের স্বার্থে এবং বিচার বিভাগের সর্বোচ্চ অভিভাবক হিসেবে আপনি আমার অসহায় ভাইয়ের মৃত্যুদণ্ডের বিষয়টি পর্যালোচনাপূর্বক পুনঃবিবেচনা করতে আপনার কাছে সবিনয় নিবেদন করছি এবং আমার এই আবেদন নিষ্পত্তি হওয়া পর্যন্ত আমার ভাই জাহাঙ্গীর আলমের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর স্থগিত রাখতে যথাবিহিত আদেশ প্রদান করতে আপনার প্রতি কাতর মিনতি জানাচ্ছি।’

চলতি বছরের ৩ মে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. এস তাহের হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ও নিহত ড. তাহেরের বাসার কেয়ারটেকার মো. জাহাঙ্গীর আলমের রিভিউ আবেদন খারিজের রায় প্রকাশ করেন আপিল বিভাগ। এর ফলে এই দুই আসামির ফাঁসি কার্যকরে আইনগত কোনো বাধা নেই। তারা শুধুমাত্র রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার সুযোগ পাবেন।

গত বছরের ৫ এপ্রিল অধ্যাপক ড. এস তাহের হত্যা মামলায় একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে ড. তাহেরের বাসার কেয়ারটেকার মো. জাহাঙ্গীর আলমের মৃত্যুদণ্ড এবং অন্য দুই আসামির যাবজ্জীবন দণ্ডও বহাল রাখেন আদালত। যাবজ্জীবন সাজা বহাল থাকা দুজন হলেন নাজমুল আলম ও আব্দুস সালাম।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ মেহেদী হাছান চৌধুরী ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘এ ধরনের আবেদনের আইনগত কোনো ভিত্তি নেই। এই মামলায় আসামিদের করা রিভিউ খারিজ হয়ে গেছে। ফলে তাদের এখন রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাওয়া ছাড়া আর কোনো আইনি সুযোগ নেই।’

(ঢাকাটাইমস/২৩মে/এএ/এফএ)