ক্রমেই ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব, সতর্ক থাকার পরামর্শ

প্রকাশ | ২৭ মে ২০২৩, ১৯:৪৩

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস

বর্ষা মৌসুম শুরু না হলেও দেশে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব ক্রমেই ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে। রাজধানীসহ সারাদেশে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও ৮০ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ৭৩ জন ও ঢাকার বাইরের সাতজন। তবে এ সময়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যুর তথ্য পাওয়া যায়নি।

শনিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের ইনচার্জ ডা. মো. জাহিদুল ইসলামের সই করা ডেঙ্গু বিষয়ক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন ৮০ জন। এ নিয়ে দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গুরোগী সংখ্যা দাঁড়ালো ২০২ জনে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২৭ মে পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এক হাজার ৭০৪ জন। তাদের মধ্যে রাজধানীর সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এক হাজার ১১৯ জন। এছাড়া ঢাকার বাইরের হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৫৮৫ জন। আর হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন এক হাজার ৪৮৯ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ৯৩৩ জন এবং ঢাকার বাইরের ৫৫৬ জন। চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দেশে মারা গেছেন ১৩ জন।

বিদায়ী বছরে (২০২২ সালে) ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা যান দেশের ইতিহাসের সর্বোচ্চ ২৮১ জন। বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে ডেঙ্গুতে ২৭ জন মারা যান। একই সঙ্গে আলোচ্য বছরে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ৬২ হাজার ৩৮২ জন।

২০২০ সালে করোনা মহামারিকালে ডেঙ্গুর সংক্রমণ তেমন একটা দেখা না গেলেও ২০২১ সালে সারাদেশে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হন ২৮ হাজার ৪২৯ জন। একই বছর দেশব্যাপী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১০৫ জন মারা যান।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংশ্লিষ্টদের সমন্বয়হীনতা ও দায়িত্ব অবহেলার কারণে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণহীন। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে এডিস মশা নিধন কর্মসূচি সারা বছর অব্যাহত রাখতে হবে। জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগের (সিডিসি) লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম জানান, চলতি বছরে বর্ষা মৌসুম শুরুর আগেই ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। সেজন্য আগাম সতর্কতা এবং প্রস্তুতির প্রয়োজন।

কীটতত্ত্ববিদ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক কবিরুল বাশার বলেন, ‘এ বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়বে। বিশেষ করে, এ বছর ঢাকার বাইরেও ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধি পাবে। ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ার অনেকগুলো কারণ রয়েছে। বিশেষ করে অপরিকল্পিত নগরায়ন, পানি প্রবাহের সিস্টেম এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব। এ বছর এডিস মশার ঘনত্ব বেশি দেখা যাচ্ছে। মের শুরুতেই বৃষ্টি হওয়ায় জ্যামিতিক হারে রোগী বাড়ছে।’

(ঢাকাটাইমস/২৭মে/পিআর/এসএস/কেএম)