বাড়ছে ডেঙ্গু! এই সময়ের জ্বরে যেসব লক্ষণ দেখলেই পরীক্ষা ও সতর্কতা জরুরি
প্রকাশ | ২৮ মে ২০২৩, ১০:২৮ | আপডেট: ২৮ মে ২০২৩, ১১:০৭
দেশে করোনা নিয়ে ভয় কমেছে বহু আগে। তবে মে-জুন এলেই প্রতি বছর ভয় ধরাচ্ছে ডেঙ্গু। রোগটির প্রকোপ দিন দিন প্রকট আকার ধারণ করছে। প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। তাই এই সময়ে জ্বর হলে ছোট-বড় অবহেলা না করে ডেঙ্গু পরীক্ষার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।
এর পাশাপাশি ডেঙ্গু পরীক্ষার রিপোর্ট আসার আগ পর্যন্ত বেশি করে তরল খাবার, স্যালাইন, প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ খাওয়ার পরামর্শও দিচ্ছেন তারা। তার আগে চলুন জেনে আসি ডেঙ্গু জ্বর কখন বেশি হয় এবং এর লক্ষণগুলোই বা কী কী।
সাধারণত মে মাস থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত, বিশেষ করে গরম এবং বর্ষার সময়টাতেই ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ বেশি থাকে। শীতকালে এই জ্বর হয় না বললেই চলে। শীতে লার্ভা অবস্থায় ডেঙ্গু মশা অনেক দিন বেঁচে থাকতে পারে। বর্ষার শুরুতেই সেগুলো থেকে নতুন করে ডেঙ্গু ভাইরাসবাহিত মশা বিস্তার লাভ করে।
সাধারণত শহরাঞ্চলে অভিজাত এলাকায়, বড় বড় দালান কোঠায় এই মশার প্রাদুর্ভাব বেশি। তাই ডেঙ্গু জ্বরও এসব অভিজাত এলাকার বাসিন্দাদের বেশি হয়। বস্তিতে বা গ্রামে বসবাসরত লোকজনের ডেঙ্গু কম হয় বা একেবারেই হয় না বললেই চলে।
ডেঙ্গুর ভাইরাস চার ধরনের হয়ে থাকে। তাই ডেঙ্গু জ্বরও চার বার হতে পারে। যারা আগেও ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের ক্ষেত্রে পরবর্তী সময়ে ডেঙ্গু হলে তা মারাত্মক হওয়ার ঝুঁকি থাকে। বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে এটি বেশি দেখা যায়।
ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণসমূহ
ক্লাসিক্যাল ডেঙ্গু জ্বরে সাধারণত তীব্র জ্বর ও সেই সঙ্গে সারা শরীরে প্রচণ্ড ব্যথা হয়ে থাকে। জ্বর ১০৫ ফারেনহাইট পর্যন্ত হয়ে থাকে। শরীরে বিশেষ করে হাড়, কোমর, পিঠসহ অস্থি সন্ধি এবং মাংসপেশীতে তীব্র ব্যথা হয়। এছাড়া মাথাব্যথা ও চোখের পেছনে ব্যথা হয়। অনেক সময় ব্যথা এত তীব্র হয় যে, মনে হয় বুঝি হাড় ভেঙ্গে যাচ্ছে। তাই এই জ্বরের আরেক নাম ‘ব্রেক বোন ফিভার’।
জ্বর হওয়ার চার বা পাঁচ দিনের মাথায় সারা শরীরে লালচে দানা দেখা যায়, যাকে বলা হয় স্কিন র্যাশ। অনেকটা এলার্জি বা ঘামাচির মতো। এর সঙ্গে বমি বমি ভাব, এমনকি বমি হতে পারে। রোগী অতিরিক্ত ক্লান্তিবোধ করে এবং রুচি কমে যায়।
সাধারণত চার বা পাঁচ দিন জ্বর থাকার পর তা এমনিতেই চলে যায় এবং কোনো কোনো রোগীর ক্ষেত্রে এর দুই বা তিন দিন পর আবার জ্বর আসে। একে ‘বাই ফেজিক ফিভার’ বলে।
কখন ডাক্তার দেখাবেন?
ডেঙ্গু জ্বরের নির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা নেই। তবে এই জ্বর সাধারণত নিজে নিজেই ভালো হয়ে যায়। তাই উপসর্গ অনুযায়ী সাধারণ চিকিৎসাই যথেষ্ট। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়াই ভালো যেমন-
শরীরের যে কোনো অংশ থেকে রক্তপাত হলে। প্লাটিলেটের মাত্রা কমে গেলে। শ্বাসকষ্ট হলে বা পেট ফুলে পানি আসলে। প্রস্রাবের পরিমাণ কমে গেলে। জন্ডিস দেখা দিলে। অতিরিক্ত ক্লান্তি বা দুর্বলতা দেখা দিলে। প্রচণ্ড পেটে ব্যথা বা বমি হলে। তবে পরীক্ষায় যদি ডেঙ্গু ধরা না পড়ে, তাহলে নিশ্চিন্ত থাকুন। দুদিন ভুগিয়ে এমনিতেই বিদায় হবে জ্বর।
(ঢাকাটাইমস/২৮মে/এজে)