শরীরের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করে খেজুর

ফিচার ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ৩০ মে ২০২৩, ০৯:৫৭

স্বাস্থ্যকর খাবারের তালিকায় উপরের দিকে থাকে ফল। আর এই উপকারী ফলের তালিকায় থাকে খেজুর। খেজুর ফল শক্তি, খনিজ এবং ভিটামিনের একটি দুর্দান্ত উৎস। খেজুরে প্রচুর পরিমাণে ডায়েটারি ফাইবার রয়েছে, যা হজমশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। খেজুরে কোন কোলেস্টেরল এবং বাড়তি পরিমাণে চর্বি থাকে না। যার ফলে আপনি যখন সহজেই খেজুর খাওয়া শুরু করবেন তখন অন্যান্য ক্ষতিকর ও চর্বি জাতীয় খাবার থেকে দূরে থাকতে পারবেন। খেজুর হল প্রোটিন সমৃদ্ধ। ফলে আমাদের পেশী গঠন করতে সহায়তা করে এবং শরীরের জন্য খুব অপরিহার্য প্রোটিন সরবরাহ করে।

খেজুরে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন যা আমাদের শরীরের জন্য অত্যাবশ্যক। যেমন, বি১, বি২, বি৩ এবং বি৫। এছাড়াও ভিটামিন এ১ এবং সি ভিটামিন পাওয়ার আরও একটি সহজ মাধ্যম হচ্ছে খেজুর। সেই সাথে খেজুরে দৃষ্টি শক্তি বাড়ায়। সেই সঙ্গে রাতকানা রোগ প্রতিরোধেও খেজুর অত্যন্ত কার্যকর।

খেজুর এমন এক ধরনের ফল যেটাকে কোলেস্টেরল-বান্ধব খাবার হিসেবে উপেক্ষা করা হয়। কিন্তু সত্যিটা হলো খেজুর রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে দারুণ সহায়ক। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ডায়টেরি ফাইবার দুটিই কোলেস্টেরল কমানোর জন্য উপকারী।

খেজুরে বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যেমন- পলিফেনল, ফ্ল্যাভোনয়েড এবং ক্যারোটিনয়েড রয়েছে। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলি এলডিএল কোলেস্টেরলের অক্সিডেশন রোধ করে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। যার ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে।

খেজুর ডায়েটরি ফাইবারের একটি বড় উৎস। এই ধরনের ফাইবার পিত্ত অ্যাসিডের সাথে যুক্ত হয়ে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।

মেডজুল খেজুরে থাকা দ্রবণীয় ফাইবার খারাপ কোলেস্টেরল কমানোর জন্য সবচেয়ে উপকারী। এই ফাইবার খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা রোধ করে রক্ত প্রবাহে শোষিত হতে বাধা দেয়।

কোলেস্টেরল কমানোর বৈশিষ্ট্য ছাড়াও, খেজুর শরীরের প্রয়োজনীয় খনিজ এবং ভিটামিনের একটি দুর্দান্ত উৎস। খেজুর ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম, আয়রন এবং ভিটামিন বি ৬ সমৃদ্ধ ফল। এই সব পুষ্টি সামগ্রিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত খেজুর খেলে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। প্রতিদিন কতগুলি খেজুর খাওয়া উচিত তা একেকজনের ব্যক্তিগত চাহিদার উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হতে পারে। তবে একবারে অনেক খেজুর না খাওয়াই ভালো। কারণ খেজুরে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে, যা বেশি পরিমাণে খেলে হজমের সমস্যা হতে পারে। সেক্ষেত্রে ডায়েটে কতগুলি খেজুর অন্তর্ভুক্ত করবেন তা নিয়ে খাদ্য বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করতে পারেন।

খেজুর প্রচুর আয়রন রয়েছে। ফলে এটা হৃৎপিণ্ডের কার্যক্ষমতা বাড়ায়। তাই যাদের দুর্বল হৃৎপিণ্ড, তাদের জন্য খেজুর হতে পারে সবচেয়ে নিরাপদ ঔষধ।

খেজুরে আছে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম। যা হাড়কে মজবুত করে। খেজুর শিশুদের মাড়ি শক্ত করতে সাহায্য করে।

খেজুর পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ এবং প্রাকৃতিক আঁশে পূর্ণ। এক গবেষণায় দেখা যায়, খেজুর পেটের ক্যানসার প্রতিরোধ করে। আর যারা নিয়মিত খেজুর খান তাদের বেলায় ক্যানসারে ঝুঁকিটাও কম থাকে। খুব সম্প্রতি একটি গবেষণায় উঠে এসেছে যে খেজুর অ্যাবডোমিনাল ক্যানসারে রোধে কার্যকর ভূমিকা পালন করে এবং অবাক করা বিষয় হচ্ছে এটি অনেক সময় ঔষধের চেয়েও ভাল কাজ করে।

মাত্র কয়েকটা খেজুর কমিয়ে দেয় ক্ষুধার জ্বালা। এবং পাকস্থলীকে কম খাবার গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করে। এই কয়েকটা খেজুরই কিন্তু শরীরের প্রয়োজনীয় শর্করার ঘাটতি পূরণ করে দেয়।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। খেজুরে আছে এমন সব পুষ্টিগুণ। যা খাদ্য পরিপাকে সাহায্য করে। এবং কোষ্ঠকাঠিন্য রোধ করে। কখনও কখনও ডায়রিয়ার জন্যেও এটা অনেক উপকারী।

প্রচুর মিনারেল সঙ্গে আয়রন থাকার কারণে খেজুর রক্তশূন্যতা রোধ করে। তাই যাদের হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কম তারা নিয়মিত খেজুর খেয়ে দেখতে পারেন।

স্নায়ুতন্ত্রের কর্মক্ষমতা বাড়ায়। খেজুর নানা ভিটামিনে পরিপূর্ণ থাকার কারণে এটি মস্তিষ্কের চিন্তাভাবনার গতি বৃদ্ধি রাখে, সঙ্গে স্নায়ুতন্ত্রের কর্মক্ষমতা বাড়ায়। একটি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ছাত্র-ছাত্রী যারা নিয়মিত খেজুর খায় তাদের দক্ষতা অন্যদের তুলনায় ভাল থাকে।

হৃদরোগ প্রতিরোধ করে। খেজুরে রয়েছে পটাশিয়াম যা বিভিন্ন ধরণের হৃদরোগ প্রতিরোধ করে এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়।

(ঢাকাটাইমস/৩০ মে /আরজেড)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফিচার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :