অবশেষে আত্রাই শুকটিগাছা রাবার ড্যামের কাজ শুরু
প্রকাশ | ৩০ মে ২০২৩, ১২:২০ | আপডেট: ৩০ মে ২০২৩, ১২:২৪
নওগাঁর আত্রাই উপজেলার শুকটিগাছা এলাকায় আত্রাই নদীর ওপর প্রায় ১৯ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় রাবার ড্যাম। নির্মাণের তিন বছর পর ড্যামের বিভিন্ন জায়গায় ছিদ্র হয়ে এটি অকার্যকর হয়ে যায়। এর ফলে ভোগান্তির শিকার হন নদীর ওপর নির্ভরশীল কৃষক ও মৎস্যজীবীরা।
দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর চলতি মাসের ৬ তারিখ প্রায় ২১ লাখ টাকা ব্যয়ে রাবার ড্যামের মেরামত কাজ শুরু করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)।
এলজিইডি সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে দুটি বেলুনের কাজ শেষ হয়েছে। আর বাকি একটির কাজ শেষ হতে আরও কয়েক সপ্তাহ লাগবে। মেরামত কাজ শেষ হলে কৃষক ও মৎস্যজীবীরা বেশি লাভবান হবেন।
এক সময় শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে নওগাঁর আত্রাই নদীর দুই কূলে চাষাবাদ করা যেত না। নদীর পানি উজান থেকে ভাটির দিকে দ্রুত নেমে যেত। ফলে বিকল্প হিসেবে গভীর নলকূপের ওপর কৃষকদের নির্ভর করতে হতো। এমন অবস্থায় ওই এলাকার কৃষিকে এগিয়ে নিতে আত্রাই নদীর দুইকূলে শুষ্ক মৌসুমে সেচ সুবিধার জন্য স্থাপন করা হয় রাবার ড্যাম।
আত্রাই উপজেলার শুকটিগাছা এলাকায় নদীর ওপর রাবার ড্যামটি নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১২ সালে। এরপর বেশ কয়েকবার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পরিবর্তন হয়ে ২০১৭ সালে শেষ হয় কাজ। এরপর একই বছর রাবার ড্যামটি স্থানীয় একটি পরিচালনা কমিটিকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে প্রায় ১৯ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করে ড্যামটি।
রাবার ড্যামের পাশে আড়ানি গ্রামের কৃষক আকবর হোসেন ঢাকা টাইমসকে বলেন, রাবার ড্যামটি নির্মাণের পর প্রথম তিন বছর সুবিধা পেয়েছি। কিন্তু ২০২০ সাল থেকে নানা স্থানে ছিদ্র হয়ে অকেজো হয়ে যায়। গত কয়েকদিন ধরে অকেজো রাবার ড্যামটির মেরামতের কাজ শুরু করা হয়েছে। এটি মেরামতের কাজ শেষ হলে কৃষকরা আবারো লাভবান হবেন।
স্থানীয় মৎস্যজীবী সনজিত কুমার ঢাকা টাইমসকে বলেন, জীবিকার জন্য আমরা নদীর ওপর নির্ভরশীল। গত তিন বছর ধরে নদী শুকিয়ে যাওয়ায় কষ্টের মধ্যে পড়েছি। রাবার ড্যামেটি চালু থাকলে অনেক মাছ পাওয়া যেত নদীতে। তাই রাবার ড্যামটি সংস্কার কাজ শেষ হলে কৃষক-মৎস্যজীবী সবার জন্যই সুবিধা হবে।
শুকটিগাছা রাবার ড্যাম পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় লিমিটেডের সভাপতি শহিদুল ইসলাম ঢাকা টাইমসকে বলেন, রাবার ড্যামটি নির্মাণের পর তিন বছর সুবিধা পাওয়া গেছে। ড্যামের মাধ্যমে আত্রাই, ছোট যমুনা ও তুলসীগঙ্গা নদীর দুই তীরের পাঁচ উপজেলার প্রায় ৮০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে সেচ সুবিধা পাওয়া গেছে। কিন্তু গত তিন বছর থেকে এটি অকার্যকর হয়ে পড়ায় বিপাকে পড়েছিলাম আমরা। চলতি মাসে মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে। আর এ মাসেই মেরামতের কাজ শেষ হলে আমরা কৃষক ও মৎস্যজীবী ব্যাপক উপকৃত হবো।
উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) মো. জোনায়েত আলম ঢাকা টাইমসকে বলেন, বেশ কিছুদিন আগে রাবার ড্যাম ছিদ্র হয়ে যাওয়ায় এটি ফুলানো সম্ভব হচ্ছে না। তাই পানি ধরে রাখা যাচ্ছে না। গত কয়েক দিন ধরে মেরামতের কাজ চলছে। আশাকরি দ্রুত কাজ শেষ হবে।
আরও পড়ুন: গাজীপুর সিটি নির্বাচনে আট প্রার্থীর ছয়জন জামানত হারিয়েছেন
নওগাঁর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডির) নির্বাহী প্রকৌশলী তোফায়েল আহমেদ ঢাকা টাইমসকে বলেন, গত বছর পানি না শুকানোয় কাজটি করা যায়নি। বর্তমানে আত্রাই নদীর পানি শুকিয়ে থাকায় প্রায় ২১ লাখ টাকা ব্যয়ে কাজ শুরু করা হয়েছে। খুব শিগগিরই রাবার ড্যামটি সচল হবে। এতে করে সকলেই উপকৃত হবে। কৃষকরা রবি-শস্য ফলাতে আর কোন সমস্যা হবে না।
(ঢাকাটাইমস/৩০মে/এসএম)