বেড়েই চলেছে পেঁয়াজের ঝাঁজ
দেশের বাজারে মে মাস থেকে ধাপে ধাপে পেঁয়াজের দাম বাড়তে থাকে। দেড় মাসে তিনগুণ দাম বেড়ে যাওয়ায় পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধির লাগাম টানতে আমদানি করার কথা জানান বাণিজ্যমন্ত্রী। আমদানির খবরের পর কিছুদিন পেঁয়াজের দাম ৫ থেকে ১০ টাকা কমেছিল। কিন্তু আমদানির বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত না হওয়ার কারণে আবারও বাড়তে শুরু করেছে পেঁয়াজের দাম।
রবিবার সরজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, মধুবাগ, মগবাজারসহ রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে এর চেয়ে ভালো মানের পেঁয়াজ ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ক্রেতারা বলছেন, ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে বাজারে পেঁয়াজের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।
তারা বলেন, ঈদ, পূজা বা যেকোনো উৎসব এলেই অসাধু ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট তৈরি করে ইচ্ছামতো দাম বাড়িয়ে দেয়। এমনকি ঈদের প্রায় এক মাস আগেই পেঁয়াজ নিয়ে শুরু হয়েছে ব্যবসায়ীদের কারসাজি।
গত এপ্রিল মাসে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় বিক্রি হলেও দেড় মাসে প্রায় তিনগুণ দাম বেড়েছে।
মগবাজার এলাকার প্রণয় নামে এক মুদি দোকানি ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘বাজারে শুধু পেঁয়াজ নিয়ে অস্থিরতা নয়। প্রতিটি পণ্যেই অস্থিরতা রয়েছে। তবে আমাদের কিছু করার নেই। আমরা নিজেদেরই এই বাজার পরিস্থিতি নিয়ে হা-হুতাশ করতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত।’
তিনি বলেন, ‘সব সময় বলা হচ্ছে বাজার সিন্ডিকেটের কথা। কিন্তু যারা সিন্ডিকেটের সঙ্গে যুক্ত আছে তাদেরকে দেখা যায় না। এই সিন্ডিকেটের কারণে আমাদের দেশের অনেক ক্ষতি হচ্ছে।’
মধুবাগ এলাকায় পেঁয়াজ কিনতে আসা সোহান ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘ঈদের আগেই প্রতি বছর সব ধরনের পণ্যের দাম বেড়ে যায়। তবে কোরবানির ঈদের আগে সব ধরনের মসলার দাম বাড়ে। এক মাস আগেই পেঁয়াজের দাম ১০০ টাকার কাছাকাছি চলে গেছে। এরকম চলতে থাকলে আমরা কেমন করে চলব?’
মগবাজার এলাকার মুদি দোকানি মো. দেলোয়ার হোসেন ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘পেঁয়াজ আমদানি না হওয়ার কারণে দাম বাড়তি। আমাদের কিছু করার নেই। বরং সরকার যদি আমদানি না করে দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম আরও অনেক গুণ বেড়ে যাবে।’
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘দেশের বাজারে সবকিছুর দাম বেশি। সেই সঙ্গে পেঁয়াজের দামও বেড়েছে। আমদানি বাড়লে পেঁয়াজের দাম কমে যাওয়ার আশা আছে। তবে একটু সময় লাগবে।’
তিনি বলেন, বাজারে যদি কোনো ধরনের অনিয়ম দেখা যায় আমাদেরকে জানানোর অনুরোধ জানাচ্ছি।’
এদিকে কৃষি মন্ত্রণালয়ের দাবি, দেশে এখনো পেঁয়াজের কোনো সংকট নেই। চলতি অর্থবছরে পেঁয়াজের উৎপাদন দাঁড়িয়েছে ৩৪ লাখ ১৭ হাজার টনে। গত ১০ বছরে উৎপাদন বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি। বর্তমানে ১৮ লাখ ৩১ হাজার ১৭০ টন পেঁয়াজ মজুত আছে।
(ঢাকাটাইমস/৪জুন/পিআর/এফএ)