বাজেটে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষায় বরাদ্দ রাখার আহ্বান শিশুদের

প্রকাশ | ০৭ জুন ২০২৩, ২৩:১০

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস

জাতীয় বাজেটে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষার জন্য বরাদ্দ রাখতে আহ্বান জানিয়েছে শিশুরা। তারা বলেছে, বর্তমান সরকার সফলতার সঙ্গে দেশের শিশুদের অপুষ্টি কমিয়ে এনেছে। টিকাদানের মাধ্যমে প্রতিরোধযোগ্য রোগ থেকে লাখ লাখ শিশুর মৃত্যু ঠেকিয়েছে। এ অগ্রগতি বজায় রাখার জন্য সরকারের আরও বেশি বিনিয়োগ করা প্রয়োজন।

বুধবার জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে ইউনিসেফ ও শিশু অধিকার বিষয়ক সংসদীয় ককাস আয়োজিত ‘জাতীয় বাজেট ২০২৩-২০২৪ এবং শিশু অধিকার’ শীর্ষক আলোচনায় অংশ নেওয়া শিশুরা এসব কথা বলে।

জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ও শিশু অধিকার বিষয়ক সংসদীয় ককাসের চেয়ার শামসুল হক টুকুর সভাপতিত্বে মূল বক্তব্য উত্থাপন করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউনিসেফের প্রতিনিধি মি. শেলডন ইয়েট। আরও বক্তব্য দেন জাতীয় সংসদের হুইপ মাহবুব আরা গিনি, বিরোধী দলীয় হুইপ অধ্যক্ষ রওশন আরা মান্নান, শিশু অধিকার বিষয়ক সংসদীয় ককাসের ভাইস চেয়ারম্যান আরমা দত্ত ও সংসদ সদস্য হাবিব-এ মিল্লাত প্রমুখ।

খুলনা থেকে আসা ১৪ বছর বয়সী শিশু সাংবাদিক মাইশা আঞ্জুম আরিফা বলে, অনেক শিশুর সঙ্গে কথা বলেছি, যাদের দিনে তিনবেলা খাবারের জন্য কাজ করতে হয়। তাদের বেশিরভাগই স্কুলে যায় না। অনেককে অসুস্থ থাকা সত্ত্বেও দিনের পর দিন কাজ চালিয়ে যেতে হচ্ছে। জাতীয় বাজেটে বরাদ্দের ক্ষেত্রে তাদের কথা বিবেচনায় রাখতে হবে।

ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু বলেন, আজ শিশুদের কথা শুনে এটা পরিস্কার যে, জনপ্রতিনিধি হিসেবে তাদের জন্য আমাদের আরও অনেক কিছু করার আছে। তাদের অধিকার সমুন্নত রাখতে এবং তাদের মতামত তুলে ধরতে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাব। একই কাজ করার জন্য সহকর্মীদের প্রতিও আহ্বান জানাই।

২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষার জন্য বরাদ্দ গত বছরের তুলনায় আনুপাতিকভাবে কমেছে বলে আলোচনায় উল্লেখ করা হয়।

ইউনিসেফের প্রতিনিধি মি. শেলডন ইয়েট বলেন, শিশুদের অধিকার পূরণে এবং তাদের সার্বিক কল্যাণে/উন্নয়নে বাংলাদেশ প্রশংসনীয় অগ্রগতি করেছে। তবে গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক খাতে বিনিয়োগ বজায় না থাকলে এ অগ্রগতি পিছিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। বাজেটে শিশুদের অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য সংসদ সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানাই।

ইউনিসেফের বিশ্লেষণে বলা হয়, স্বাস্থ্য খাতের প্রস্তাবিত বাজেটে বরাদ্দ এ বছর জিডিপির ০.৭৬ শতাংশে নেমে গেছে, যা গত অর্থবছর ছিল শূন্য দশমিক ৮৩ শতাংশ। সর্বজনীন স্বাস্থ্য কাভারেজ বা সবাইকে স্বাস্থ্যসেবার আওতায় আনার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ ২ শতাংশ বাড়ানোর দিকে অগ্রসর হওয়া প্রয়োজন। এ ছাড়াও বাজেটে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ জিডিপির ১ দশমিক ৭৬ শতাংশে নেমে গেছে, যা গত অর্থবছর ছিল ১ দশমিক ৮৩ শতাংশ। তবে বৃহত্তর অন্তর্ভুক্তির দিকে অগ্রসর হওয়ার একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ হলো প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা উপবৃত্তির পরিমাণ বাড়ানো।

প্রস্তাবিত বাজেটে সামাজিক সুরক্ষার ক্ষেত্রে মা ও শিশু সহায়তা কর্মসূচির সেবা গ্রহণকারীর সংখ্যা বাড়ানোর প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে ইউনিসেফ। পাশাপাশি সুবিধার প্রকৃত মূল্যের উল্লেখযোগ্য পতন রোধে মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য বিধানের গুরুত্বের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/০৭জুন/কেএম)