হায়েনার কামড়ে হাত হারানো শিশু ঝুঁকিমুক্ত, তবুও অনিশ্চয়তায় পরিবার
প্রকাশ | ০৯ জুন ২০২৩, ১৫:৫০

পরিবারের সঙ্গে রাজধানীর মিরপুর জাতীয় চিড়িয়াখানায় বেড়াতে গিয়ে হায়েনার আক্রমণে হাত হারিয়েছে দুই বিছরের শিশু মো. সাইফ। বর্তমানে কিছুটা সুস্থ হলেও শিশুটির ভবিষ্যৎ চিকিৎসা নিয়ে অনিশ্চয়তায় ভুগছে পরিবার।
পরিবারের ভাষ্যমতে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে ছাড়পত্র দিতে চাইলেও তারা যেতে চান না। শিশুটির পরিবার মনে করছে হাসপাতাল থেকে চলে গেলে কেউ খোঁজ-খবর নেবে না।
শুক্রবার দুপুরে ঢাকাটাইমসের সঙ্গে আলাপকালে শিশুটির বাবা তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিক মো. সুমন বলেন, ‘সাইফের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সে এখন ঝুঁকিমুক্ত, চাইলে আজই আমরা ওকে বাসায় নিয়ে যেতে পারি। তবে আমরা এখনি তাকে নিয়ে যেতে চাচ্ছি না। আমরা আরও সুস্থ হয়ে উঠা পর্যন্ত তাকে এখানে রাখতে চাই। কারণ, আমরা এখান থেকে গেলে কেউ আমাদের খোঁজ-খবর নেবে না।’
সুমন মিয়া জানান, চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ সুমনের চিকিৎসা বাবদ যত টাকা লাগে দিতে চেয়েছেন। তবে এই কথায় তিনি আশ্বস্ত হতে পারছেন না। পুরোপুরি সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত চিকিৎসা নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ ও হস্তক্ষেপ কামনা করেন শিশুর বাবা।
এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে শিশুটি তার বাবা-মাসহ সাতজন মিলে চিড়িয়াখানায় ঘুরতে গিয়েছিল। দুপুর ১২টার দিকে চিড়িয়াখানায় হায়েনার খাঁচার সামনে মায়ের কোল থেকে নামে সাইফ। হঠাৎ হায়েনার খাঁচার সামনে চলে যায় সে। এ সময় খাঁচায় থাকা হায়েনাটি শিশুটির হাতে কামড় দেয়। পরক্ষণে পাশে থাকা ১০-১২ জন মিলে টানাটানি করলেও হায়েনার মুখ থেকে ফেরানো যায়নি। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে হিংস্র হায়নার কামড়ের ডান হাত কব্জি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরে চিড়িয়াখানার লোকজনের সহায়তায় তাকে প্রথমে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখান থেকে তারা সাইফকে পঙ্গু হাসপাতালে পাঠায়।
এ বিষয়ে চিড়িয়াখানার সরকারী পরিচালক মুজিবুর রহমান বলেন, ‘ঘটনার পরপরই আমরা শিশুটিকে নিয়ে চিকিৎসার জন্য সব ব্যবস্থা করি। পঙ্গু হাসপাতালে এখনও শিশুটিকে চিকিৎসায় সহায়তার জন্য আমাদের একজন কর্মকর্তা রয়েছেন। তিনি সবকিছু দেখভাল করছেন।’
মুজিবুর রহমান বলেন, ‘বিভিন্ন উৎসবকে কেন্দ্র করে লোকসমাগম থাকলেও এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি। এ ঘটনার পরপরই সব ধরনের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এ ঘটনার প্রকৃত কারণ অনুসন্ধানের চেষ্টা চালানো হচ্ছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে। তারা বিষয়টি দেখছেন।’
(ঢাকাটাইমস/০৯জুন/এলএম/কেএম)