শ্রীপুরে কাঁঠালের বাম্পার ফলন

প্রকাশ | ১২ জুন ২০২৩, ১৪:২১ | আপডেট: ১২ জুন ২০২৩, ১৪:২৪

মহিউদ্দিন আহমেদ, শ্রীপুর (গাজীপুর)

কাঁঠালের রাজধানী খ্যাত গাজীপুরের শ্রীপুরে কাঁঠালের বাম্পার ফলন হয়েছে। কাঁঠাল পাকতেও শুরু করেছে। বর্তমানে কাঁঠালের ভরা মৌসুম, তাই গাছে গাছে ঝুলছে শুধু কাঁঠাল আর কাঁঠাল। কাঁঠাল বাংলাদেশের জাতীয় ফল। কাঁঠাল ভালোবাসে না এমন লোক পাওয়া খুবই দুষ্কর। তারপরও যদি হয় মিষ্টি ও সুস্বাদু তাহলে তো আর কিছু বলারই থাকেনা। 
কাঁঠাল শুধুমাত্র একটি মৌসুমী ফলই নয়- সহায়ক খাদ্য ও অর্থকরী ফসল হিসেবে স্বকীয় গুণাগুনের কারণেই নিজের জায়গা করে নিয়েছে। শ্রীপুর উপজেলা তেলিহাটি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা জুড়ে ও তার আশেপাশে সর্বত্র এখন কাঁঠাল গাছগুলিতে ঝুলন্ত কাঁঠালে ছেঁয়ে আছে। কোনো কোনো আগাম জাতের কাঁঠালগুলো পাকতে শুরু করেছে। পাকা কাঠালের মিষ্টি গন্ধে কীট-পতঙ্গরা ভিড় করছে গাছে গাছে। এছাড়া এরই মধ্যে উপজেলার হাট-বাজারগুলোতে পাকা কাঁঠাল উঠতে শুরু করেছে। এই উপজেলায় কাঁঠালের বাজারের মধ্যে অন্যতম জৈনার বাজার, বরমী বাজার, কাওরাইদ ও গড়গড়িয়া মাষ্টার বাড়ি।

তেলিহাটি ইউনিয়নের টেপির বাড়ি গ্রামের হারুন মিয়া জানান, তার ১০টি কাঁঠাল গাছের সমান তালে কাঁঠাল ধরেছে। তিনি এবার দুই লাখ টাকার কাঁঠাল বিক্রি করবেন আশা করছি। এ বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে না পড়ায় কাঁঠালের ভালো ফলন হয়েছে।
একই গ্রামের আবু হানিফা জানান, গাজীপুরের শ্রীপুরের কাঁঠাল দেশের চাহিদা পূরণের পরেও বিদেশে রপ্তানি করা হয় প্রতিবছর। তার বাড়ির আশেপাশে নিজের ১৪টি কাঁঠাল গাছ আছে। তার গাছে প্রচুর কাঁঠাল ধরেছে। এ বছর তার কাঁঠাল বিক্রির আশা ৩ থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকার।
এদিকে এখানকার অধিকাংশ কাঁঠাল গাছগুলো বাগান ভিত্তিক না হলেও বাড়ির আঙিনায়, রাস্তার দু’ধারে, আর এসব গাছে ঝুলে থাকা কাঁঠলের দৃশ্য অনেকের নজর কাড়ে। অন্যান্য ফল ও গাছ নিয়ে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে যত তৎপরতা লক্ষ্য করা যায় কাঁঠাল নিয়ে তার সিকি ভাগও হয়না। কোন কোন পরিবার ফল মৌসুমে কাঁঠাল বিক্রি করে সারা বছরের আয় করে। ২ থেকে তিন মাস কাঁঠালের ভরা মৌসুম এসময় পাইকার ও শ্রমিক শ্রেণির লোকদের বাড়তি আয়ের সুযোগ হয়। এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কাঁঠালের ভাল হয়েছে। তবে ফলন বেশি হলে দাম না পাওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে। কারণ, বেশি ফলনে দাম পড়ে যাওয়ার রেওয়াজ আদিকালের।

সরেজমিনে উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ৮টি ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে, গাছগুলো ফলে ফলে ভরে গেছে। প্রতিটি গাছে ১৫০ থেকে ৩০০ বেশির পর্যন্ত ফল ধরেছে। প্রসঙ্গত, কৃষিপণ্য কাঁঠাল মূলত একটি মৌসুমী সুস্বাদু ফল। কাঁঠালের বিচি তরকারিতেও সমান জনপ্রিয়। এলাকায় কোনো কাঁঠাল প্রক্রিয়াজাত করার ব্যবস্থা না থাকায় কৃষকরা তাদের ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অবিলম্বে অত্র এলাকায় একটি কাঁঠাল প্রক্রিয়াজাত ব্যবস্থা গড়ে তুললে এ উপজেলার মানুষ অর্থনৈতিকভাবে উপকৃত হবে বলে মন্তব্য সচেতন মহলের। 

(ঢাকাটাইমস/১২জুন/এসএ)