আপাতত বিচারপতি পদে ফিরতে পারছেন না আলতাফ হোসেন ও ফরিদ আহমেদ

প্রকাশ | ১৪ জুন ২০২৩, ১১:১৫ | আপডেট: ১৪ জুন ২০২৩, ১৭:০৭

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস

সাবেক অতিরিক্ত বিচারপতি এ বি এম আলতাফ হোসেন ও ফরিদ আহমেদ শিবলীর স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগে করা রিট খারিজের বিরুদ্ধে আপিল নিষ্পত্তি করেছেন আপিল বিভাগ। এ আদেশের ফলে আলতাফ হোসেন ও ফরিদ আহমেদ শিবলী আপাতত বিচারপতি পদে ফিরতে পারছেন না।
বুধবার সকালে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. নুরুজ্জামানের নেতৃত্বাধীন ৭ বিচারপতির বেঞ্চ এ আদেশ দেন। 
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী ও মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মেহেদী হাছান চৌধুরী।
এর আগে সাবেক অতিরিক্ত বিচারপতি এ বি এম আলতাফ হোসেনকে হাইকোর্টে স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দিতে দুটি রিট করলে হাইকোর্ট তা খারিজ করে দেন। বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের অবকাশকালীন বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আলতাফ হোসেন নিজে এবং সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইদ্রিসুর রহমান রিট দুটি করেন। 

আরও পড়ুন>>জেসমিনের মৃত্যু: তদন্ত কমিটিকে দুই মাস সময় বেঁধে দিলেন হাইকোর্ট

২০১২ সালের ১৩ জুন এ বি এম আলতাফ হোসেনসহ ছয়জনকে দুই বছরের জন্য হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। শপথ নেওয়ার দিন থেকে ওই নিয়োগ কার্যকর হবে জানানো হয়। পরদিন তারা শপথ নেন। ওই বছরের ৯ জুন তাদের মধ্যে পাঁচজনকে স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। বাদ পড়েন এ বি এম আলতাফ হোসেন।
আলতাফ হোসেনকে স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইদ্রিসুর রহমান ২০১২ সালের  জুলাই মাসে একটি রিট করেন। পরে আলতাফ হোসেন নিজে আরেকটি রিট করেন। 
২০১৫ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান ফরিদ আহমেদ শিবলীসহ ১০ জন। এদের মধ্যে বিচারপতি জে এন দেব চৌধুরী মারা যান। নয়জনকে স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ পাঠালে শিবলীকে বাদ দিয়ে আটজনকে স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।
বাদপড়া বিচারপতি শিবলী স্থায়ী নিয়োগ পেতে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। ২০১৭ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি আদালত আবেদনটি নিষ্পত্তি করে আদেশ দেন। হাইকোর্টের এ আদেশের বিরুদ্ধে ওই বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগে আবেদন করেন বিচারপতি শিবলী।

হাইকোর্ট বিভাগের ওই রায়ের বিরুদ্ধে তিনি আপিল বিভাগে আপিল করলে আপিল বিভাগে দীর্ঘদিন শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানিতে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, ২০১১ সালের ১৫ তম সংবিধান সংশোধনীর মাধ্যমে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রধান বিচারপতির পরামর্শকে বাধ্যকর করা হয়েছে।

যেহেতু, প্রধান বিচারপতি রিটকারীকে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে সুপারিশ করেছেন, কাজেই সরকারের জন্য সেটি বাধ্যকর হয়ে দাড়াবে। অন্যথায় তা বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হবে। সুতরাং বিচার বিভাগের স্বাধীনতা সমুন্নত রাখার স্বার্থে বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রধান বিচারপতির পরামর্শে সরকারের হস্তক্ষেপের কোন সুযোগ নাই।

অন্যদিকে সুপারিশ থাকা সত্ত্বেও আইনজীবী আলতাফ হোসেনকে নিয়োগ না দেয়ায় তিনি আলাদা একটি রিট করে সরকারের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করেন। পরবর্তীতে আপিল বিভাগ তাঁর আপিলের ক্ষেত্রে লিভ গ্যান্ট করেন। আর আপিল বিভাগ দুইটি মামলাই একত্রে শুনানি করার নির্দেশ দেন। ওই মামলায় শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী  প্রবীর নিয়োগী।

(ঢাকাটাইমস/১৪জুন/এএ/এফএ)

(ঢাকা টাইমস/১৪জুন/এফএ)