আমার মেয়ে তো নির্দোষ তাহলে কেন হত্যা করা হলো: প্রিয়ন্তীর বাবা

প্রকাশ | ১৫ জুন ২০২৩, ২১:০৬ | আপডেট: ১৫ জুন ২০২৩, ২১:৫০

নোয়াখালী প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

‘আমার মেয়ে তো নির্দোষ। আমার নির্দোষ-নিষ্পাপ মেয়ে চলে গেল। আমার ছেলেকে আল্লাহ বাঁচিয়েছেন।’ বিষন্ন চোখে বাসার সামনে দাঁড়িয়ে এভাবেই কথাগুলো বলেছিলেন নোয়াখালীতে জোড়া খুনের ঘটনায় নিহত ফাতিমা আজিম প্রিয়ন্তীর বাবা ফজলে আজিম কচি। 

বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাফকালে তিনি এসব বলেন। এদিকে ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে নোয়াখালী পুলিশ সুপারের দেয়া বক্তব্যকে মেনে নিতে পারছেন না তিনি। তিনি বলেন, এসপি সাহেব তো এককভাবে বলে গেছেন। ছেলের (আলতাফ) কথা সত্য হোক বা মিথ্যা হোক তার কথা এককভাবে বলে গেছেন। সে (আলতাফ) তো বাঁচার জন্য ভালো-মন্দ অনেক কথাই বলবে। স্থানীয়রা যখন তাকে আটক করে তখনো সে অনেক ধরনের কথা বার্তা বলেছে। আমার ছেলে এবং আমাকে কিছু বলার সুযোগ দেয়া হয়নি। আমি চাই আমার স্ত্রী ও মেয়ে হত্যার সঠিক বিচার হোক।

এর আগে, বুধবার সকালে নোয়াখালী পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের গুপ্তাংক এলাকার বার্লিংটন মোড়ের নিজ বাসায় নুর নাহার বেগম (৪২) ও তার মেয়ে ফাতিমা আজিম প্রিয়ন্তীকে (১৬) কুপিয়ে জখম করা হয়। মা নুর নাহার বেগম ঘটনাস্থলে মারা গেলেও মেয়েকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে সে মারা যায়। এ ঘটনায় স্থানীয়রা দৌড়ে পালানোর সময় আলতাফ হোসেন নামে এক যুবককে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে।

নিহত নুর নাহার বেগম নোয়াখালী পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের গুপ্তাংক এলাকার বার্লিংটন মোড়ের মানিক মিয়ার বাড়ির ফজলে আজিম কচির স্ত্রী। প্রিয়ন্তী তাদের মেয়ে। গ্রেপ্তারকৃত আলতাফ হোসেন লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরবাদাম ইউনিয়নের চর মেহের গ্রামের মৃত আবুল কালামের ছেলে।

এদিকে, নুর নাহার বেগম ও তার মেয়ে প্রিয়ন্তী হত্যার ঘটনায় বুধবার রাতে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন আসামি ওমান প্রবাসী আলতাফ হোসেন। অপরদিকে আলতাফকে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় লোকজন আটক করে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে আলতাফ বলেছিল ঘটনার সঙ্গে আরও দুইজন জড়িত ছিল। স্থানীয়দের প্রশ্ন আলতাফ গ্রেপ্তার হলেও অজ্ঞাত অপর দুই ব্যক্তি কে? তবে এ বিষয়ে পুলিশ বলছে আলতাফ নিজেকে বাঁচানোর জন্য বা ঘটনা ভিন্নখাতে নিতে এ কৌশল করেছে।

বুধবার রাত ৮টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত নোয়াখালীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। ১নং আমলি আদালতের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এস.এম মোসলেহ উদ্দিন মিজান আসামি আলতাফ হোসেনের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করেন। জবানবন্দি রেকর্ডের পর আদালতের নির্দেশে আসামিকে রাত ১১টার দিকে নোয়াখালী জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। 

সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, হত্যার ঘটনায় নিহত নূর নাহার বেগমের স্বামী বাদী হয়ে বুধবার বিকালে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। তবে ওই মামলায় তিনি কোনো আসামির নাম উল্লেখ না করে একাধিক অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করেছেন। সেই মামলায় গ্রেপ্তারকৃত আলতাফকে ১৬৪ধারায় জবানবন্দি নিয়ে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস১৫জুন/এআর)