সোনারগাঁয়ে প্রতারণা করে বাবার জমি লিখে নিল দুই সন্তান
প্রকাশ | ২০ জুন ২০২৩, ১৯:৩৯
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের প্রতারণা করে সরকারি লিজের জমি বাবার কাছ থেকে হেবা দলিলের মাধ্যমে রেজিস্ট্রি করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তার দুই ছেলের বিরুদ্ধে। জমির দুটি জাল দলিল তৈরি করে তার দুই ছেলে সোমবার সোনারগাঁ সাব রেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে লিখে নেয়। এই ঘটনা প্রকাশের পর মঙ্গলবার দিনভর ওই এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সোনারগাঁ উপজেলা ভূমি কার্যালয় থেকে ২০২১ সালে পানাম গাবতলী গ্রামের মৃত গহন আলীর ছেলে মানিক মোল্লার নামের পানাম গাবতলী মৌজায় এসএ ৩২, আর এস ৯১,৯২নং দাগে ৪৬ শতাংশ নাল জমি লিজ দেওয়া হয়। এ লিজের শর্ত মেনে তিনি ওই জমি ভোগ দখল করেন। সম্প্রতি তার ৭ ছেলের মধ্যে শাহিন মোল্লা ও আজহারুল ইসলাম ওই জমি লিখে নেওয়ার জন্য উঠে পড়ে লাগে। সোমবার মানিক মোল্লাকে হাসপাতালে নেওয়ার কথা বলে সাব রেজিস্ট্রি অফিসে নিয়ে তার ভাই শামসুজ্জামান ও দলিল লেখক মো. জাকির হোসেনের সহযোগিতায় হেবা দলিল করে ২৪ শতাংশ জমি রেজিস্ট্রি করে নেয়।
সরকারি জমি লিজ গ্রহণকারী মানিক মোল্লা বলেন, সরকারি জমি সোনারগাঁ ভূমি কার্যালয় থেকে ২০২১ সালে হস্তান্তর বা স্বত্ত্ব দাবি করতে পারবো না এমন শর্ত মেনে ৪৬ শতাংশ জমি লিজ নিয়েছি। সেই জমির ওপর নজর পড়ে আমার ছেলে শাহিন মোল্লা ও আজহারুল ইসলামের। গত এক বছর ধরে এ জমি তাদের করে নেওয়ার জন্য পায়তারা শুরু করে।
তিনি আরো জানান, তাকে হাসপাতালে চিকিৎসার নাম করে তার ভাই সামসুজ্জামান ও ছেলে শাহিন মোল্লা সাব রেজিস্ট্রি অফিসে নিয়ে এ জমির বিপরীতে ১৯৭৪ সালের ৩৪০৭০ নং দলিল ও ২০২৩ সালের ১০৬০৪নং দুটি জাল দলিল তৈরি করে আমার কাছে থেকে টিপসই নিয়ে রেজিস্ট্রি করে নেয়। এ জমি আমি ফেরত চাই। এ জমি ভোগ দখল করতে হলে আমার সকল সন্তানই ভোগ করবে। কেউ প্রতারণা করে একা ভোগ করতে পারবে না। আজহারুল ইসলাম প্রবাসে থাকলেও শাহিন মোল্লা তার নামসহ দলিল তৈরি করে।
অভিযুক্ত শাহিন মোল্লার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমার বাবার কাছ থেকে টাকার বিনিময়ে এ জমি ক্রয় করেছি। এই জমি সরকারি হলে দায় বাবার। এ জমি তিনি বিক্রি করেছেন আমাদের কাছে। তবে জাল দলিল তৈরির বিষয়টি মিথ্যা।
দলিল লেখক মো. জাকির হোসেন বলেন, আমাকে দলিলের বিপরীতে দুটি দলিল ও পর্চা দিয়েছে। সেই মোতাবেক দলিল সৃজন করে রেজিস্ট্রি করেছি।
সোনারগাঁ উপজেলা সাব রেজিস্ট্রার আ.ন ম. বজলুর রহমান মন্ডল বলেন, এ বিষয়টি আমার জানা নেই। দলিল লেখকের যোগসাজসে সরকারি জমি রেজিস্ট্রি করে থাকলে এ দলিল বাতিলের জন্য সুপারিশ করা হবে।
সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রেজওয়ান উল ইসলাম বলেন, সরকারি জমি কোনোভাবেই ব্যক্তির নামে রেজিস্ট্রি করার সুযোগ নেই। এমন হয়ে থাকলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
(ঢাকাটাইমস/২০জুন/এসএ)