বছর জুড়ে কাঁচা মরিচ সংরক্ষণের উপায়

প্রকাশ | ১২ জুলাই ২০২৩, ০৮:৩৭

ফিচার ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

কাঁচা মরিচ ভিটামিনের এক চমৎকার উৎস। রয়েছে নানা পুষ্টিগুণও। আধা কাপ পরিমাণ কুচি কাঁচা মরিচে প্রায় ৮০০ ইউনিটের বেশি ভিটামিন এ রয়েছে। আর ভিটামিন এ দৃষ্টিশক্তির জন্য ভালো, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এ ছাড়া ভিটামিন কে রয়েছে এতে। সব ধরনের মরিচেই আছে ক্যাপসেইসিন নামের একটি উপাদান। এই ক্যাপসেইসিন প্রদাহ ও বাতের ব্যথা কমায়, ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করে। আমেরিকার ইনস্টিটিউট অব ক্যানসার রিসার্চ বলছে, টাটকা সবুজ কাঁচা মরিচে যে ক্যাপসেইসিন আছে, তা ক্যানসার কোষের বৃদ্ধি রোধ করতে পারে। তাই কাঁচা মরিচে কেবল ঝালই নেই, আছে নানা উপকারও।

গবেষকেরা বলছেন, কাঁচা মরিচের ভিটামিন সি তাপ, অতিরিক্ত আলো ও বাতাসের কারণে একটু একটু করে হারায়। তাই তাজা কাঁচা মরিচ না খেতে পারলে তা ঠান্ডা ও অন্ধকার জায়গায় সংরক্ষণ করুন। এ জন্য বাজার থেকে আনা তাজা কাঁচা মরিচ জিপার ব্যাগে মুখ আটকে ফ্রিজে রাখুন এবং তিন-চার দিনের মধ্যেই শেষ করতে চেষ্টা করুন।

প্রতি বছর আবহাওয়ার কারণে জুলাই থেকে অক্টোবর—এই চার মাস কাঁচা মরিচের ফলন ভালো হয় না। এ সময় কাঁচা মরিচের উৎপাদন কমে আসে। দাম বেড়ে যায়। সম্প্রতি কাঁচা মরিচের আকাশছোঁয়া দাম বৃদ্ধির পেছনে অদৃশ্য হাত কাজ করেছে। জানা গেছে, এবার মৌসুমের শুরুতে প্রচণ্ড খরায় মরিচের তেমন ফলন হয়নি। অন্যদিকে গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে কাঁচা মরিচের গাছ মরে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ক্ষেতের গাছে এখন মরিচ নেই। এজন্য দাম বেড়ে গেছে, এমনটিই জানাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। এরই মধ্যে কাঁচা মরিচ কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। তবে যারা এর আগে বেশি করে কাঁচা মরিচ কিনে রেখেছেন কিংবা আরও দাম বাড়ার আগে যারা বেশি করে কিনতে চাচ্ছেন, তারা চাইলে সেগুলো দীর্ঘদিনের জন্য সংরক্ষণ করতে পারেন। জেনে নিন কাঁচা মরিচ দীর্ঘদিন সংরক্ষণের সহজ পদ্ধতি

 

কাঁচা মরিচ গুঁড়া

হলুদের গুঁড়া, শুকনা মরিচের গুঁড়া হয় এটা সবার জানা। তবে কাঁচা মরিচেরও যে গুঁড়া হয় সেটা অনেকেরই হয়তো জানা নেই। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রান্নার কাজে দরকারী এক উপাদান কাঁচা মরিচ। যেকোনো ধরনের তরকারি, সালাদ কিংবা অন্যান্য অনেক খাবারেই এটি ব্যবহার হয়ে থাকে।  দীর্ঘদিন কাঁচা মরিচ গুঁড়া ঘরে সংরক্ষণ করুন। এতে করে দাম বেশি হোক বা কম আপনাকে আর মাস ছয় কিনতেই হবে না।

প্রথমে কাঁচা মরিচ ভালোভাবে ধুয়ে নিন। ধোয়া হলে চার ফালি করে কাটুন। এবার একটি ট্রেতে শুকাতে দিন। চার থেকে পাঁচ দিন এভাবে শুকিয়ে নিন। ভালোভাবে শুকিয়ে গেলে গুঁড়া করে নিন। গুঁড়াগুলো আবার একটু শুকিয়ে বায়ু নিরুদ্ধ পাত্রে রেখে সারা বছর সংরক্ষণ করুন।

 

জিপার লক

পচে যাওয়ার ভয়ে অনেকেই অল্প করে কাঁচা মরিচ কেনেন। যারা এক সপ্তাহ পর্যন্ত রেফ্রিজারেটরে সংরক্ষণ করতে চান, তাঁরা জিপ লক ব্যাগ ব্যবহার করতে পারেন। কাঁচা মরিচ বেশি দিন সংরক্ষণ করে রাখতে চাইলে বাতাস চলাচল করে না—এমন জিপার লক ব্যাগ দারুণ কার্যকর। তবে এতে মরিচ রাখার আগে অবশ্যই বোঁটা ছাড়িয়ে নিতে হবে। এরপর তা জিপার লক ব্যাগে ভরে রাখতে হবে। এরপর সেই ব্যাগ রেফ্রিজারেটরে রাখতে হবে। সেখান থেকে প্রয়োজনমতো সময়ে বের করে ব্যবহার করতে পারবেন। এভাবে সংরক্ষণ করলে কাঁচা মরিচ এক সপ্তাহের বেশি সতেজ থাকে।

 

অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল

কাঁচা মরিচ পচে যাওয়া থেকে রক্ষা করতে অ্যালুমিনিয়াম ফয়েলে মুড়িয়ে রেফ্রিজারেটরে রাখতে পারেন। একটি প্লেটে কাঁচা মরিচ রাখুন এবং পুরো প্লেট ফয়েল পেপারে মুড়িয়ে ফ্রিজে রাখুন। ছয় থেকে সাত ঘণ্টা রাখার পর তা বের করে এনে হিমায়িত মরিচগুলো বায়ুরোধী কোনো পাত্রে রেখে দিন। ওই পাত্র রেফ্রিজারেটরে রাখুন। এভাবে মরিচ দুই মাস পর্যন্ত সতেজ রাখতে পারবেন।

 

বায়ুরোধী পাত্র

রেফ্রিজারেটরে রাখা মরিচ পচে যাওয়া ঠেকাতে বায়ুরোধী পাত্র ব্যবহার করতে পারেন। বায়ুরোধী পাত্রের মধ্যে দুই স্তরে কিচেন টাওয়েল (কিচেন টাওয়েল কিছুটা পেপার ন্যাপকিনের মতো, যেটি রোল করা অবস্থায় কিনতে পাওয়া যায়) রাখুন। মরিচের বোঁটা ছাড়িয়ে এর ভেতর রাখুন। এর ওপরে আরেক স্তরের কিচেন টাওয়েল রাখুন। এরপর ভালো করে পাত্রের মুখ আটকে দিন। মরিচের আর্দ্রতা শুষে নেবে টাওয়েল। এতে মরিচ দীর্ঘদিন সতেজ থাকবে। এভাবে ২০ থেকে ২৫ দিন মরিচ সংরক্ষণ করা যায়।

(ঢাকাটাইমস/১২ জুলাই/আরজেড)