রাজধানীর সড়কে গণপরিবহন সংকট, ভোগান্তিতে যাত্রীরা

প্রকাশ | ১২ জুলাই ২০২৩, ১৩:৪৫ | আপডেট: ১২ জুলাই ২০২৩, ১৩:৫৮

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস

একইদিনে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের পাল্টাপাল্টি সমাবেশকে কেন্দ্র করে বুধবার সকাল থেকে রাজধানীতে সীমিত হারে চলছে গণপরিবহন। ফলে ভোন্তিতে পড়েছে গণপরিবহনে চলাচলকারী সাধারণ মানুষ। অন্য দিকে রাজধানীর ফুটপাতগুলো দখল করে বসা হকাররাও সকাল থেকে দোকান খুলেনি।

 

মানুষের ‘ভোটাধিকার’ আদায়ের লক্ষ্যে আজ বুধবার রাজধানীর নয়াপল্টনে সরকার পতনের এক দফার চূড়ান্ত আন্দোলনের ঘোষণা দিতে যাচ্ছে বিএনপি। রাজধানীর ১২টি জায়গা থেকে যুগপৎভাবে একই ঘোষণা দেবে গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২ দলীয় জোট, এলডিপি, গণ অধিকার পরিষদ, গণফোরাম, এবি পার্টিসহ ৩৭টি রাজনৈতিক দল ও জোট। অন্য দিকে ‘সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে’ বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ গেটে শান্তি সমাবেশ করবে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ। এদিকে এই সমাবেশ ঘিরে দীর্ঘকাল পর ঢাকা শহরের পাড়া-মহল্লায় মাইকিংসহ নানামুখী প্রচারও চালিয়েছে বিএনপি।

 

বুধবার রাজধানীর কল্যাণপুর, শ্যামলী, শিশু মেলা, কলেজগেট, আসাদগেটসহ বেশ কিছু বাস পয়েন্ট ঘুরে গাড়ি সংকটে মানুষের ভোগান্তির চিত্র দেখা গেছে।

 

সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রতিটা বাস পয়েন্টে যাত্রীদের ভিড় লেগে আছে। গাড়ি এলেই অপেক্ষমান যাত্রীরা কে কার আগে উঠবেন হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন। অনেকেই আবার ঝুঁকি নিয়ে ঝুলে পরছেন গাড়ির গেটে। এদিকে দীর্ঘ সময় পর দুয়েকটি গাড়ি এলেও তাতে আগে থেকেই গেটে ঝুলছেন যাত্রীরা। অধিকাংশ গণপরিবহন থামছে না বাস পয়েন্টে। যাত্রীর চাপে বাধ্য হয়ে নির্ধারিত বাস স্টপেজে না থেমে ফাঁকা জায়গায় গিয়ে থামছে।

বাসের অপেক্ষায় শ্যামলী বাস স্টপেজে দাড়িয়ে থাকা মুসা সোহান বলেন, বিএনপির সমাবেশের কারণে গাড়ি কম চলছে। অনেকক্ষণ চেষ্টা করেও গাড়িতে উঠতে পারছি না। গেটে পর্যন্ত মানুষ ঝুলছে। 

আরেকজন যাত্রী আলী আহমেদ বলেন, বিএনপির সমাবেশের কারণে গাড়ি কম। গাড়ির জন্য দাঁড়িয়ে থেকে গাড়িতে উঠতে না পেরে এখন হেঁটেই যাচ্ছি।  

বিআরটিসির বাসচালকের সহকারী আওলাদ হোসেন ঢাকা টাইমসকে বলেন, কিছু রাস্তা দিয়ে পরিবহন যেতে দিচ্ছে না পুলিশ। যাত্রী আছে, কিন্তু গাড়ি কম। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সমাবেশের কারণেই আজ পরিবহন কম।

গুলিস্তান-ধামরাই গাড়ির চালকের এক সহকারী বলেন, বিএনপির সমাবেশের কারণে অনেকেই গাড়ি বের করেনি। কখন কী ঝামেলা হয় বলা তো যায় না। এই কারণে গাড়ি কম।

গাবতলী লিঙ্ক ৮ নম্বর পরিবহনের চালকের এক সহকারী বলেন, আমিন বাজার থেকে গাড়ি ঢাকার ভেতরে আসতে বাধা দিচ্ছে পুলিশ। আর গাড়ি চালকরা নিজেরাও আসতে চাইছে না। কারণ কখন কী হয়ে যায়! যদি ঝামেলা হয় গাড়িতে আগুন দেয় তখন কী হবে! তাই মালিকপক্ষ গাবতলী থেকেও খুব একটা গাড়ি ছাড়ছে না।

এদিকে গাড়ি সংকটের কারণ জানতে চাইলে বাংলাদেশ পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব এনায়েত উল্যাহ মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি ঢাকাটাইমসের এই প্রতিবেদকের প্রশ্ন শুনে ব্যস্ত আছি বলে ফোন রেখে দেন।

 

এদিকে রাজধানীর নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপিকে শর্তসাপেক্ষে সমাবেশ করার অনুমতি দিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। বুধবার দুপুর ২টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত বিএনপিকে সমাবেশ করার সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ডিএমপির সদরদপ্তর থেকে দেওয়া এক চিঠিতে ২৩টি শর্তসাপেক্ষে সমাবেশ করার এই অনুমতি দেওয়া হয়।

নয়াপল্টনে বুধবারের এই সমাবেশ ঘিরে দীর্ঘ দিন পর ঢাকা শহরের পাড়া-মহল্লায় মাইকিংসহ নানামুখী প্রচার চালানো হয়। সোমবার থেকে দলটির এমন প্রচার দেখা গেছে।

মাইকিংয়ে সবাইকে সমাবেশে আসার আহ্বান জানাচ্ছে বিএনপি। বুধবারের এই সমাবেশ থেকে এক দফা আন্দোলেনের চূড়ান্ত কর্মসূচি ঘোষণা করার কথা বলেছে দলটি।

বিএনপির সমাবেশ নিয়ে মাইকে এমন প্রচার নিকট অতীতে দেখা যায়নি। নয়াপল্টনের পাশের একটি গলিতে এমন প্রচারণা চলাকালীন কথা হয় ঢাকা দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আ ন ম সাইফুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘এক যুগ পর সমাবেশ ঘিরে আমরা মাইকে পাড়া-মহল্লায় প্রচার করতে পারছি। আন্দোলনে আলো আসবে। এই যাত্রা বিজয়যাত্রায় পরিণত হবে। এই রাজনৈতিক অধিকার আমরা অর্জন করেছি।’

(ঢাকাটাইমস/১২জুলাই/জেএ/কেআর/কেএম)