ডিম খাওয়া ছাড়লে শরীরে যেসব সমস্যা হতে পারে

প্রকাশ | ১৬ জুলাই ২০২৩, ১১:০০ | আপডেট: ১৬ জুলাই ২০২৩, ১১:২৩

ফিচার ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

ঋতু পরিবর্তনের সময়ই মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা একটু দুর্বল হয়ে পড়ে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই শরীরে নানাবিধ জীবাণুর আক্রমণ বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে ডেঙ্গু, করোনার উপদ্রব তো আছেই।

বর্ষাকালে শরীর সুস্থ রাখার জন্য উপযুক্ত খাবার খাওয়া জরুরি। প্রতিদিনের খাবারে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফ্যাট এবং ভিটামিনসের যোগান যদি ঠিকঠাক না থাকে তাহলেই সহজে বিভিন্ন রোগ ধরে শরীরকে। এমতাবস্থায় সুস্থ থাকতে বিশেষজ্ঞরা দিচ্ছেন বিশেষ পরামর্শ। আমাদের আশপাশে প্রতিনিয়ত ভাইরাস-ব্যাকটেরিয়ারা ঘোরাঘুরি করছে। চোখে দেখা যায় না এমন ক্ষতিকারক এই ভাইরাস-ব্যাকটেরিয়াই শরীরের বেশিরভাগ রোগের পেছনে দায়ী। এদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য শরীরে শক্ত-সামর্থ্য রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা দরকার।

স্বাস্থ্য সুরক্ষায় শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ প্রোটিনের জন্য চিকিৎসক থেকে পুষ্টিবিদ, সকলেই প্রতিদিন একটি করে ডিম খাওয়ার পরামর্শ দেন। বেশিরভাগ পুষ্টিকর উপাদান প্রাকৃতিকভাবে যেসব খাবারে সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় তার মধ্যে অন্যতম হলো ডিম। যেমন- ডিমে আছে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন, ভিটামিন এ, ডি, বি এবং বি-টুয়েলভ্। এছাড়াও ডিমে আছে লুটেইন ও যিয়াস্যানথিন নাম দুটি প্রয়োজনীয় উপাদান যা বৃদ্ধ বয়সে চোখের ক্ষতি ঠেকাতে সাহায্য করে।

এছাড়া মিনারেল, ফসফরাস, আয়রন, জিংক, ম্যাঙ্গানিজসহ সব উন্নত পুষ্টি উপাদান থাকায় ডিমের গুরুত্ব অনেক। পেশির গঠনের জন্য ডিম অত্যন্ত উপযোগী। পেশি সুস্থ সবল রাখতে হলে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন প্রয়োজন শরীরে। সুপারফুড ডিম মস্তিষ্কের টিস্যু গঠন ও মেধা বিকাশে সহায়তা করে।

 

ডিম হলো খুব ভাল ভিটামিনের উৎস প্রকৃতির উন্নতম ‘সুষম খাদ্য’। কারণ ডিমের কুসুমের ভেতর নিহিত অনেক পুষ্টি আমাদের শরীর নিতে পারে সহজে। পুরো ডিমে প্রচুর নিউটিন ও জিয়োজ্যানথিন থাকে। নিউটিন ও জিয়োজ্যানথিনের ক্যারিটিনয়েড আপনাকে স্ট্রোক মোকাবেলা করতে সাহায্য করে, ঘা সারিয়ে তোলে এবং বার্ধক্যজনিত ক্ষয়কে রুদ্ধ করে। মারিয়া লুজ ফার্নান্দেজ পিএসডি কানেকটিকাট ইউনিভার্সিটির পুষ্টি বিভাগের প্রধান এটাই বলেন।

ইদানীং অবশ্য অনেকেই ফাস্টফুড খাবারদাবারের প্রতি ঝুঁকছেন। ফলে মাছ, মাংসের সঙ্গে ডিম খাওয়াও বন্ধ। ওজন বেড়ে যাওয়ার ভয়ে, কোলস্টেরলের ভয়ে কিংবা উচ্চ রক্তচাপের ভয়ে অনেকেই ডিম খেতে চান না। কিন্তু সত্যিই কি ডিম এসব সমস্যা তৈরি করে? সাম্প্রতিক বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, এর বিপরীত তথ্য। বরং বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডিমের মতো এত পুষ্টিকর খাবার প্রকৃতিতে কমই আছে।

এক দিনে দু’টো ডিম খেলে কোনও অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। কিন্তু ডিম খাওয়া বন্ধ করে দিলে কোনও সমস্যা হতে পারে কি?

ডিম হল নানা ধরনের পুষ্টিগুণে ঠাসা। শরীরে সেই উপাদানগুলির ঘাটতি পূরণ করতে ডিম খাওয়া অবশ্যই জরুরি। কিন্তু ডিম খাওয়া বন্ধ করে দিলে শরীরে প্রোটিন, মিনারেলসের মতো অত্যন্ত উপকারী এবং প্রয়োজনীয় উপাদানের অভাব ঘটবে। পর্যাপ্ত পুষ্টির অভাবে প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া, পেশি ক্ষয়ের মতো নানা সমস্যা দেখা দিতে শুরু করে। সেই সঙ্গে শারীরিক দুর্বলতা তো রয়েছেই। ডিম শরীর চাঙ্গা রাখতে সাহায্য করে। আর কী কী সমস্যা হতে পারে ডিম খাওয়া ছাড়লে?

 

একটি ডিমে থাকে আপনার প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় কোলিন ৩৫%। কোলিন আপনাকে আলজিমার্স রোগ থেকে দূরে রাখে। ডিমে ভিটামিনগুলো বেশ সুষমভাবে সন্নিবেশিত থাকে।

ডিম কিন্তু আপনার হার্টের ক্ষতি করে না। এ রকমই বলছেন বিশেষজ্ঞরা। প্রচলিত ধারণা ভেঙ্গে দিয়ে বিজ্ঞানীরা দেখছেন ডিম আপনার শরীরে ভাল কোলেস্টেরল অর্থাৎ এইচডিএলকে বাড়ায়। আপনার হার্ট ও চোখের স্বাস্থ্যের জন্য যা কিনা অতীব উপকারী।

একটা ডিমে প্রতিদিনে ৬ পুরো গ্রাম প্রোটিন থাকে। প্রতিদিনের প্রোটিনের চাহিদা তাই একটা ডিমেই অনেকটা ঘুচে যায়।

ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে শরীরে প্রোটিন পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকা জরুরি। ডিম হল প্রোটিনের সমৃদ্ধ উৎস। ফলে ডিম যদি রোজের খাবারে না থাকে, সে ক্ষেত্রে প্রোটিনের ঘাটতি দেখা দেয়। আর সেই ঘাটতির হাত ধরেই ওজন বাড়তে থাকে।

ডিমে রয়েছে লুটেইন, জেক্সানাথিন নামক অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট। যা দৃষ্টিশক্তি ভাল রাখে। ডিম না খেলে চোখের নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে।

হৃদ্‌যন্ত্রের খেয়াল রাখে ডিম। প্রতিদিন ডিম খাওয়ার অভ্যাসে হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি কমে। ডিম না খেলে সেই ঝুঁকি বাড়তে পারে।

(ঢাকাটাইমস/১৬ জুলাই/আরজেড)