নির্বাচন সামনে রেখে ব্যাপক রদবদল

প্রকাশ | ১৭ জুলাই ২০২৩, ০৮:৪৪ | আপডেট: ১৭ জুলাই ২০২৩, ১২:৫৪

রুদ্র রাসেল, ঢাকাটাইমস

বড় ধরনের রদবদল চলছে প্রশাসন ও পুলিশে। গত ১০ দিনের ব্যবধানে শতাধিক কর্মকর্তাকে বদলি ও পদায়ন করা হয়েছে। এর মধ্যে অর্ধেকের বেশি পুলিশ কর্মকর্তা। অতিরিক্ত সচিব ও উপসচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তাদেরও বদলি করা হয়েছে। এ তালিকায় পুলিশ ও প্রশাসনের আরও কর্মকর্তারা রয়েছেন। শিগগিরই আরও রদবদল করা হবে বলে আভাস পাওয়া গেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, চলতি মাসে ৩২ জেলা প্রশাসককে (ডিসি) বদলি করা হয়েছে। সেসব জেলায় নিয়োগ দেওয়া হয়েছে নতুন ডিসি। দপ্তর পরিবর্তন হয়েছে সচিব ও উপসচিবসহ বিভাগীয় কমিশনার পদ মদমর্যাদার ২০ জনের বেশি কর্মকর্তার। রবিবারও ডিআইজি ও অতিরিক্ত ডিআইজি পদমর্যাদার ৫১ কর্মকর্তাকে বদলি ও পদায়ন করা হয়েছে। এর তিন দিন আগেও ২৬ পুলিশ কর্মকর্তাকে বদলি ও পদায়ন করা হয়। কয়েকটি জেলায় নিয়োগ পেয়েছেন নতুন পুলিশ সুপারও।

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র বলছে, পুলিশ সুপার পদসহ পুলিশের বেশকিছু পদে পরিবর্তন আসতে পারে। অফিসার ইনচার্জ (ওসি) পর্যায়েও এ রদবদল আসবে। ইতোমধ্যেই ঢাকা মহানগরসহ দেশের বিভিন্ন থানায় ওসি পদে রদবদল আসতে শুরু করেছে।

এদিকে নির্বাচনের মাত্র ছয় মাস আগে এমন রদবদলকে ‘ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং’ বলে মনে করছে রাজপথের বিরোদী দল বিএনপিসহ তাদের সমমনা সরকারবিরোধী দলগুলো। তবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো বলছে, ‘এটি রুটিন ওয়ার্ক। এর সঙ্গে নির্বাচনি কৌশলের কোনো সম্পর্ক নেই।

সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো বলছে, নির্বাচনকালীন সময়ে পুলিশ ও প্রশাসন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অধীনে থাকবে। ইসি চাইলে তাদের মতো করে প্রশাসন ও পুলিশের কর্মকর্তাদের বদলি ও পদায়ন করতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে এ রদবদল নির্বাচনে কোনো প্রভাব ফেলতে পারবে না। যদিও স্বাভাবিকভাবেই নির্বাচনের আগে প্রায় প্রতিটি সরকারই প্রশাসনকে ঢেলে সাজিয়ে থাকে।

এদিকে বদলি ও পদায়ন প্রশাসনের নিয়মিত কাজের অংশ হলেও প্রাক-নির্বাচনি এই সময়ে এত বেশি পরিমাণ বদলি ও পদায়ন কেন- উঠেছে সে প্রশ্নও।

জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নির্বাচনের আগে প্রায় প্রতিটি সরকারই প্রশাসন নিজের মতো করে সাজাতে চায়। হয়তো এটি তার অংশ। তবে নির্বাচন কমিশনই পারে নির্বাচনকালীন সময়ে এতে হস্তক্ষেপ করে এই রদবদল ছাপিয়ে নিরপেক্ষ ভোটের স্বার্থে নিরপেক্ষতা বজায় রেখে নতুন রদবদলের মাধ্যমে প্রভাবমুক্ত নির্বাচন উপহার দিতে। নইলে প্রশাসনিক কাঠামো কলাপস  (ভেঙে পড়া) করতে পারে।

এই রদবদলকে রুটিন ওয়ার্ক (নিয়মিত কার্যক্রম) বা স্বাভাবিক বলে মনে করছেন জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বিভাগের অধ্যাপক ড. মুসলেহ উদ্দিন আহমেদ। জানতে চাইলে তিনি ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘হয়ত নির্বাচনকেন্দ্রীক টেস্টকেস (পরীক্ষামূলক পদক্ষেপ) হতে পারে এটি। হয়তোবা কর্মকর্তাদের পারফরম্যান্স দেখছে বা সরকার যাচাই করছে। বদলির বিষয়টি জেলা প্রশাসনে বেশি হচ্ছে। ২/৩ মাসেও কাউকে কাউকে বদলি করা হচ্ছে।’

এই জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ আরও বলেন, ‘প্রশাসনের গতিশীলতার জন্য ফিল্ড লেভেল (মাঠ পর্যায়) অ্যাডমিনিস্ট্রেশন পারফর্ম করার জন্য, তাকে (প্রশাসন) কাজ করানোর জন্য এমনটি হতে পারে। তবে সিভিল সার্ভিসের একটি নিয়মনীতি আছে। কোনো কর্মকর্তার পদায়নের পর ২-৩ বছর কাজ করতে দেওয়া উচিত, যদি তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো দুর্নীতি বা অনিয়মের অভিযোগ না থাকে। আর থাকলেও তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়াসহ অন্য পদক্ষেপও নেওয়া যায়।’

এক দিনে ১৬ ডিআইজি ৩৫ অতিরিক্ত ডিআইজিকে বদলি-পদায়ন

একযোগে পুলিশের ১৬ জন উপ-পুলিশ মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) ও ৩৫ জন অতিরিক্ত ডিআইজিকে বদলি-পদায়ন করে রবিবার আলাদা দুটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এসব কর্মকর্তার মধ্যে- রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ ও খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশে নতুন কমিশনার পদায়ন করা হয়েছে। রংপুর ও রাজশাহী রেঞ্জে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে নতুন ডিআইজিকে।

বদলি ও পদায়নকৃত কর্মকর্তাদের মধ্যে- সিআইডির মো. আবু কালাম সিদ্দিককে ট্যুরিস্ট পুলিশের ডিআইজি, সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি (ডিআইজি হিসেবে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) এ কে এম নাহিদুল ইসলামকে সিআইডির ডিআইজি, ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (ডিআইজি হিসেবে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) বিপ্লব বিজয় তালুকদারকে রাজশাহী মহানগরী পুলিশের পুলিশ কমিশনার, বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি এস এম আক্তারুজ্জামানকে ঢাকা পুলিশ স্টাফ কলেজের ডিআইজি, হাইওয়ে পুলিশের ডিআইজি মোজাম্মেল হককে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার, খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. মাসুদুর রহমান ভূঞাকে হাইওয়ে পুলিশের ডিআইজি, রাজশাহী মহানগরী পুলিশের পুলিশ কমিশনার আনিসুর রহমানকে রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি, রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি মো. আবদুল বাতেনকে রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি, রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি মোহা. আবদুল আলীম মাহমুদকে অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের ডিআইজি এবং আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের ডিআইজি মো. জামিল হাসানকে বরিশাল রেঞ্জর ডিআইজি করা হয়েছে।

একই প্রজ্ঞাপনে পুলিশের বিশেষ শাখা এসবির রখফার সুলতানা খানমকে রাজশাহীর সারদা পুলিশ একাডেমির ডিআইজি, ডিএমপির যুগ্মকমিশনার মো. জাকির হোসেন খানকে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের ডিআইজি, পুলিশের বিশেষ শাখার অতিরিক্ত ডিআইজি (ডিআইজি হিসেবে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) মো. মনিরুজ্জামানকে এসবির ডিআইজি, পুলিশ সদরদপ্তরের অতিরিক্ত ডিআইজি (ডিআইজি হিসেবে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ আব্দুল্লাহীল বাকীকে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের ডিআইজি, টাঙ্গাইল পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারের কমান্ড্যান্ট (ডিআইজি) মো. ময়নুল ইসলামকে ঢাকা ট্রেনিং ড্রাইভিং স্কুলের কমান্ড্যান্ট (ডিআইজি) এবং ঢাকা ট্রেনিং ড্রাইভিং স্কুলের কমান্ড্যান্ট মো. নজরুল ইসলামকে টাঙ্গাইল পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারের কমান্ড্যান্ট (ডিআইজি) হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

এদিকে বদলিকৃত ৩৫ অতিরিক্ত ডিআইজির মধ্যে গাজীপুর মহানগরী পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মো. দোলোয়ার হোসেনকে রাজশাহীর সারদা পুলিশ একাডেমিতে, পুলিশ সদরদপ্তরের অতিরিক্ত ডিআইজ মারুফ হোসেন সরদারকে ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি, ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মুহাম্মদ সাইদুর রহমান খানকে পুলিশ স্টাফ কলেজের অতিরিক্ত ডিআইজি, ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি টুটুল চক্রবর্তীকে নৌ পুলিশে, পুলিশের বিশেষ শাখার অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ রাশিদুল ইসলাম খানকে ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি, পুলিশের বিশেষ শাখার অতিরিক্ত ডিআইজি মো. সাজ্জাদুর রহমানকে ময়মনসিংহ রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি, রাজশাহী মহানগরী পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মো. ফারুক হোসনকে পুলিশের বিশেষ শাখা এসবিতে, রাজশাহী মহানগরী পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার সামসুন নাহারকে পুলিশের বিশেষ শাখা এসবিতে, ময়মনসিংহ রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি আবিদা সুলতানাকে পুলিশের বিশেষ শাখা এসবিতে এবং রংপুর রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি এ এফ এম আনজুমান কালামকে পুলিশ সদরদপ্তরে পদায়ন করা হয়েছে।

একই প্রজ্ঞাপনে নৌ পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি পংকজ চন্দ্র রায়কে রংপুর রেঞ্জে, সিলেট রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি এম এ জলিলকে পুলিশ সদরদপ্তরে, খুলনা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. ইকবালকে অধিনায়ক কক্সবাজার ১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন, কক্সবাজার ১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক সৈয়দ হারুন অর রশীদকে সিলেট রেঞ্জে, সিলেট রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি নাবিলা জাফরিন রীনাকে হাইওয়ে পুলিশে, ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার লিটন কুমার সাহাকে সিলেট রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি, অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের অতিরিক্ত ডিআইজি আবদুল মান্নান মিয়াকে চট্টগ্রামে মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার, ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ মুসলিমকে অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটে, অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ হেমায়েতুল ইসলামকে রাজশাহী মহানগরী পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার এবং হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি জয়দেব চৌধুরীকে খুলনা রেঞ্জে বদলি করা হয়েছে।

এছাড়া পুলিশ সদরদপ্তরের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. হাসানুজ্জামানকে খুলনা রেঞ্জে, খুলনা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. আতিকুর রহমান মিয়াকে হাইওয়ে পুলিশে, রাজশাহী রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি নরেশ চাকমাকে ট্যুরিস্ট পুলিশে, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার ফয়সল মাহমুদকে রাজশাহী রেঞ্জে, র‌্যাবের পরিচালক চৌধুরী মঞ্জুরুল কবিরকে নোয়াখালী পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারে, নোয়াখালী পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারের অতিরিক্ত ডিআইজি দীন মোহাম্মদকে রাজশাহী রেঞ্জ রিজার্ভ ফোর্সের কমান্ড্যান্ট, রাজশাহী রেঞ্জ রিজার্ভ ফোর্সের কমান্ড্যান্ট মো. আব্দুর রাজ্জাককে বগুড়া ৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক, বগুড়া ৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক সৈয়দ আবু সায়েমকে ময়মনসিংহ রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি, পুলিশ স্টাফ কলেজের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. মেহেদুল করিমকে রংপুর রেঞ্জ রিজার্ভ ফোর্সের কমান্ড্যান্ট এবং রংপুর রেঞ্জ রিজার্ভ ফোর্সের কমান্ড্যান্ট এস এম আশরাফুজ্জামানকে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডিতে পদায়ন করা হয়েছে।

একই প্রজ্ঞাপনে বরিশাল ১০ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন ভূঁঞাকে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের পরিচালক, বরিশাল মহানগরী পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আবু আহাম্মদ আল মামুনকে বরিশাল ১০ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক, পুলিশের বিশেষ শাখা এসবির অতিরিক্ত ডিআইজি মোহা. আহমার উজ্জামান গাজীপুর মহানগরী পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি, রাজশাহীর সারদা পুলিশ একাডেমির অতিরিক্ত ডিআইজি মো. হামিদুল আলমকে বরিশাল মহানগরী পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এবং ঢাকা রেঞ্জ রিজার্ভ ফোর্সের কমান্ড্যান্ট মো. রেজাউল করিমকে অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের অতিরিক্ত ডিআইজি করা হয়েছে।

এর আগে ৬ জুলাই অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও সহকারী পুলিশ সুপার পদমর্যাদার ২৬ জন কর্মকর্তাকে বদলি ও পদায়ন করা হয়।

একই দিন ২জন অতিরিক্ত সচিব ও ৪ জন উপসচিবকে বদলি ও পদায়ন করে প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে সমবায় অধিদপ্তরের নিবন্ধক ও মহাপরিচালক ড. তরুন কান্তি শিকদারকে তথ্য ও যোগযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব এবং বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রেজাউল করিমকে ডাক ও টেলিযোগযোগ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব করা হয়েছে।

একইদিন পৃথক প্রজ্ঞাপনে স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের উপ-পরিচালক ডা. মো. মোস্তাফিজুর রহমানকে প্রেষণে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগে, জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের উপপরিচালক মো. সানিউল ফেরদৌসকে প্রেষণে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে, বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের প্রকল্প পরিচালক ব্যারিস্টার মো. গোলাম সারওয়ার ভূঁইয়াকে প্রেষণে তথ্য ও যোগযোগ প্রযুক্তি বিভাগে এবং জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের উপপরিচালক মামুন সরকারকে প্রেষণে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বদলি করা হয়েছে।

৩২ জেলায় নতুন ডিসি, বদলি-পদায়ন ২২ অতিরিক্ত সচিব উপসচিবের

গত ৬ জুলাই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মাঠ প্রশাসন-২ শাখার উপসচিব ভাষ্কর দেবনাথ বাপ্পি স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. আনিসুর রহমানকে ঢাকা জেলা প্রশাসক হিসেবে বদলি করা হয়েছে। জননিরাপত্তা বিভাগের উপসচিব মো. মোশাররফ হোসেন খানকে রাঙ্গামাটি জেলায়, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়রের একান্ত সচিব শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিনকে বান্দারবানে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিবের একান্ত সচিব (উপসচিব) মো. কায়ছারুল ইসলামকে টাঙ্গাইল জেলায় এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর একান্ত সচিব মু. আসাদুজ্জামানকে পাবনার জেলা প্রশাসক (ডিসি) হিসেবে বদলি করা হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা আরও হয়, পানিসম্পদ উপমন্ত্রীর একান্ত সচিব (উপসচিব) মো. আরিফুজ্জামানকে শরীয়তপুরের ডিসি হিসেবে বদলি করা হয়েছে। আর অর্থ বিভাগে সংযুক্ত উপসচিব সুরাইয়া জাহানকে লক্ষীপুরে, দুযোর্গ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রীর একান্ত সচিব (উপসচিব) খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমানকে কুমিল্লায়, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে সংযুক্ত উপসচিব শাহীনা আক্তারকে ফেনীতে এবং বিদ্যু’ বিভাগের উপসচিব আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলামকে গাজীপুরের ডিসি হিসেবে বদলি করা হয়েছে।

এর তিন দিনের মাথায় গত ৯ জুলাই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহা. রফিকুল ইসলামকে বরগুনা, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রীর একান্ত সচিব মোহাম্মদ আবরাউল হাছান মজুমদারকে যশোর, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের উপসচিব দেবী চন্দ্রকে হবিগঞ্জ, অতিরিক্ত শরণার্থী ও ত্রাণ প্রত্যাবাসন কমিশনার-২ মোহা. খালিদ হোসেনকে বাগেরহাট, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শহিদুল ইসলামকে বরিশাল এবং জননিরাপত্তা বিভাগে বদলির আদেশাধীন উপসচিব মুহাম্মদ নিজাম উদ্দীন আহাম্মেদকে ভোলার জেলা প্রশাসক করা হয়েছে।

একই প্রজ্ঞাপনে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব শাহেদ পারভেজকে নেত্রকোণা, আইনমন্ত্রীর একান্ত সচিব মো. নূর কুতুবুল আলমকে পটুয়াখালী, বিদ্যুৎ বিভাগে উপসচিব শেখ রাসেল হাসানকে সিলেট এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক মো. এহতেশাম রেজাকে কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে। তারা ২৪ ব্যাচের ৩ জন, ২৫ ব্যাচের ২ জন এবং ২৭ ব্যাচের ৫ জন প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, নতুন নিয়োগ পাওয়া ডিসিদের সবাইকে একইসঙ্গে মাঠে পাঠানো হবে। এর আগে আনুষাঙ্গিক প্রশিক্ষণ, ব্রিফিং শেষ করতে সপ্তাহ দুয়েক সময় লাগতে পারে।

এর আগে গত ১২ মার্চ ৮ জেলায় ডিসি পদে রদবদল করেছিল সরকার।

এদিকে গত ১০ জুলাই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মাঠ প্রশাসন-২ শাখার উপসচিব ভাস্কর দেবনাথ বাপ্পি স্বাক্ষরিত আলাদা দুটি প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের উপসচিব মো. শামীম হাসানকে মেহেরপুর জেলার জেলা প্রশাসক (ডিসি) হিসেবে বদলি করা হয়েছে। আর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক আব্দুল্লাহ আল খায়রুমকে শেরপুরের ডিসি, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের উপসচিব মো. ইমরান আহমেদকে জামালপুরের, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মো. আবু জাফর রিপনকে মুন্সীগঞ্জের, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসানকে রংপুরের, রেহেনা আক্তারকে মানিকগঞ্জের, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ন প্রকল্প-২ এর উপপ্রকল্প পরিচালক মো. মাহমুদুল হককে নারায়ণগঞ্জের এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রাণলয়ের উপসচিব কিসিঞ্জার চাকমাকে চুয়াডাঙ্গার ডিসি হিসেবে বদলি করা হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, চুয়াডাঙ্গার ডিসি মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খানকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপসচিব হিসেবে বদলি করা হয়েছে। আর মানিকগঞ্জের ডিসি মুহাম্মদ আব্দুল লতিফকে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের উপসচিব, শেরপুরের ডিসি সাহেলা আক্তারকে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে, রংপুরের ডিসি চিত্র লেখা নাজনীনকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে, জামালপুরের ডিসি শ্রাবন্তী রায়কে খাদ্য মন্ত্রণালয়ে এবং মেহেরপুরের ডিসি মোহাম্মদ আজিজুল ইসলামকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপসচিব হিসেবে বদলি করা হয়েছে।

রবিবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পৃথক প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, সিলেট বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. মোশাররফ হোসেনকে বদলি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব করা হয়েছে। মোশাররফ হোসেন বিসিএস ১৩তম ব্যাচের কর্মকর্তা। ২০২১ সালের ৭ নভেম্বর তিনি সিলেট বিভাগের কমিশনার হন।

পৃথক প্রজ্ঞাপনে সিলেট বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার করা হয়েছে অতিরিক্ত সচিব আবু আহমদ ছিদ্দিকীকে।

একই দিন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের আরেক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর একান্ত সচিব মো. গোলাম মওলাকে নওগাঁর জেলা প্রশাসক করা হয়েছে। মুন্সীগঞ্জের জেলা প্রশাসক কাজী নাহিদ রসুলকে গাইবান্ধায় একই পদে বদলি করা হয়েছে।

এছাড়া, ভোলার জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ নিজাম উদ্দীন আহাম্মেদকে শরীয়তপুরে এবং শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক আরিফুজ্জামানকে ভোলায় বদলি করা হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/১৭জুলাই/আরকেএইচ)