বিএনপির সমাবেশে ঢাবি থেকে চাকুরিচ্যুতির কারণ জানালেন মোর্শেদ হাসান

প্রকাশ | ২২ জুলাই ২০২৩, ১৭:৩৬

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস

পত্রিকায় কলাম লিখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চাকুরিচ্যুত হওয়া বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-প্রশিক্ষণ সম্পাদক ও ইউট্যাবের কেন্দ্রীয় মহাসচিব অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান আবেগতাড়িত কণ্ঠে নিজের বঞ্চনার কথা তুলে ধরেছেন। বলেন, ‘আমার ওপর কি মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে তা অনেকেই জানেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে কলাম লেখার কারণে কাউকে চাকুরিচ্যুত করা হয়নি, শুধু আমাকে চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে। আমি পত্রিকায় শুধু লিখেছিলাম শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন। এই কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমাকে অন্যায়ভাবে চাকুরিচ্যুত করেছে।’

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ৯ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খানকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট। পরে তিনি আদালতের দ্বারস্থ হন এবং তাকে চাকরি থেকে অপসারণের আদেশ কেনো অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করে হাইকোর্ট। পরে এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আইনী লড়াইয়ে গেলে বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

শনিবার বিকেলে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপির তিন সংগঠন যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের যৌথ উদ্যোগে ঢাকা বিভাগীয় তারুণ্যের সমাবেশে অধিকার ও ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হওয়ার ঘটনা অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমার স্ত্রী ব্রেন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হওয়া সত্ত্বেও আমাকে একদিনের নোটিশে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসা থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। অথচ আমার মামলা চলমান। মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত আমাকে বাসা থেকে বের করে দিতে পারে না। 
তিনি আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, আমার একমাত্র মেয়ে স্কুলে গিয়ে তার বাবার পরিচয় দিতে পারে না। তাকে তার সহপাঠীরা প্রশ্ন করলে সে বলতে পারে না। বাসায় এসে আমাকে জিজ্ঞেস করে বাবা তুমি কী করো? কিন্তু আমি মেয়েটাকে হাসিমুখে কোনো বলতে পারিনা। তবুও আমি আল্লাহর রহমতে এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাহসে বেঁচে আছি। কারণ তিনি আমার চাকুরিচ্যুত হওয়ার পরপরই ফোন করে বলেছেন চিন্তা করোনা আমরা আছি। আরো সাহস যুগিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সহ অনেকেই। সবকিছুর পরও আমি সবার সঙ্গে রাজপথে আছি। শেষ পর্যন্ত থাকবো ইনশাআল্লাহ। 

সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। যুবদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সভাপতিত্বে এতে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপি ঢাকা মহানগর উত্তরের আহবায়ক আমান উল্লাহ আমান, দক্ষিণের আহবায়ক আব্দুস সালাম, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী, ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ, ময়মনসিংহ বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, ফরিদপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, বিএনপির সহপ্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক মো. মোর্শেদ হাসান খান, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গুম পরবর্তী জেল খাটা সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলসহ বিগত আন্দোলনে বিএনপির যেসব নেতাকর্মী গুম খুনের শিকার হয়েছেন তাদের পরিবারের সদস্যরা। সমাবেশ যৌথভাবে পরিচালনা করেন যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল।

(ঢাকাটাইমস/২২জুলাই/জেবি/কেএম)