তাহলে কি মামলা হচ্ছে এডিসি হারুনের বিরুদ্ধে?

প্রকাশ | ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১০:৩৭

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস

রাজধানীর শাহবাগ থানা হেফাজতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দুই নেতাকে বেদম প্রহরের ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা হতে যাচ্ছে। এতে রমনা জোনের সাবেক এডিসি হারুন অর রশীদ (এপিবিএনে বদলি) এবং থানা পুলিশের কর্মকর্তা ও সদস্যদের আসামি করা হবে।

সোমবার শাহবাগ থানায় মামলাটি হতে পারে। এতে মামলা বাদী হবেন পুলিশি নির্যাতনে দাঁত হারানো ফজলুল হক হল ছাত্রলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন নাঈম।
রবিবার রাতে ঢাকাটাইমসকে এ তথ্য জানিয়েছেন পুলিশের নির্মম প্রহরের শিকার ছাত্রলীগের আরেক নেতা 
শরীফ আহমেদ মুনিম। এই মুনিম কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের বিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শহীদুল্লাহ হলের সাধারণ সম্পাদক।

ঢাকা টাইমসকে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের এ নেতা বলেন, আগামীকাল নাঈমের পরিবার দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী একটি মামলা করতে পারেন। যেখানে রমনা জোনের সাবেক এডিসি হারুনসহ যারা আমাদের নির্মমভাবে নির্যাতন করেছেন তাদেরকে আসামি করা হতে পারে।

এদিকে নাঈমের শরীরের অবস্থা আগের মতোই স্থিতিশীল রয়েছে বলে জানা গেছে। এই ছাত্রলীগ নেতার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে ফোন করা হলে অন্য একজন তা রিসিভ করেন। বলেন, 'তার শরীর আগের মতোই। এখন ঘুমাচ্ছেন।' মামলা করবেন কি না জানতে চাইলে ফোন রিসিভ করা ব্যক্তি বলেন, 'এবিষয়ে কাল জানতে পারবেন। পরিবারে এ নিয়ে আলোচনা চলছে।'

শহীদুল্লাহ হলের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদ মুনিম বলেন, 'বিধি বিধান ভেঙে থানার ভিতরে আমাদেরকে পেটানো হয়েছে, যা পুলিশ অমানবিক কাজ করেছে। থানা মানুষের নিরাপত্তার জায়গা, বাইরে কাউকে মারধর করলে থানায় নিয়ে নিরাপত্তা দেওয়া হয়। কিন্তু আমাদেরকে নির্মমভাবে মারা হলো। পুলিশ কর্মকর্তা হারুনকে বদলির নামে তামাশা হয়েছে। আমরা আশা করছি হারুনের শাস্তি হবে।'
মুনিম বলেন, 'একজন মানুষ শত অপরাধ করলেও আইনের রক্ষক কখনও এমন কাজ করতে পারেন না। যেটা এডিসি হারুন করলেন।'

ভুক্তভোগীরা মামলা বা অভিযোগ নিয়ে থানায় এসেছে কি না জানতে  বিষয়ে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর মোহাম্মদকে একাধিকবার ফোন করা হলে তিনি তা রিসিভ করেননি। তবে থানার ডিউটি অফিসার বলেন, 'এমন কেউ অভিযোগ নিয়ে আমাদের কাছে আসেননি।'

যা ঘটে: শনিবার শাহবাগে নারী ঘটিত একটি বিষয়ের জেরে রমনা জোনের এডিসি (ঘটনার পর এপিবিএনে বদলি) হারুন অর রশীদ ছাত্রলীগের দুই নেতাকে থানায় ধরে নিয়ে নির্মমভাবে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন।

ঘটনার পর তাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। থানা হেফাজতে মর্মান্তিক ওই ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছে ছাত্রলীগ। দেশের সবচেয়ে বড় ছাত্রসংগঠনটির বর্তমান ও সাবেক নেতারা এই ঘটনায় হারুনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। জানা গেছে,

ঘটনার দিন বিকালে হারুন ৩৩তম বিসিএসের এক নারী পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে আড্ডা দিচ্ছিলেন। ওই সময় নারী কর্মকর্তার স্বামী পরিচয় দেওয়া ৩১তম বিসিএসের প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা এবং ছাত্রলীগের সাবেক নেতা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির দুই নেতাকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে যান।

একপর্যায়ে সেখানে হারুনের সঙ্গে ওই কর্মকর্তার বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতি হয়। পরে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে ছাত্রলীগ নেতাদের আটক করে থানায় নিয়ে যায়। তখন শাহবাগ থানার পরিদর্শক তদন্ত এডিসি হারুনের সঙ্গে ছিলেন। পরবর্তীতে পুলিশের রাইফেলের বাট ও বুট দিয়ে বুক ও মুখে পাড়ানো হয় দুই ছাত্রলীগ নেতাকে। এতে আনোয়ার হোসেন নাঈমের মুখের সামনের অন্তত পাঁচটি দাঁত ভেঙে পড়ে যায়।

এদিকে হারুনকে বদলি করে প্রথমে পিওএম উত্তরে এবং পরে এপিবিএনে বদলি করা হয়। নির্যাতনের ঘটনা তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি তাদের কাজ শুরু করেছে।

(ঢাকাটাইমস/১০সেপ্টেম্বর/এসএস)