দুই ঘটনার অভিঘাতে হারিয়ে যান ভারতের এই সম্ভাবনাময়ী নায়িকা

প্রকাশ | ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১১:০২ | আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১১:৩০

বিনোদন ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

মাত্র ১০ বছর বয়সে শুরু মডেলিং। পরে সুপারহিট ছবি ‘এক দুজে কে লিয়ে’-এর নায়িকা। যে ভাবে ঝড়ের গতিতে উত্থান, সে ভাবেই মিলিয়ে যাওয়া ইন্ডাস্ট্রি থেকে। রক্ষণশীল পাঞ্জাবি পরিবারের এই মেয়ে দাপটের সঙ্গে অভিনয় করেছিলেন বলিউড এবং দক্ষিণী ছবিতে। তিনি একসময়ের রোমান্টিক নায়িকা রতি অগ্নিহোত্রী।

১৯৬০ সালের ১০ ডিসেম্বর রতির জন্ম উত্তরপ্রদেশের বরেলীতে। তার বয়স যখন ১০ বছর, সেসময় রতির বাবা কর্মসূত্রে চলে যান তৎকালীন মাদ্রাজ শহরে (বর্তমানের চেন্নাই)। মাদ্রাজের গুড শেপার্ড কনভেন্ট স্কুলের ছাত্রী ছিলেন রতি।

স্কুলের একটি নাটকে অভিনয়ের সময়ে তামিল পরিচালক ভারতীরাজার চোখে পড়ে যান রতি। তিনি ছিলেন দর্শকাসনে। রতির বাবার সঙ্গে কথা বলে তিনি অনুমতি চান। তার পরের ছবিতে মেয়েকে অভিনয় করতে দিতে রাজি হন রতির বাবা। কিন্তু শর্ত ছিল, সিনেমার শুটিং শেষ করতে হবে এক মাসের মধ্যে।

১৯৭৯ সালে রতির প্রথম বড় পর্দায় আত্মপ্রকাশ। তামিল ছবি ‘পুথিয়া ভারপুগাল’-এর মাধ্যমে। অভিনেতা ভাগ্যরাজেরও এটা ছিল প্রথম ছবি। তিনি রতিকে সাহায্য করেছিলেন তামিল উচ্চারণ আয়ত্ত করতে। যদিও ভাগ্যরাজের নিজের কণ্ঠই ডাবিং করা হয়েছিল।

রতির প্রথম ছবি সফল হয়। তিনি পরিচিতি পান নায়িকা হিসেবে। ক্রমশ তামিল ও অন্যান্য দক্ষিণী ভাষার জনপ্রিয় নায়িকা হয়ে ওঠেন তিনি। রতি নিজেও বলতেন, তিনি হৃদয়ের দিক দিয়ে একজন তামিল এবং মাদ্রাজ তার দ্বিতীয় ঘরবাড়ি। দক্ষিণী ছবির ইন্ডাস্ট্রিতে তিন বছরে মোট ৩২টি ছবিতে অভিনয় করেন তিনি।

দক্ষিণের ইন্ডাস্ট্রিতে কমল হাসান এবং রতি অগ্নিহোত্রী ছিলেন জনপ্রিয় জুটি। তাদের সেই রসায়ন হিন্দিতে ধরা পড়ে ‘এক দুজে কে লিয়ে’ ছবিতে। ১৯৭৯ সালে তেলেগু ছবি ‘মারো চরিত্র’-এর হিন্দি সংস্করণ ছিল, ১৯৮১ সালের ‘এক দুজে কে লিয়ে’। দুটোই ব্লকবাস্টার।

বলিউডেও জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন রতি। অভিনয় করেছেন ৪৩টির বেশি হিন্দি ছবিতে। আটের দশকে প্রথম সারির নায়িকাদের মধ্যে অন্যতম রতির সফল ছবিগুলোর মধ্যে আছে ‘ফর্জ অউর কানুন’, ‘কুলি’, ‘আপ কে সাথ’ এবং ‘হুকুমৎ’।

কেরিয়ারের মধ্যগগনে থাকতে থাকতেই বিয়ে। ১৯৮৫ সালে রতি বিয়ে করেন ব্যবসায়ী ও ইঞ্জিনিয়ার অনিল ভিরওয়ানিকে। নতুন জীবনে পা রাখার পরেই আবার ব্যক্তিগত জীবনে আঘাত রতির। প্রয়াত হন তার বাবা। এই দুই ঘটনার অভিঘাতে আটের দশকের শেষে রতি অভিনয় থেকে সরে যান। ১৯৮৬ সালে জন্ম হয় রতির একমাত্র ছেলে তনুজের। বর্তমানে তনুজ বলিউডের মডেল ও অভিনেতা।

স্বামীর বিরুদ্ধে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ এনেছিলেন রতি। ২০১৫ সালে ভেঙে যায় অনিল-রতির ২০ বছরের দাম্পত্য। যদিও তার বিরুদ্ধে স্ত্রীর অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন অনিল ভিরওয়ানি।

প্রায় দুই দশকের বিচ্ছেদের পরে রতি আবার ইন্ডাস্ট্রিতে ফেরেন ২০০১ সালে। ‘কুছ খাট্টি কুছ মিঠি’ ছবিতে তিনি কাজলের মায়ের ভূমিকায় অভিনয় করেন। পাশাপাশি আরও কিছু হিন্দি, তামিল, মালয়ালম এবং একটি বাংলা ছবিতেও অভিনয় করেন তিনি।

তারপর থেকে আবার বহু বছর ধরে অভিনয়ের বাইরে রতি। ২০০৮ সালের পরে তাকে অনেকদিন কাজ করতে দেখা যায়নি কোনো মাধ্যমেই। হয়তো আর ফিরবেনই না।

(ঢাকাটাইমস/১৮ সেপ্টেম্বর/এজে)