সাংবাদিক নাদিম হত্যার আসামি পদ ফিরে পেলেন তাঁতী লীগে

প্রকাশ | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:৩৬ | আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৪:১০

জামালপুর প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস
সাংবাদিক নাদিম হত্যা মামলার ১১ নম্বর আসামি ও বকশীগঞ্জ উপজেলা তাঁতী লীগের সভাপতি সহিদুর রহমান লিপন

জামালপুরের বকশীগঞ্জে সাংবাদিক গোলাম রব্বানী নাদিম হত্যা মামলার ১১ নম্বর আসামি সহিদুর রহমান লিপনকে ফের বকশীগঞ্জ উপজেলা তাঁতী লীগের সভাপতি পদে নিযুক্ত করে কমিটি অনুমোদন দিয়েছে জেলা তাঁতী লীগ।

অভিযুক্ত সহিদুর রহমান লিপন উপজেলার মালিরচর তকিরপাড়া গ্রামের মো. আব্দুল করিমের ছেলে।  

সোমবার জামালপুর জেলা তাঁতী লীগের আহ্বায়ক জাকির হোসেন রুকু এবং সদস্যসচিব আরমান হোসেন সাগর যৌথ স্বাক্ষরে আগামী ৩ বছরের জন্য সহিদুর রহমান লিপনকে বকশীগঞ্জ উপজেলা তাঁতী লীগের সভাপতি নিযুক্ত করে দলীয় প্যাডে ৭১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি অনুমোদন করেন।

হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি লিপনকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের উপজেলা শাখার সভাপতি পদে নিযুক্ত করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নিহত সাংবাদিক নাদিমের পরিবার। তাদের দাবি, সুষ্ঠু বিচারের স্বার্থে তাঁতী লীগ থেকে অভিযুক্ত লিপনকে বহিষ্কার করা হোক।


উল্লেখ্য, উপজেলার সাধুপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মাহমুদ আলম বাবুকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জেরে গত ১৪ জুন রাতে 

পেশাগত দায়িত্ব পালন শেষে বাসায় ফেরার পথে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন বাংলানিউজের জামালপুর জেলা প্রতিনিধি ও মানবজমিন পত্রিকার সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিম। ১৫ জুন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীনবস্থায় তিনি মারা যান।

এ ঘটনায় ১৮ জুন সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিমের স্ত্রী মনিরা বেগম বাদী হয়ে ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুলকে প্রধান আসামি করে ২২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ২৫ জনের বিরুদ্ধে বকশীগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, মামলার এজাহারে ১১ নম্বর আসামি করা হয় উপজেলা তাঁতী লীগের সভাপতি সহিদুর রহমান লিপনকে।

মামলায় উল্লেখ করা হয়, নাদিম হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নেয় তাঁতী লীগ নেতা লিপন। মৃত্যু নিশ্চিত করতে লিপন সর্বোচ্চ চেষ্টা চালায়।

সাংবাদিক নাদিমের স্ত্রী মনিরা বেগম বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নেওয়া এবং এজাহারভুক্ত আসামিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন তাঁতী লীগের উপজেলা শাখার সভাপতি পদে নিযুক্ত করায় আমরা বিস্মিত। মূলত হত্যাকাণ্ডের দায় থেকে মুক্ত করতেই সন্ত্রাসী লিপনকে তাঁতী লীগের লীগের উপজেলা শাখার সভাপতি করা হয়েছে। আমরা চাই, সুষ্ঠু বিচারের স্বার্থে তাঁতী লীগ থেকে অভিযুক্ত লিপনকে বহিষ্কার করা হোক।'

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন গণমাধ্যমে সাংবাদিক নাদিম হত্যাকাণ্ডে সহিদুর রহমান লিপনের সংশ্লিষ্টতা জোড়ালোভাবে উল্লেখিত হওয়ায় দলীয় ভাবমূর্তি প্রচণ্ডভাবে ক্ষুন্নের অভিযোগে এবং দলীয় শৃঙ্খলা ভঙের দায়ে মামলা দায়ের আগের দিন ১৭ জুন বকশীগঞ্জ উপজেলা তাঁতী লীগের সভাপতি পদে থেকে লিপনকে সাময়িক অব্যাহতি প্রদান করে জেলা তাঁতী লীগ।
জামালপুর জেলা তাঁতী লীগের সভাপতি জাকির হোসেন রুকু বলেন, 'সাংবাদিক নাদিম হত্যা মামলার আসামি হওয়ায় সহিদুর রহমান লিপনকে সাময়িক অব্যাহতি দিয়েছিলাম। নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা থাকতেই পারে। এখন তিনি জামিনে আছেন। সেকারণেই তাকে বকশীগঞ্জ উপজেলা তাঁতী লীগের সভাপতি পদে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।'

(ঢাকা টাইমস/১৯সেপ্টেম্বর/প্রতিনিধি/এসএ)