স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে তরুণ প্রজন্মকে দায়িত্ব নিতে হবে: মেয়র লিটন

প্রকাশ | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ২১:১৯

রাজশাহী ব্যুরো, ঢাকা টাইমস

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেছেন, আজকের তরুণরাই আগামীতে দেশ গড়বে। তারাই ভালো কিছু করবে। তারাই আগামীর জন্য নতুন করে পথ দেখাবে। দেশ ও জাতি তাদের হাতেই দিয়ে চলে যাব। যারা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা, শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ, পরবর্তীতে স্মার্ট বাংলাদেশ করবার মতো করে তৈরি হচ্ছে, তাদের অনেকগুলো দায়িত্ব নিতে হবে।

মঙ্গলবার রুয়েট অডিটোরিয়ামে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট) ছাত্রলীগের চতুর্থ বার্ষিক সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে, রুয়েট অডিটোরিয়ামের সামনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং ছাত্রলীগের দলীয় পতাকা উত্তোলন, বেলুন-ফেস্টুন ও পায়রা উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করা হয়।

সম্মেলনে উদ্বোধক হিসেবে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল এবং আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য, যুব মহিলা লীগের সদস্য ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ডা. আনিকা ফারিহা জামান অর্ণা।

এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, খালেদা জিয়া বলেছিলেন, আওয়ামী লীগকে শায়েস্তা করতে নাকি তার ছাত্রদলই যথেষ্ট। অপরদিকে আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা ছাত্রলীগের হাতে খাতা-কলম তুলে দিয়ে বলেছিলেন, আমার ছাত্রলীগ লেখাপড়া করবে, মানুষ হবে, দেশ গড়বে, তারপরে সময় পেলে তারা রাজনীতি করবে।

সর্বক্ষেত্রে দেশের উন্নয়ন হয়েছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার বলেন, আমরা কখনো কল্পনা করিনি বাংলাদেশে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে হবে, মেট্রোরেল হবে। দেশে পদ্মা সেতু হয়েছে, মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ঘুরছে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, কর্ণফুলী টানেলসহ অনেক উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে। এ সবকিছু আমাদের অহংকার ও গৌরবের, এগুলো সবই করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসব উন্নয়ন অন্যকেউ কোনদিন করতে চায়নি, করতও না।

সতর্কতার সঙ্গে ছাত্রলীগের নেতৃত্ব বাছাই করতে হবে জানিয়ে রাসিক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘ছাত্রসমাজ যাদের গ্রহণ করে না, যারা অছাত্র, বিবাহিত অথবা যারা মাদকাসক্ত এই সমস্ত ক্যাটাগরি বাদ দিয়ে ফ্রেস ছাত্রলীগ আমরা করতে চাই। ফ্রেস ছাত্রলীগ করার জন্য কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে যথেষ্ট সতর্কতার সঙ্গে নেতৃত্ব বাছাই করতে হবে।

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের শক্তিকে কেন্দ্রীভূত করার জন্য আমরা সম্মেলন করি না। বরং ছাত্রলীগের শক্তিকে বিকেন্দ্রীকরণের জন্য আমরা সম্মেলন করি। ছাত্রলীগের শক্তিকে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য আমরা সম্মেলনের আয়োজন করি। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানভেদে ছাত্ররাজনীতি পরিবর্তন ও পার্থক্য থাকা উচিত বলে আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। বিশেষ করে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাজনীতির চরিত্র, অপরদিকে একটি মেডিকেল কলেজ কিংবা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাজনীতির মধ্যে অবশ্যই কিছু পার্থক্য থাকা উচিত।’

 

তিনি বলেন, বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে, প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সেখানকার শিক্ষার্থীদের জন্য যে ধরনের বাস্তবতা রয়েছে, অ্যাকাডেমিক পরিবেশ, শিক্ষার্থীদের ধরন, সিলেবাস, সেখানকার শিক্ষার্থীদের সার্বিক যে প্রয়োজন রয়েছে, সেই প্রয়োজনের আলোকে বাংলাদেশের ছাত্ররাজনীতি ঢেলে সাজানোরও প্রয়োজন রয়েছে। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ উপর থেকে ছাত্ররাজনীতি আরোপ করে দেবে, সেই ছাত্ররাজনীতি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ বিশ্বাস করে না। আসুন গতানুগতিকার বৃত্ত ভেঙে আমরা নতুনের জয়গান গাই, নতুন ছাত্ররাজনীতি আমরা বাংলাদেশে নিশ্চিত করি।

ছাত্রলীগের এই নেতা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন নিয়ে এসেছেন, যে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের কথা বলছেন, একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার কথা বলছেন, যে কারণে আমরা মনে করি যারা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করছে, তাদের বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মকে নেতৃত্ব দেওয়ার জায়গায় যেতে হবে। আমরা যেন প্রধানমন্ত্রীর স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নে ছুটে চলি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যে লড়াই, সেই লড়াই বর্তমান সময়েও যেন আমাদের শিক্ষার্থীরা জারি রাখতে পারে।

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নির্দেশ, স্মার্ট বাংলাদেশ। উন্নত, আধুনিক, সৃজনশীল ও স্বনির্ভর স্মার্ট বাংলাদেশ বির্নিমানে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের অগ্রণী ভুমিকা পালন করতে হবে। বর্তমানে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প নেই। আগামী নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে পুনরায় শেখ হাসিনাকে বিজয়ী করতে হবে। অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের ধারাকে ধাবমান রাখতে হবে।

রুয়েট ছাত্রলীগের সভাপতি ইসফাক ইয়াসশির ইপুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বিশেষ বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সহসভাপতি আবু সাঈদ কনক, এনামুল হক তানান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ হীল বারী। সঞ্চালনা করেন রুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী মাহাফুজুর রহমান তপু। সম্মেলনে রুয়েট ছাত্রলীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মী ও পদপ্রত্যাশীরা উপস্থিত ছিলেন। সম্মেলনে প্রথম অধিবেশনে রুয়েট ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটিকে বিলুপ্ত ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন।

(ঢাকাটাইমস/১৮ সেপ্টেম্বর/ইএইচ)