নাটকটি আমাদের চোখ খুলে দিয়েছে, ‘অচলায়তনের অপ্সরী’ দেখে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী

প্রকাশ | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ২৩:৩৫ | আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ২৩:৫২

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

দৌলতদিয়া পতিতাপল্লীর সত্য ঘটনা অবলম্বনে গবেষণালব্ধ নাটক ‘অচলায়তনের অপ্সরী’ এর তৃতীয় মঞ্চায়ন হয়েছে।

মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মূল হলে এ নাটকের মঞ্চায়ন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। আরও উপস্থিত ছিলেন ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি ও পুলিশ থিয়েটারের প্রতিষ্ঠাতা হাবিবুর রহমান, গোপালগঞ্জ শিল্পকলা একাডেমির সভাপতি মো. সাদিসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও নাট্যজন।

প্রদর্শনী শেষে সংশ্লিষ্টদের প্রশংসায় ভাসান সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। বলেন, ‘শিল্পকলায় বিভিন্ন নাটকের প্রদর্শনীতে আসি, কিন্তু এ নাটকটি মন ছুয়ে গেছে। এটি দেখার সময় আমার মা, খালা, ফুফুকে মনে পড়েছে। মনে হয়েছে আমাদেরও তো এমন হতে পারতো। একমাত্র মা জানে তার সন্তানের বাবা কে, কিন্তু এই জায়গার মায়েরা জানে না তার বাবা কে। নাটকটি আমাদের চোখ খুলে দিয়েছে দিয়েছে।’

পুলিশ থিয়েটারের চতুর্থ প্রযোজনায় নাটকটি রচনা ও নির্দেশনা প্রদান করেছেন পুলিশ পরিদর্শক মো. জাহিদ রহমান। তিনি বলেন, , ‘নারী মায়ের জাতি। যেখানে সমাজে নারীর মর্যাদা প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা আমরা করে যাচ্ছি প্রতিনিয়ত সেখানে নারীর জন্য অমর্যাদা বয়ে আনে এমন একটি পেশা কেন? তারই আদ্যপান্ত বিশ্লেষণ এবং এই পেশাকে কেন্দ্র করে মানব মনে জাগ্রত হওয়া সকল প্রশ্নের উত্তর খোঁজার একটি সরলরৈখিক প্রয়াস দৌলতদিয়া পতিতাপল্লীর সত্য ঘটনাকে উপজীব্য করে আমাদের এই নাটক ‘অচলায়তনের অপ্সরী’।’

‘আমি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি অতিরিক্ত আইজিপি হাবিবুর রহমান স্যারের প্রতি। স্যার পরিকল্পনা করেছিলেন বাংলাদেশ পুলিশ থিয়েটারের প্রযোজনায় এমন একটি নাটক মঞ্চে আনার। স্যারের সেই পরিকল্পনার ফসল “অচলায়তনের অপ্সরী'। কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি নাটকের সকল কলাকুশলীবৃন্দের প্রতি। তাদের সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টার কারনে নাটকটিকে মঞ্চে আনা সম্ভব হয়েছে’-যোগ করেন তিনি।

এদিন হলভর্তি দর্শক নাটকটি উপভোগ করেন। প্রদর্শন শেষে ঢাকা টাইমসের কাছে  নাটকটির উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন তারাও।

নাটকের গল্পে দেখা যায়, দৌলতদিয়া পতিতাপল্লীতে বিক্রি হওয়া এক তরুণী নিজেকে বাঁচাতে গিয়ে উপলব্ধি করেন প্রভাবশালীদের দ্বারা তৈরি এটি একটি শক্ত অচলায়তন। উপলব্ধি করেন কোনো স্বাধীনতা, কনো মানবাধিকার নেই এখানকার বাসিন্দাদের। এমনকি এদের সন্তানরাও এই অচলায়তনে বন্দি। এরই মধ্যে তিনি দেখা পান একজন পুলিশ অফিসারের। যিনি এগিয়ে আসেন এদের মানবাধিকার রক্ষায়। মৃতদের লাশ নদীতে ভাসিয়ে দেয়ার শতবর্ষী রেওয়াজ ভেঙে, সামাজিক বাধার প্রাচীর টপকিয়ে ব্যবস্থা করেন লাশের জানাজা এবং কবরস্থ করার। প্রচেষ্টা চালান তাদের সন্তানদের সমাজের মূল ধারায় নিয়ে আসতে। পুলিশ অফিসারকে সহায়তা করায় প্রভাবশালীদের রোষাণলে পড়ে মেয়েটি। খুনের অভিযোগে ফাঁসিয়ে দেওয়া হয় তাকে।

বাংলাদেশ পুলিশ থিয়েটার অ্যান্ড কালচারাল ক্লাবের সদস্যবৃন্দরা নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন, তামান্না তমা, বিশ্বনাথ চক্রবর্তী, বিনয় কুমার, সাদিয়া আক্তার মিতু, সুখী আক্তার, শামীম চৌধুরী, মাহবুব আলম সবুজ, ওমর ফারুক রনি. জাহিদ রহমান, সোহাগ হোসাইন, আলী আকবর, শোয়াইবুর রহমান, দীপা রানী প্রমুখ।

(ঢাকাটাইমস/১৯সেপ্টেম্বর/এলএম)