দীর্ঘদিন পালিয়ে থেকে অবশেষে ধরা মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত রাজাকার নুরুল আমিন

প্রকাশ | ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৩:১২

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি মো. নুরুল আমিন হাওলাদারকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুর ঢাকা উদ্যান এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। নুরুল আমিনের বাড়ি পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলায়। তিনি হাতালিয়া গ্রামের সামছুল হক হাওলাদারের ছেলে।

শুক্রবার সকালে র‌্যাব-২ এর মেজর সাইফ ঢাকা টাইমসকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধকালীন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সহযোগী হিসেবে নুরুল আমিন হাওলাদারসহ রাজাকার বাহিনীর অন্য সদস্যরা পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলার হাতালিয়া ও চরখালী এলাকায় আটক, নির্যাতন, অপহরণ, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণ, হত্যা ও গণহত্যাসহ বিভিন্ন মানবতাবিরোধী কাজ সংঘটিত করেন। রাজাকার বাহিনীর সক্রিয় সদস্য হিসেবে নুরুল আমিন মানবতাবিরোধী কাজে সরাসরি অভিযুক্ত।

র‌্যাব জানায়, ২০১৫ সালে নিহত নিরোধ চন্দ্র বালার ছেলে বিজয় চন্দ্র বালা পিরোজপুর আদালতে নুরুল আমিন হাওলাদার ও তার সহযোগী অন্যান্য রাজাকারদের বিরুদ্ধে অবৈধ আটক, নির্যাতন, অপহরণ, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণ, হত্যা-গণহত্যাসহ বিভিন্ন মানবতাবিরোধী কাজে জড়িত থাকার অপরাধে একটি মামলা করেন।

বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনাল ২০১৬ সালের ১২ এপ্রিল তদন্ত শুরু করে এবং ২০১৮ সালের ৬ নভেম্বর মামলার তদন্ত শেষ করে।

প্রতিবেদনে শেষে ৩৩ জন স্বাক্ষীর সাক্ষ্যের প্রেক্ষিতে আসামির বিরুদ্ধে ভান্ডারিয়া থানার পূর্ব পশারিবুনিয়া গ্রামের সাতজনকে ধরে নিয়ে হত্যা, চরখালী গ্রামের সুরবালা দাসীকে ধর্ষণ, চরখালী গ্রামের চন্দ্র কান্তি মিস্ত্রি ও মনোরঞ্জন মিস্ত্রিকে ধরে নিয়ে নির্যাতন এবং পূর্ব পশারিবুনিয়া ও হাতালিয়া গ্রামের ১৮ জনকে হত্যার অভিযোগ ছাড়াও অপহরণ, আটক, নির্যাতন, লুটপাট, অগ্নিসংযোগের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের মোট ৪টি অভিযোগ আনা হয়।

এরই প্রেক্ষিতে ২০১৯ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক একটি মামলা (যার কমপ্লেইন্ট রেজিঃ ৬৬, তারিখ ১২/০৪/২০১৬ইং, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ (বাংলাদেশ) মামলা নং-০২/২০১৯) রুজু হয়।

আসামির বিরুদ্ধে আনিত সব অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ট্রাইব্যুনাল মো. নুরুল আমিন হাওলাদার এর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

কিন্তু তিনি মামলা দায়েরের সময় থেকেই তিনি পলাতক ছিলেন। পরে গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে র‌্যাব। অবশেষে ঢাকা উদ্যান এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।    

(ঢাকাটাইমস/২২সেপ্টেম্বর/এসএস/ইএস)