পুলিশ কনস্টেবল কোটি টাকার মালিক, বান্ধবীকে উপহার দিলেন গাড়ি

প্রকাশ | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:১৭ | আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:৩৯

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

পুলিশ কনস্টেবল মনোজিৎ বাগীশ বান্ধবীকে উপহার দিলেন ২১ লাখ টাকা ও গাড়ি। এমনকি বান্ধবীর অ্যাকাউন্টে লাখ লাখ টাকার লেনদেনও করেছেন। ধৃত পুলিশ কনস্টেবলের চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন ভারতের সরকারি আইনজীবী। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বীরভূমে রামপুরহাট থেকে গ্রেপ্তার হওয়া পুলিশ কনস্টেবল মনোজিৎ বাগীশের সেই বান্ধবী 'বুলা'র খোঁজ করছে পুলিশ। দুর্নীতি দমন কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে হয়েছে পুলিশ কনস্টেবল মনোজিৎকে।

সম্প্রতি কনস্টেবল মনোজিৎ বাগীশ প্রায় ১ কোটি টাকার বড় একটি অংশ ট্রান্সফার করেন নিজের এক বান্ধবীর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে। প্রায় ২১ লাখ টাকা ওই বান্ধবীর অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করেন তিনি। এ ছাড়া সেই বান্ধবীকে ১১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা দিয়ে একটি গাড়িও কিনে দিয়েছিলেন মনোজিৎ।

জানা গেছে, বান্ধবীকে উপহার দেওয়া ওই গাড়ির রেজিস্ট্রেশনে ঠিকানা ভুল দেওয়া হয়েছিল। যদিও কনস্টেবলের ওই বান্ধবীর খোঁজ এখনো পাওয়া যায়নি। ওই বান্ধবীর খোঁজ পাওয়া গেলে দুজনকে মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চাইছেন দুর্নীতি দমন শাখার তদন্তকারী অফিসাররা। অন্যদিকে ওই পুলিশ কনস্টেবলের ৭৩ লাখ টাকার একটি ফিক্সড ডিপোজিটেরও সন্ধান পাওয়া গেছে বলে জানা যাচ্ছে।

আয় বহির্ভূত সম্পত্তির কারণে রাজ্য পুলিশের দুর্নীতি দমন শাখা তাকে গ্রেপ্তার করেছিল। আদালতের নির্দেশে রামপুরহাট থানার ওই কনস্টেবল আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দুর্নীতি দমন শাখার হেফাজতে থাকবেন।

আদালতে সরকারি আইনজীবী দীপঙ্কর কুণ্ডু জানান, ধৃত মনোজিৎ বাগীশের বুলা কর্মকার নামে একটি বান্ধবী ছিল। সেই বান্ধবীর সঙ্গে তার প্রচুর আর্থিক লেনদেনের হদিস পাওয়া গিয়েছে। যার মধ্যে মনোজিৎ বাগীশ বুলাকে ১১ লাখ ৭৫ হাজার টাকার গাড়ি উপহার দিয়েছিল। এছাড়াও তার ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে ২১ লাখ টাকার মতো লেনদেন হয়েছিল। সেই বুলাকে এখনও খুঁজে পাইনি পুলিশ। খোঁজ চলছে। তদন্তকারীরা বুলা এবং মনোজিৎকে একসঙ্গে বসিয়ে জেরা করতে চাইছেন।

দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার বাসিন্দা ছিলেন মনোজিৎ বাগীশ। পরে তাকে রামপুরহাটে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল। জানা যায়, ২০১২ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে হাওড়া গ্রামীণ পুলিশ, হাওড়া সিটি পুলিশ এবং রাজ্য এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চে কর্মরত ছিলেন মনোজিৎ। সরকারি হিসাব অনুযায়ী একজন কর্মরত পুলিশ কনস্টেবলের বেতন অনুযায়ী যা সম্পত্তি হওয়ার কথা তার থেকে কয়েকগুণ সম্পত্তি বাড়িয়ে নিয়েছিল।

মনোজিৎ-এর হিসাব বহির্ভূত সম্পত্তির খোঁজ পায় রাজ্য ভিজিলেন্স। এরপর শুরু হয় তার বিরুদ্ধে তদন্ত। রাজ্য পুলিশ ডিরেক্টরেটে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ পায়। কিন্তু তার কাছে এত পরিমাণ টাকা এলেঅ, সেই ব্যাপারেই সন্দিহান তদন্তকারী আধিকারিকরা। মনোজিৎকে জিজ্ঞাসাবদ করে একের পর এক তথ্য উঠে আসছে। কীভাবে, কোন পথে সে এত টাকা অর্থ জোগাড় করেছিল, সেই তদন্ত শুরু করেছিল পুলিশ। পুলিশের কোনো উচ্চপদস্থ কর্তা বা প্রভাবশালী ব্যক্তির সঙ্গে তার যোগাযোগ ছিল বলে মনে করছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা।

 

(ঢাকাটাইমস/২৩ সেপ্টেম্বর/আরজেড)