সেতুটি সংস্কার না হওয়ায় ৫ বছর ধরে দুর্ভোগে স্কুলগামী শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ

প্রকাশ | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০৪ | আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৪:০৫

ইমরান মাহমুদ, জামালপুর
জামালপুরের মেলান্দহে ৫ বছর আগে বন্যায় ধসে যাওয়া সেতু।

জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার পাঠানপাড়া গোদার বাজার এলাকায় ঝারকাটা নদীর ওপর নির্মিত সেতুটি পাঁচ বছরেও সংস্কার হয়নি। ফলে চলাচলে প্রতিদিন দুর্ভোগ পোহাচ্ছে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও স্থানীয় লোকজন। পাঁচ বছর আগে ভয়াবহ বন্যায় নদীর স্রোতে সেতুটির মাঝের অংশ ধসে গেছে।

নদীর দক্ষিণ পাড়ে ঘোষেরপাড়া মিলন বাজার ও উত্তরে গোদার বাজার ও ইউনিয়নের পুরাতন তালুকপাড়া বাজার। পূর্ব ছবিলাপুর, বীর ঘোষেরপাড়াসহ পাঁচ গ্রামের ১০ হাজারের বেশি মানুষকে প্রতিদিন উপজেলা সদরে যাতায়াত ও নানা কাজে নদী পাড়ি দিতে হয়। অন্যদিকে ঘোষেরপাড়া, পূর্ব ছবিলাপুর, টিকাদার পাড়ার প্রায় ছয় গ্রাম থেকে প্রতিদিন তিন শতাধিক শিক্ষার্থী আসে বেলতৈল উচ্চ বিদ্যালয় ও দাখিল মাদরাসায়।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নদী পাড়ি দিতে দক্ষিণ পাড়ে দাঁড়িয়ে আছে এক দল শিক্ষার্থী। উত্তর পাড়ের বিদ্যালয়ে আসবে তারা। এখন নৌকায় তাদের একমাত্র ভরসা। প্রতিদিন নৌকা দিয়েই পার হতে হয়। একটি ছোট নৌকায় গাদাগাদি করে উঠেছে ১৫ থেকে ২০ জন।

কথা হয় সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী রাজু মিয়া ও নবম শ্রেণির আলো মনির সঙ্গে। তারা বলে, সকাল আটটা সাড়ে ৮টার মধ্যে পাড়ে এসে নৌকায় নদী পার হওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হয়। কার আগে কে উঠবে এ নিয়ে চলে প্রতিযোগিতা। নৌকায় নদীর পার হওয়ার সময় খুব ভয় লাগে। অনেকে নদী পার না হয়ে পাঁচ কিলোমটার পথ ঘুরে বিদ্যালয়ে যায়।

ঘোষেরপাড়া এলাকার বাসিন্দা রইছ উদ্দিন জানান, সেতু সচল না থাকায় এখন ৫ থেকে ৬ কিলোমিটার পথ ঘুরে জেলা, উপজেলা সদর ও ইউনিয়ন পরিষদ বেলতৈল বাজারে যেতে হচ্ছে। বিশেষ করে রাতে নৌকায় পারাপার খুবই ঝূঁকিপূর্ণ।

বেলতৈল উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মিজানুর রহমান বলেন, ৭০০ শিক্ষার্থীর মধ্যে নদীর পশ্চিম পাড়ের বিভিন্ন এলাকা থেকে ৩২০ জন শিক্ষার্থী ও ৩ জন শিক্ষক বিদ্যালয়ে আসেন। নদীর পারাপারে ভরসা এখন নৌকা । এখন সেতু সচল না থাকায় দুর্ভোগ বেড়েছে শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষের।

ঘোষেরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. সাইদুল ইসলাম লিটু বলেন, বন্যায় সেতুটি ভেঙে গেছে, ওই সেতুর ওপর দিয়ে কয়েকটি গ্রামের মানুষ চলাচল করত। সেতু ভাঙা থাকায় এলাকার লোকজন দুর্ভোগে পড়েছে। সেতু নির্মাণ করা হলে মানুষের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ লাঘব হবে।

উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) শুভাশীষ রায় বলেন, সেতুটি নতুন করে নির্মাণ করার জন্য বরাদ্দ চেয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এখনো বরাদ্দ মেলেনি। বরাদ্দ পেলেই ওই স্থানে নতুন সেতু নির্মাণ করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সেলিম মিঞা বলেন, সেতুটি সংস্কার অথবা আরেকটি নতুন সেতু নির্মাণের জন্য জেলা প্রশাসকসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে।


(ঢাকাটাইমস/২৪সেপ্টেম্বর/এআর)